Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এস কে সুর ও শাহ আলমের দুর্নীতি সরানো হলো শাহ আলমকে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৭ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী এবং বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের অনিয়ম-দুর্নীতি খতিয়ে দেখছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার আদালতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হকের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে স্টাফ ‘ল’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম চাপা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের ‘মাসোয়ারা’ দেয়া হতো। এসব অনিয়মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদেরকেও ‘মাসোয়ারা’ হিসেবে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে দেয়া হতো। শাহ আলমকে প্রতি মাসে দেয়া হতো দুই লাখ টাকা করে। আর বড় অঙ্কের অর্থ নিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এসব অনিয়ম ‘ম্যানেজ’ করতেন তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।

আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, কোনো ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, প্রয়োজনে স্টাফ ‘ল’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে ঘুষের বিনিময়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য চাপা দেয়ার অভিযোগ ওঠার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসিয়াল আদেশে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দেয়া হয়েছে। পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ অন্তত পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এসব অর্থ লোপাটের তথ্য চাপা দিতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন টিম। এসব অনিয়মের সহায়তা করতেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম। বিনিময়ে পেত আর্থিক সুবিধা। পিকে হালদারের অন্যতম সহযোগী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হকের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত মঙ্গলবার ঢাকার সিএমএম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রাশেদুল হক। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখভালের জন্য গত ২০১৩ সালে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পান শাহ আলম। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পদোন্নতি পেয়ে একই বিভাগের নির্বাহী পরিচালক হন, এখনও এ পদে আছেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ১০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়। এসব দুর্নীতিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদার। এসব অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিক ব্যবস্থা হিসাবে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে সরিয়ে দেয়া হলো।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে রাশেদুল হক স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আমরা জবানবন্দির আলোকে সেটি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্নীতি

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ