Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাঘের শীতে চিলমারীর জনজীবন বিপর্যস্ত

বাড়ছে শিশু রোগ

চিলমারী(কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:২৩ পিএম

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে জেঁকে বসেছে শীত। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিরশির ঠান্ডা বাতাস যোগ হওয়ায় তীব্র হয়ে উঠেছে শীত। হাসপাতালে বেড়ে যাচ্ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছে শিশু,বয়স্ক লোকের পাশাপাশি নিরীহ গবাদি পশু। তাছাড়া উপজেলার চরাঞ্চলে শীতের তীব্রতায় নাজেহাল জনজীবন। খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ সপ্তাহ জুড়ে দিনের চলমান ঠান্ডায় স্বাভাবিক কাজের গতি হারিয়ে ফেলেছেন।
চলমান তীব্র শীতের কারণে উপজেলার হাটবাজারে লোকজনের উপস্থিতি অনেকটা কমেছে। বিশেষ জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে আসছেন না। যারা ঘরের বাহিরে বেড়িয়েছেন প্রত্যেকেই মোটা কাপড় অথবা চাদর মুড়ি দিয়ে বেরিয়েছেন। শিশু ও বয়স্কদের বাহিরে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন আগুন জ্বালিয়ে। ঘণ কুয়াশার কারণে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। অসহায় গরীবদের অনেকের প্রয়োজন অনুযায়ী গরম কাপড় না থাকায় নিদারুন কষ্টে দিন পার করছেন।
এদিকে ঠান্ডায় মাঠের কৃষক,রিকশা চালক সহ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ তাদেও নিজনিজ পেশায় কাজ করতে পারছেন না। কথা হয় মন্ডলপাড়ার রিকশা চালক সাদেক মন্ডলের সাথে,তিনি নিয়মিত উপজেলার বিভিন্ন অলিতে গলিতে সকাল থেকে দুপুর আবার বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রিকশা চালান। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে দেখা যায় কলেজ মোড়ে রিকশার হুড তুলে চাদর গায়ে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছেন। তিনি জানালেন ঠান্ডা বাতাসে হাত পা বরফ হয়ে গেছে,রিকশায় প্যাডেল মারতে পারছি না। বেশি আয় করতে পারছিনা। ছোট কুষ্টারী এলাকার ষাট উর্ধো বয়সী দিনমুজুর মোহাম্মদ আলী জানান ,খুব ঠান্ডার কারণে ধান রোপন সহ মাঠের কোন কাজ করতে পারছি না। সংসার চালানো কঠিন হয়ে পরেছে। শরিফেরহাট এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম বীর বলেন তীব্র ঠান্ডার কারণে বোরোধান রোপনের কামলা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অধীক মুল্যে রোপনের কাজ করা লাগছে। উপজেলার চরাঞ্চল গুলোতে বাতাস বেশি লাগায় শীতের তীব্রতা বেশি এমনটি বললেন নৌকা চালক আলম মিয়া। তিনি আরও বলেন ঘণ কুয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও নৌকা চালাতে পারিনা। কিছু দেখা যায় না । মানুষের হাট বাজ্ার করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগে। উপজেলা সদর হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত এক সপ্তাহে শীত জনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এরমধ্যে শিশু ও বৃদ্ধেও সংখ্যাই বেশি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: আমিনুল ইসলাম বলেন ঠান্ডা জনিত কারণে রোগির সংখ্যা বেড়ে গেছে,বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক লোকেরা বেশি চিকিৎসার জন্য আসছেন। শ্বর্দি,কাশি,জ্বও,নিউমনিয়া রোগির সংখ্যা বেশি।
তীব্র ঠান্ডার কারণে অনেকেই বিপদে পরেছেন গবাদি পশুপাখি নিয়ে । ঠান্ডা জনিত রোগে ভুগছে অনেক গবাদি পশু। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো: রাশেদুল ইসলাম বলেন ঠান্ডার কারণে গবাদি পশুর সমস্যা নিয়ে অফিসে আসছেন,এরমধ্যে শ্বর্দি,জ্বর,খুড়ারোগে আক্রান্ত প্রাণির সংখ্যাই বেশি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শৈত্যপ্রবাহ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ