নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে ইরানের পর এবার উজ্জীবিত বাংলাদেশের কাছে বিধ্বস্ত হলো সিঙ্গাপুর। গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ‘সি’ গ্রæপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ৫-০ গোলে হারায় সিঙ্গাপুরকে। বিজয়ীদের পক্ষে অধিনায়ক কৃষ্ণা রাণী ও ফরোয়ার্ড অনুচিং মগিনি দুটি করে এবং মিডফিল্ডার মৌসুমী একটি গোল করেন।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ইরানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন কৃষ্ণা, সানজিদা, মার্জিয়া, মৌসুমী, মারিয়া ও তহুরারা। যে কারণে কাল সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটাই মাঠে ঢেলে দিয়েছেন তারা। ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশ দলকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে দেখা গেছে। তারা একের পর এক আক্রমণে প্রায় কোণঠাসা করে রাখে সিঙ্গাপুরের রক্ষণদুর্গকে। বলা যায়, ম্যাচের পুরোটা সময়ই একচেটিয়া প্রাধান্য ছিল বাংলাদেশ দলের। লাল-সবুজের মেয়েরা এদিন অসাধারণ খেলে স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় হাজারখানেক দর্শককে আনন্দ দিয়েছেন। বল দখলের লড়াইয়ে তারাই ছিল এগিয়ে। প্রথমার্ধের পুরো সময় জুড়ে সিঙ্গাপুর সীমানায় বল থাকলেও গোল পেতে স্বাগতিকদের আধা ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়। ম্যাচের শুরু থেকে বাংলদেশ আক্রমণের পর আক্রমণ করে গেছে। কিন্তু গোল আর হয় না। ডানপ্রান্তে সানজিদা তো বামপ্রান্তে মার্জিয়া। মাঝমাঠে মৌসুমী ও মারিয়া। অন্যদিকে ফরোয়ার্ড লাইনে ছিলেন অধিনায়ক কৃষ্ণা রাণী ও স্বপ্না। বাররার তারা বল নিয়ে প্রতিপক্ষ রক্ষণদুর্গে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জালের ঠিকানা আর খুঁজে পাননি। বল নিয়ে সিঙ্গাপুর গোলমুখে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলেন লাল-সবুজের মেয়েরা। তবে অসাধারণ খেলেছেন মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার। পায়ের কাজের জন্য তার সুনাম রয়েছে। সেই ফুটওয়ার্ক দেখা গেল সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। ম্যাচের ৭ মিনিটে দ্রæতগতিতে ডানপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে সানজিদা নেন একটি মাটিঘেঁষা শট। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল ফিরে এলে ফিরতি বলে প্লেসিং শট নেন স্বপ্না। কিন্তু তার শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ১৮ মিনিটে মিডফিল্ডার মৌসুমী সানজিদার সঙ্গে ওয়ান-টু করে ভেদ করেন সিঙ্গাপুরের রক্ষণদূর্গ। বক্সের ডানপ্রান্ত থেকে নেয়া তার জোরালো শটটি সাইডবারে লেগে ফিরে আসে। বলটি পড়েছিল কৃষ্ণার সামনে। নিশ্চিত হয়ে মারতে গিয়ে সময় বেশি নিলেও বল ক্রসবারের উপর দিয়ে তুলে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিছুতে যখন গোলের দেখা পাওয়া যাচ্ছিলো না তখন কিন্তু হতাশা গ্রাস করেনি লাল-সবুজের মেয়েদের। কারণ সিঙ্গাপুরের আক্রমণভাগ মাঝমাঠই অতিক্রম করতে পারছিল না। ফলে চেষ্টা অব্যাহত রাখেন বাংলাদেশের মেয়েরা। অবশেষে তারা কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায়। আবারও সানজিদার ফুটওয়ার্কে পরাস্ত সিঙ্গাপুর। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে এই মিডফিল্ডার ভাসিয়ে দেন মাপা একটি ক্রস। ছোট বক্সের ওপর দাঁড়ানো কৃষ্ণা এবার ভুল করেননি, জোরালো হেডে তিনি গোল করে দলকে আনন্দে ভাসান (১-০)। বিরতির পর দ্বিতীয় মিনিটেই ব্যবধান বাড়ায় বাংলাদেশ। এ সময় ডানপ্রান্ত উড়ে এসেছিল একটি লং বল। মার্জিয়া তা নিয়ে এগিয়ে যান। পাশ কাটান তার মার্কারকে। আর প্রতিপক্ষ বক্সে ভাসিয়ে দেন বাঁকানো ক্রস। বক্সের মাঝে বল নিয়ন্ত্রণ নেন কৃষ্ণা। ঠাÐা মাথায় পরাস্ত করেন সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক নুর ইজ্জাতিকে (২-০)। ৮৩ মিনিটে তৃতীয় গোলের দেখা পায় স্বাগতিকরা। এসময় বদলি ফরোয়ার্ড অনুচিং মগিনি করেন গোলটি। আরেক বদলি ফরোয়ার্ড তহুরার মাটি কামড়ানো শট নুর ইজ্জাতির হাত ফসকে গেলে তাতে টোকা দিয়ে গোলটি করেন অনুচিং (৩-০)। ৮৬ ও ৯০ মিনিটে বাকি দু’টি গোল করেন মৌসুমী ও অনুচিং মগিনি। ফলে বড় জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। আগামীকাল নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কিরগিজস্তানের মোকাবিলা করবে লাল-সবুজরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।