পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিলুপ্তির পথে ছোট মাছে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)। ইতোমধ্যে ২৪ প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে বিএফআরআই। মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, এই উদ্ভাবন অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক সংরক্ষণ সংস্থা- আইইউসিএন ইতোপূর্বে বাংলাদেশের ৬৪ প্রজাতির মাছকে ‘বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায়’ ঘোষণা করায় বিএফআরআই’র মৎস্য বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু করে।
জানা যায়, বিপন্ন মাছের ২৪টি প্রজাতির প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে তার অস্তিত্ব রক্ষাসহ উৎপাদন সম্প্রসারণেও সক্ষম হয়েছে বিএফআরআই। এসব উদ্ধারকৃত মাছের উন্নত চাষ পদ্ধতি মৎস্য অধিদফতরের কাছে হস্তান্তরও করা হয়েছে। পঞ্চবার্ষিক (২০২১-২০২৫) পরিকল্পনায় মৎস্য অভয়াশ্রম এলাকায় সঙ্কটাপন্ন মাছের প্রজাতির সংখ্যা ৫০ শতাংশ হ্রাস করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শম রেজাউল করিম জানান, বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় সব প্রজাতির মাছকে ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞানীরা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছেন। আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে অস্তিত্ব সঙ্কটে থাকা সব দেশীয় মাছ পুনরুদ্ধার সম্ভব হতে পারে।
মৎস্য অধিদফতরের মতে, বর্তমানে লোকজন দিনে গড় ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে ৬২.৫৮ গ্রাম মাছ গ্রহণ করছে। আর জিডিপিতে মৎস্য সেক্টরের অবদান ৩.৫০ শতাংশ। কৃষিজ আয়ের ২৫.৭২ শতাংশ আসছে মৎস্য উৎপাদন থেকে। গত ৫ বছরে মৎস্য খাতে গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৬.২৮ শতাংশ। পাশাপাশি দেশের ১২ শতাংশ বা প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে মৎস্য সেক্টর থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ নারী।
প্রতিবেশী দেশ সীমান্তের ওপারে অভিন্ন নদ-নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহারের ফলে দেশের অনেক বিল ও হাওড়ে বছরের প্রায় অর্ধেক সময়ে প্রয়োজনীয় পানি থাকাছে না। এটাই দেশীয় মাছের বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্তির অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। অনেক বিল ও হাওরের অস্তিত্ব বিপন্ন হবার ফলে ইতোপূর্বে প্রায় ৩৫টি দেশীয় প্রজাতির মাছ চিরদিনের মতো হারিয়ে যেতে বসেছিল বলেও মৎস্য বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। তবে বিপদগ্রস্থ মাছের মোট সংখ্যা ৬৪ বলে আইইউসিএন জানিয়েছে।
বিপন্ন এসব মাছের মধ্যে মহাশোল, নান্দিনা, গনিয়া, দেশি সরপুটি, শোল, গজার, বাইম, গুতুম, চিতল, ফলি, বাঙ্গনা, খলিশা, চান্দা, নাপিত, চেওয়া এবং রাণিসহ আরা বেশ কয়েকটি প্রজাতির দেশীয় মিঠা পানির মাছও রয়েছে। মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, মলা, ঢেলা, পুটি, বাইম, টেংরা, খলিশা, পাবদা, শিং, মাগুর, কেচকি ও চান্দা জাতের মাছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও আয়োডিনের মতো মানবদেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। এসব খনিজ পদার্থ মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ রক্ত শূন্যতা, গলগন্ড ও অন্ধত্ব রোগ প্রতিরোধে বিশেষ সহায়ক।
বিএফআরআই’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এনামুল হক জানান, ইতোমধ্যে পাবদা, গুলশা, টেংরা, গুজি আইড়, চিতল, ফলি, মহাশোল, বৈরালী, বারাচাটা, গুতুম, কুচিয়া, ভাগনা, খলিশা ও গজারসহ ২৪ প্রজাতির মাছ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে এসব প্রাপ্যতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া সবগুলো দেশি মাছের প্রজাতি সংরক্ষণ ও চাষ সম্প্রসারণে সাফলতার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে কিছু কিছু প্রজাতির যেসব মাছ একবারেই পাওয়া যাচ্ছে না সেগুলো খুঁজে বের করে প্রজনন সম্প্রারণেরও চেষ্টা চলছে।
সূত্র জানায়, নদী, হাওড় ও বিলে সাম্প্রতিককালে দেশীয় মাছের অবমুক্তির সাথে মৎস্য অধিদফতর দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাছের অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিএফআরআই’র ময়মনসিংহ গবেষণা কেন্দ্রের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির আরো কয়েকটি উপকেন্দ্রেও বিপন্ন মাছের অস্তিত্ব রক্ষায় গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।