পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে একটি জ্বালানি তেলবাহী ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লাইনচ্যুত ট্রেন উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ট্রেনটি উদ্ধার করতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে সিলেট স্টেশনের কর্মকর্তারা।
এদিকে, ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা খায়রুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এছাড়াও ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় সিলেটের বদলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে গতকাল দুপুরে ছেড়ে যায় একটি ট্রেন। বিকালে সে স্টেশন থেকেই ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়ে আরেকটি ট্রেন।
কুলাউড়া জংশন রেল স্টেশনের মাস্টার মুহিব উদ্দিন আহমদ জানান, আন্তঃনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন গতকাল সকালে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে দুপুর সাড়ে ১২টায় স্থানীয় যাত্রীদের নিয়ে ট্রেনটি কুলাউড়া স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তিনি জানান, বিকেল পাঁচটায় ঢাকাগামী আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনও সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে সিলেটগামী একটি তেলবাহী ট্রেনের সাতটি বগি গুতিগাঁও নামক স্থানে লাইনচ্যুত হয়। এতে আশপাশ এলাকা জ্বালানি তেলে ভেসে যায়। অনেকে বালতি দিয়ে তেল সংগ্রহের চেষ্টা করেন। তবে সমূহবিপদের আশঙ্কা প্রকাশ করে মসজিদ থেকে মাইকিং করে ওই এলাকায় মানুষদের না যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। এছাড়া গভীর রাতে উদ্ধার কাজ শুরু করে কুলাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন নিয়ে আসা তিন সদস্যের দল। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লাইনচ্যুত তেলবাহী ১০টি বগির মাত্র দুটি উদ্ধার করেন তারা। তেল সংগ্রহের জন্য বালতি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। অনেককে দেখা গেছে, ট্রেনের মধ্যে থেকেও তেল নিতে। কিছু লোককে তেল কিনতে দেখা যায়। তারা লোকজনের কাছ থেকে ২০-৩০ টাকা লিটার দরে তেল সংগ্রহ করে ড্রামে ভর্তি করে মজুদ করছে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের সিনিয়র সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার দুলাল চন্দ্র দাস বলেন, চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে আসা জ্বালানি তেলবাহী ট্রেনের ২১টি বগির মধ্যে ১০টি লাইনচ্যুত হয়। গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে দুটি বগি উদ্ধার করতে পেরেছি। বাকিগুলো উদ্ধারে আরও অন্তত সাত-আট ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে। লাইনচ্যুত অবশিষ্ট বগিগুলো উদ্ধারে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন সকাল ৯টার দিকে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. খলিলুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা থেকে আসা আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস কুলাউড়ায় ও চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেস শ্রীমঙ্গলে আটকা পড়েছে। রেলপথ স্বাভাবিক হতে কতটা সময় লাগবে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
এ ঘটনার পর পরই গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত স্থানীয়রা জলাশয়, পুকুর ও জমি থেকে বালতিসহ বিভিন্ন ধরণের পাত্র ভরে তেল সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের অনেক পুকুর-জলাশয়ে এ থেকে জ্বালানি তেল ছড়িয়ে পড়েছে। এতে অগ্নিকা-সহ বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। তবে এক্ষেত্রে সর্তকবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সাথে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
গুতিগাঁও এলাকার প্রবাসী সাজু মিয়ার বাড়ির পুকুরে তেলে ভরে গেছে বলে জানিয়েছেন, তার চাচাতো ভাই লিয়াকত আলী। তিনি জানান, আশপাশের জমি, খাল ও পুকুরে তেলে ভরে গেছে। মানুষ যে যার মত সংগ্রহ করে নিয়েছে। ৬-৭ তেলবাহি বগি থেকে তেল পড়ে যায়। কলসি ভরে তেল নিয়ে যাওয়ার সময় আক্তারুন্নেছা নামের এক গৃহবধূ জানান, সবাই যার যার মতো তেল নিয়ে যাচ্ছে। তাই আমিও নিলাম।
গুতিগাঁও এলাকার বাসিন্দা সিরাজ মিয়া ও হাদী উদ্দিন জানান, ট্রেনের তেল সবাই নিচ্ছে সংগ্রহ করে তাই আমরাও নিলাম। এই তেল দিয়ে কি করবেন জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের লোক আছে এগুলো তাদের কাছে বিক্রি করব। কতটুকু তেল নিয়েছেন জানতে চাইলে সিরাজ মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার টর্চ লাইটের আলো দিয়ে ১২ লিটার সংগ্রহ করেছি। আর শুক্রবার সকালে আরও ৬ লিটার। পুলিশ দৌঁড়ায় তাই বেশি সংগ্রহ করতে পারিনি। হাদী উদ্দিন বলেন, আমি পুলিশের ভয়ে বেশি তেল সংগ্রহ করতে পারিনি। মাত্র ৪ লিটার সংগ্রহ করে বাড়িতে রেখেছি। তিনি বলেন, ফ্রি পেয়েছি তাই সংগ্রহ করেছি। সবাই করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।