মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ধনী দেশগুলোর তুলনায় নভেল করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমে দরিদ্র দেশগুলো পিছিয়ে থাকায় বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধার নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ব্লুমবার্গের ভ্যাকসিন ট্র্যাকার অনুযায়ী, গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে বিশ্বজুড়ে ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে এটি সংক্রমণের চেয়েও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্বজুড়ে ১১ কোটি ৯৮ লাখ ডোজ টিকাদানের মধ্যে ৪০ শতাংশই প্রয়োগ করা হয়েছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে। টিকা প্রয়োগে এ অসমতা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ৯ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি করতে পারে। খবর ব্লুমবার্গ। করোনার টিকা প্রয়োগে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতিগুলো বেশি পিছিয়ে রয়েছে। আফ্রিকায় কেবল মিসর, মরক্কো, সেশেলস ও গিনিতে কোনো একটি টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। মধ্য এশিয়া ও মধ্য আমেরিকার বেশির ভাগ অংশে এখনো টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়নি কিংবা ধীরগতিতে চলছে। এর মানে হলো, উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে আরো পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে সম্প‚র্ণভাবে টিকাদান করা দেশগুলো থেকে তাদের পণ্যের চাহিদা ও উৎপাদিত যন্ত্রাংশ সরবরাহ থেকে বঞ্চিত হতে পারে। সবচেয়ে খারাপ বিষয়, নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে লড়াই না করার অর্থ হলো ভাইরাসের পরিবর্তিত রূপগুলো পুনরায় স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারে। সিঙ্গাপুরের আর্থিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান মাইব্যাঙ্ক কিম ইঞ্জিন পিটিইর সিনিয়র অর্থনীতিবিদ চুয়া হ্যাক বিন বলেন, ভাইরাস মিউটেশনের কারণে কোনো দেশই নিরাপদ নয়, যতক্ষণ না পুরো পৃথিবী টিকাদান ও হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করে। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের পরিচালিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়েছে, কভিড-১৯ টিকার অসম বরাদ্দের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ৯ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার হারাতে পারে। এছাড়া মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক র্যান্ড করপোরেশনের একটি সমীক্ষায়ও প্রাক্কলন করা হয়েছে, টিকার অসম বণ্টনের কারণে বার্ষিক ব্যয় ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার হ্রাস হতে পারে। সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ কারমেন রেইনহার্ট বলেছেন, এ বছর বিশ্বজুড়ে টিকা বিতরণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে না পারলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বব্যাংকের ৪ শতাংশ অনুমানের চেয়ে অর্ধেকেরও কম হতে পারে। এ ধরনের হিসাবগুলো টিকার মজুদ ভাগাভাগি করে নিতে ধনী দেশগুলোকে তীব্র চাপের মুখে ফেলেছে। তার পরও বর্তমানের লক্ষণগুলো টিকার মজুদ বাড়ানোর দিকেই ইঙ্গিত করে। র্যান্ডের প্রাক্কলন অনুযায়ী, তথাকথিত ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদের কারণে উচ্চ আয়ের দেশগুলোয় প্রতি বছর ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হবে। যেখানে ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ব্যয় করেই তারা নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় টিকা সরবরাহ করতে পারে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের অর্থায়নে তুরস্কের কোক বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরিচালিত গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, টিকাদান কার্যক্রম সম্পূর্ণ করলেও ধনী দেশগুলো বৈশ্বিক মহামারী দীর্ঘায়িত হওয়ার যে অর্থনৈতিক ক্ষতি, তার ৪৯ শতাংশ বহন করবে। অক্সফোর্ড ইকোনমিকস লিমিটেডের নির্বাহীদের ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায় প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতা ২০২১ সালে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম করোনাপূর্ব সময়ের নিচে থাকবে বলে মনে করেন। আরেক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস তথাকথিত টিকা জাতীয়তাবাদ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ‘মহমারীটি সর্বত্র নিয়ন্ত্রণ করা না হলে কোথাও নিয়ন্ত্রণে নেই’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পিটারসনের সিনিয়র ফেলো এবং প্রতিবেদনে লেখক মনিকা ডি বোল বলেন, জনস্বাস্থ্য যদি কোথাও নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে, তবে এটি কেবল স্থানীয় অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সমস্যা। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে আমি নিশ্চিত নই যে কেউ আসলে এ বিষয়ে কিছু করার জন্য প্রস্তুত কিনা। ব্লুমবার্গ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।