Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিথ্যা প্রচারণায় ভারতের যুক্ত থাকা নিয়ে শুনানি হবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ৪:৪৩ পিএম

গত বছর ইইউ ডিসইনফোল্যাব ইউরোপে পাকিস্তান ও চীনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী ভারতীয় নেটওয়ার্ক প্রচারণা চালাচ্ছে বলে উদ্ঘাটন করে। ওই নেটওয়ার্কের সাথে ভারত সরকার যুক্ত কিনা তা নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে (ইপি) প্রশ্ন উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইপি চলতি সপ্তাহে একটি ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৃতীয় দেশগুলোর হস্তক্ষেপের সম্ভাব্য হুমকির বিষয়ে শুনানি করতে যাচ্ছে।

গত বছর ইইউ ডিসইনফোল্যাব নামে ইউরোপীয় একটি দল ‘ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস’ শীর্ষক তদন্তের মাধ্যমে একটি ভারতীয় নেটওয়ার্ককে উন্মোচিত করেছিল যা ইউরোপে ভারতপন্থী এবং পাকিস্তান ও চীনবিরোধী অনুভূতিগুলোকে শক্তিশালী করতে কাজ করেছে। ইপির শুনানিটি বিদেশি হস্তক্ষেপ সম্পর্কিত ইপির বিশেষ কমিটির অংশ ছিল। তারা চীন, ইরান, ভারত, সউদী আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশেষজ্ঞদের সাথে কার্যত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিল। আলোচনার সভাপতিত্ব করেন ইউরোপীয় সংসদ সদস্য (এমইপি) রাফায়েল গ্লাকসমান।

কমিটির এক সদস্য ভি বিল্কেক জানিয়েছিলেন যে, ওই প্রচারণা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইস্যু এবং চলতি বছরের মে মাসে ইন্ডিয়া-ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তিনি তদন্তের নেতৃত্বদানকারী ইইউ ডিসইনফোল্যাবের বিশেষজ্ঞদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, ‘এই প্রচেষ্টা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার সাথে কতটা যুক্ত রয়েছে সে সম্পর্কে আমার প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের কি এ বিষয়ে গভীরতর তথ্য রয়েছে? সবকিছু ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণে নাও থাকতে পারে তবে তারা কি জড়িত রয়েছে। এই নেটওয়ার্কটি কি রাষ্ট্র থেকে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হতে পারে?’ তিনি আরও জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে পাশ কাটিয়ে ভারত কি এ ধরণের কাজ করতে পারে কি না?’

আরেক সদস্য এমপি ই জামেট আলোচিত বিষয়টিকে ব্যতিক্রম বলে মনে করছেন। তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন, ‘কে ইইউ ডিসইনফোল্যাবের তদন্তে অর্থায়ন করেছে।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের হস্তক্ষেপের বিষয়ে আমাদের এই কমিটির প্রয়োজন কেন তা বুঝতে অসুবিধা হয়। এর জন্য রাষ্ট্রীয় পরিষেবাগুলো রয়েছে। আমি অবাক হয়েছি যে ভারত এজেন্ডাতে রয়েছে - সত্যটি এই যে এই তদন্ত ভারতকে সমালোচিত করতে চাইছে।’ জবাবে গ্লাকসমান বলেন, ‘আমরা খুব বাস্তব বিষয় নিয়ে কথা বলছি। এখানে আমরা কোনও ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ে রায় দেয়ার বিষয়ে কথা বলছি না। আমরা কেবল ইউরোপে বিতর্ক সৃষ্টি ঠেকাতে ও বিদেশী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কীভাবে লড়াই করতে পারি তা জানার চেষ্টা করছি।’

ইইউ ডিসইনফোল্যাবের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আলেকজান্দ্রে আলাফিলিপ বলেন, ‘এর পিছনে ব্যক্তি বা কোনও রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় জানা কঠিন।’ তিনি জানান, ‘ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস ১৫ বছর ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছে। এটি ভারতের স্বার্থ রয়েছে এমন বিষয়গুলোকে তুলে ধরছে। এটি কোন বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রচুর সমন্বয় এবং সমর্থন প্রয়োজন।’ গবেষণা দলের সদস্য রোমান আদমজেক বলেন, তার দলের তদন্ত ইইউ এবং জাতিসংঘকে প্রভাবিত করতে কিছু অপশক্তির মোতায়েন করা কৌশলগুলোতে মনোনিবেশ করেছিল। তারা পাকিস্তানের মানবাধিকার ও সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি বা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা নিয়ে আগ্রহী নয়। তিনি আরও বলেন, কিভাবে মিডিয়া আউটলেটগুলো ব্যবহার করে ভুল তথ্য ও কারসাজির মাধ্যমে ব্রাসেলসকে ভারতের পক্ষে প্রভাবিত করার জন্য মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে, সেই বিষয় নিয়েই তারা তদন্ত করছেন। সূত্র: ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউরোপীয় পার্লামেন্ট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ