পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর দেখা দিয়েছে নানা ধরণের শঙ্কা। আরাকানে আবারো রোহিঙ্গা নির্যাতন ও সীমান্ত দিয়ে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কাও রয়েছে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে। মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে বসবাসরত প্রায় ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন এপার-ওপারে থাকা তাদের স্বজনরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, নতুন করে রোহিঙ্গাদের স্রোত আসার আশঙ্কায় বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত বরাবর নিরাপত্তা সুরক্ষিত করা হয়েছে। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী বেসামরিক নেত্রী অং সান সুচিকে গ্রেফতার করার পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে এক বছরের জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
সীমান্ত এলাকা ঘুরে জানা গেছে, এ অবস্থায় রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গাদের অনেকে এপারে পালিয়ে আসার জন্য রোহিঙ্গা শিবিরে থাকা তাদের স্বজনদের কাছে নিয়মিত যোগাযোগ করে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ-খবরও নিচ্ছেন। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত এনজিওগুলোরও তৎপরতা বেড়ে গেছে। বরাবরই অভিযোগ রয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাধার নেপথ্যে কিছু কিছু এনজিওর বড় একটি ভূমিকা রয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও কর্মীরা সীমান্ত এলাকায় আনা গোনা বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে প্রত্যাবাসন বিরোধী কিছু রোহিঙ্গার আচার-আচরণেও পরিবর্তন এসেছে। এসব কারণে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনের কাছে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশে সে দেশের সেনা টহল বৃদ্ধি করেছে। সীমান্ত এলাকার লোকজন জানিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্তে তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের সেনা তৎপরতা বেড়েছে। সেনারা সীমান্ত এলাকায় নতুন করে বাঙ্কার খনন করছে বলেও জানিয়েছে সীমান্তের বাসিন্দারা। এদিকে, বাংলাদেশ সীমান্তেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় বিজিবি টহল জোরদার করেছে। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর গত ৪দিন ধরে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজনও সতর্ক রয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের শিবিরের কয়েকজন রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন (আরাকান) রাজ্যে থাকা রোহঙ্গারা সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে এপারে থাকা স্বজনদের কাছে খবরা খবর রাখছেন। এ কারণে শিবিরের রোহিঙ্গাদেরও শঙ্কা, সে দেশের পরিস্থিতি খারাপের দিকে গড়ালে তারা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আবারো দলে দলে ঢুকে পড়তে পারে।
টেকনাফের শালবাগান শিবিরের মোহাম্মদ আলী আজম নামের একজন রোহিঙ্গা বলেন, মিয়ানমারের ভুসিডং এলাকায় তাদের বসবাস ছিল। ২০১৭ সালের আগস্টে পরিস্থিতি খারাপ দেখে পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। কিন্তু তার চাচা, ভাইসহ অনেক আত্মীয়স্বজন তখন থেকে ঝুঁকি নিয়ে সেখানে রয়ে গেছে।
রোহিঙ্গা মোহাম্মদ আলী আরো বলেন, ওপারে থাকা আত্মীয়স্বজনরা বাংলাদেশে চলে আসতে তাদের কাছে বার বার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে না নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা আসলে দেশে ঢুকতে পারবে। টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা মোহাম্মদ আলম বলেন, আশা করছি মিয়ানমারের নতুন সেনা প্রশাসন বাংলাদেশের সঙ্গে প্রত্যাবাসন বিষয়ে অতীতের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসুক সেটা মোটেও কাম্য নয়।
কুতুপালং শিবিরের আব্দুল হামিদ ও নুর মোহাম্মদ নামের দুই রোহিঙ্গা নেতা অবশ্য ভিন্নমতের কথা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের এই সেনাবাহিনী ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতা চালিয়েছিল তারা আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে সেই ঘটনা নিয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক আদালতের রায়েও তারা দোষীসাব্যস্ত হয়েছে। সেই সেনাবাহিনী নতুন করে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর আবার অত্যাচার-নির্যাতন চালাবে বলে মনে হয় না। এ কারণে তিনি নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করেন না।
এদিকে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পরে নতুন করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় সীমান্তে বাড়তি নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এছাড়া মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের পানি সীমায় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।