মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বাইডেন আমেরিকার ঘরোয়া সহিংস চরমপন্থীদের থেকে পাওয়া হুমকির ব্যাপক মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আপাতত জার্মানিতে হামলার বিষয়ে কোন নিরপেক্ষ পরিকল্পনা শনাক্ত করা যায়নি বলে দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ৬ জানুয়ারির ঘটনা অনুসরণ করে সুদূর ইউরোপেও আরো হিংস্র হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে চরমপন্থীদের।
পূর্ব জার্মানির থুরিঙ্গিয়ার গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান স্টেফান ক্রেমার জানিয়েছেন, ‘বর্ণবাদী চরমপন্থীরা, করোনাভাইরাসে অবিশ্বাসীরা এবং নিও-নাৎসিরা অস্থির বোধ করছে।’ তিনি বলেন যে, দাঙ্গাবাজদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে। তাদের অনেকে মনে করছে, তাদের পক্ষে যতদূর সম্ভব হয়েছে, তারা করে দেখিয়েছে। এ নিয়ে তারা খুব গর্বিত। তবে বাকিরা হতাশা প্রকাশ করেছে যে, এটিকে গৃহযুদ্ধ বা অভ্যুত্থানের দিকে পরিচালিত করা যায়নি।
আমেরিকান সহিংস বর্ণবাদীদের সাথে ইউরোপীয় চরমপন্থীদের সংযোগ কতটা গভীর এবং টেকসই তা সঠিকভাবে বলা মুশকিল। তবে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এদের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক যোগাযোগের নেটওয়ার্কগুলি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ট্রাম্প যুগে বিস্তার লাভ করা নেটওয়ার্কগুলো ৬ জানুয়ারির পর থেকে আরও শক্তিশালী ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠেছে।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে ‘এক নতুন নেতৃত্বহীন বহুজাতিক হিংসাত্মক মানসিকতার, সহিংস বর্ণবাদী চরমপন্থী আন্দোলন’ বর্ণিত হয়েছে, যা গত দশক থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, উগ্রপন্থীরা একই ধরনের ষড়যন্ত্র, ‘সাদা গণহত্যা’ এবং অভিবাসীদের দ্বারা ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীর ‘ব্যাপক প্রতিস্থাপন’ তত্তে¡র দ্বারা উদ্দীপিত হয়েছে। তারা একই অনলাইন ক্ষেত্রগুলোতে বিচরণ করে এবং বর্ণবাদী সঙ্গীত উৎসব, মিশ্র মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতা এবং বর্ণবাদী সমাবেশে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাত করে।
ক্রেমার বলেছেন, ‘নয়া-নাৎসিদের দৃশ্যপটগুলো খুব ভালভাবে সংযুক্ত। আমরা শুধু ফেসবুকের লাইকগুলো নিয়ে কথা বলছি না। আমরা নয়া-নাৎসিদের ভ্রমণ, একে অপরের সাথে দেখা করা, এক সাথে উল্লাস উদযাপন করার কথা বলছি।’ এদের প্রশিক্ষণ শিবিরগুলো গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তারা আশঙ্কা করছেন যে, এ ধরনের কার্যকলাপ আরো সুসংহত এবং সুচিন্তিত সহিংসতার ভিত্তি তৈরি করতে পারে।
সেন্ট পিটার্সবার্গের বাইরে চরমপন্থী ‘রাশিয়ান ইম্পেরিয়াল আন্দোলন’ পরিচালিত একটি আধাসামরিক ক্যাম্পে অংশ নেয়া দুই শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীর বিরুদ্ধে সুইডিশ আইন কর্মকর্তাগণ আশ্রয়প্রার্থীদের লক্ষ্য করে বোমা হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ করেছেন। গত বছর আমেরিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাশিয়ান ইম্পেরিয়াল মুভমেন্টকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করে। এরাই প্রথম শে^তাঙ্গ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী যাদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
২০১৯ সালে এফ.বি.আই. পরিচালক ক্রিস্টোফার ওয়াই সতর্ক করেছিলেন যে, আমেরিকান শে^তাঙ্গবাদীরা বিদেশী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সাথে প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য বিদেশে ভ্রমণ করছে। সেবছর সউফান সেন্টার নামক একটি নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ সংস্থার একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলোর সংঘর্ষে যোগদানের জন্য বহু শ্বেতাঙ্গবাদীসহ প্রায় ১৭ হাজার বিদেশি চরমপন্থী ইউক্রেন ভ্রমণ করেছিল। তাদের বেশিরভাগ রাশিয়ান, তবে কয়েক ডজন আমেরিকানও ছিল।
২০১১ সালে নরওয়েতে ৭৭ জনকে হত্যা করা অ্যান্ডার্স ব্রেইভিক এবং এর ৪ বছর পর দক্ষিণ ক্যারোলাইনাতে ৯ জন কালো প্যারিশিনারকে হত্যা করা আমেরিকান শ্বেতাঙ্গবাদী ডাইলান রূফের ঘৃণাপূর্ণ ইশতেহারগুলো ব্রেন্টন হ্যারিসন ট্যারান্টকে প্রভাবিত করেছিল। সে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে ৫০ জনেরও বেশি মুসলিমকে হত্যা করে সরাসরি সম্প্রচার করে।
‘দ্য গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ শিরোনামে ট্যারান্টের ইশতেহারটিও অনরূপভাবে প্যাট্রিক ক্রুসিয়াকে ২২ জন মানুষ হত্যা করতে এবং এক নরওয়েজিয়ান বন্দুকধারীকে ওসলোর এক মসজিদে লোকজনকে গুলি করতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। অনেক বর্ণবাদী উগ্রপন্থী তাৎক্ষণিকভাবে ৬ জানুয়ারীকে তাদের একটি শিক্ষণীয় প্রতীকী জয় এবং কৌশলগত পরাজয় হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।