Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে পরীক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৬ এএম

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালে পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে নিবন্ধনকারী সকল পরীক্ষার্থীই উচ্চমাধ্যমিকের এই পরীক্ষায় পাস হয়েছেন। ফল হাতে পাওয়ার পর এখন শিক্ষার্থীদের সামনে অপেক্ষা করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধ। কবে নাগাদ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই। তবে করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

এবছরই প্রথমবারের মতো ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আগের বছরের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে হবে ভর্তি পরীক্ষা। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি গুচ্ছ নাকি পৃথকভাবে হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো।
গতকাল বৃহস্পতিবার গুচ্ছ পদ্ধতির টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে জানানো হয়, এই ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ হাজার ১০৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন। ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরীক্ষায় বসার আগেই শিক্ষার্থীদের ফি পরিশোধ করতে হবে। আবেদনকারীর যোগ্যতা যাচাই-বাছাইয়ের পর পরীক্ষার জন্য মনোনীত হলে প্রার্থীর মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হবে।

সভা শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মীজানুর রহমান জানান, কবে নাগাদ পরীক্ষা শুরু করা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
তিনি বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে আবেদন ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীর মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হবে। পরীক্ষায় বসার আগে তাকে ফি পরিশোধ করতে হবে। একজন প্রার্থী আবেদনের ক্ষেত্রে কোথায় ভর্তি হবে এবং পরীক্ষায় বসবে, তা নিজেই পছন্দ করতে পারবে। এ জন্য ২০টি চয়েজ বা পছন্দ করার অপশন থাকবে।

তিনি আরও বলেন, একসঙ্গে সবার ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে না। ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো আসনে বসার মতো সুযোগ থাকবে, ততো শিক্ষার্থীকে এসএমএস দিয়ে ডাকা হবে। এভাবে কয়েকটি ধাপে পরীক্ষা নেয়া হবে। ভর্তি পরীক্ষা এমসিকিউ পদ্ধতিতে নেয়া হবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান হবে এক নম্বর। ভুল উত্তরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা হবে। ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন যাচাই-বাছাই করতে আলাদা ৫টি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করতে আগামী সপ্তাহে সভায় বসার তথ্য জানিয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ। পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, পরীক্ষা সংক্রান্ত সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কবে কোথায় পরীক্ষা আয়োজন হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আগামী সপ্তাহে পরিষদের সভায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পদার্থ, রসায়ন এবং আইসিটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, অ্যাকাউন্টিং, বিজনেস অর্গানাইজেশন ও ম্যানেজমেন্ট এবং আইসিটি বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে। মানবিক বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলা, ইংরেজি এবং আইসিটি বিষয়ের ওপর করা প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে।

২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে, তা ঠিক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ১০০ নম্বরের এই পরীক্ষা হবে বহুনির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ)। উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা (বাণিজ্য) বিভাগের জন্য আলাদা তিনটি পরীক্ষা হবে। বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আগের মতো আলাদা পরীক্ষা হবে না। অর্থাৎ একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী একটি পরীক্ষা দিয়েই যোগ্যতা অনুযায়ী ভর্তির সুযোগ পাবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই নিজ বিভাগের পাশাপাশি অন্য বিভাগভুক্ত বিষয়েও ভর্তি হওয়া যাবে। সেভাবেই বিষয়ভিত্তিক আসন রাখা হবে।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।



 

Show all comments
  • মাহফুজ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১১:২২ এএম says : 0
    গুচ্ছ পদ্ধতিতে কি 2019-20 এর শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে?
    Total Reply(0) Reply
  • মাহফুজ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১১:২২ এএম says : 0
    গুচ্ছ পদ্ধতিতে কি 2019-20 এর শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্ববিদ্যালয়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ