Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাগনভূঞায় কৃষি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে ইটভাটায়

দাগনভূঞা (ফেনী) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ৭:৪৪ পিএম

দাগনভূঞা উপজেলার কৃষি জমির টপ সয়েল (জমির উর্বর অংশ) যাচ্ছে ইটভাটায়। ইটভাটায় জমির মাটি নেয়ার ফলে এ উপজেলার আবাদ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার পথে। দেদারছে টপ সয়েল কেটে নেয়ার কারণে আবাদের পাশাপাশি বিনষ্ট হচ্ছে বনভূমি ও সবুজায়ন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দাগনভূঞা উপজেলায় রয়েছে ২৬টি ইটভাটা। এসব ইটভাটার বেশিরভাগই সরকারের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে কোন কোন এলাকায় গভীর রাতে মাটি পরিবহণ করা হচ্ছে। উপজেলার চাঁদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ থেকে মাটি যাচ্ছে পৌর এলাকার হান্নানের ফিল্ডে। তুলাতুলি অঞ্চলের মাটি যাচ্ছে আরএলবি-২ ব্রিকে। ভবানীপুর হাইস্কুলের পাশ থেকে মাটি নেয়া হচ্ছে খুশিপুরের একটি ফিল্ডে। দুধমুখা অঞ্চলের মাটি নেয়া হচ্ছে দুধমুখার সিরাজ ব্রিকফিল্ডে। এছাড়া ফিল্ডের মাটি পরিবহণে ব্যবহৃত গাড়ীর ধুলায় মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে রাস্তায় চলাচলকারী জনসাধারণ ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মারাত্মক স্বাস্থ্যহানি ঘটছে।

পৌর ও জনবহুল এলাকায় ইটভাটা স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ শ’ গজের মধ্যেই রয়েছে ৩টি ভাটা। উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকায় গ্রামীণ সড়কে ভারী ট্রাক্টরে চলছে মাটি পরিবহণ। মাটি পরিবহণের কারণে এ উপজেলার ২০/২৫টি গ্রামীণ সড়কে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ওইসব এলাকার কেউ কেউ এতে বাঁধা দিলেও কেউ কেউ আবার টাকা নিয়ে মাটি পরিবহণে সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে কোন না কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ এ উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়াত বিন করিম জানান, ধুলাবালি, ইটভাটার ধুলা ও ধোঁয়া থেকে শিশুসহ সব বয়সিদের নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও টিবি রোগ হয়। রেহাই পায়না বৃদ্ধরাও।

কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইট ভাটার ধোঁয়ার প্রভাবে মাটির উর্বরতা ও উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পায়। গাছপালা ও শ্যামল-সবুজ মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হয়। জানা গেছে, অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি হাজার মাটি মাত্র সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায় ক্রয় করে ভাটা মালিকদের কাছে ১০-১১ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। এতে ভূমি মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে ভারী যানবাহনে মাটি পরিবহণের দায়ে পৃথক অভিযানে স্বল্প সংখ্যক ট্রাক্টর চালককে অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। সচেতনতার উদ্দেশ্যে মাঝে মাঝে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় বৈঠক। তবুও থেমে নেই টপ সয়েল কর্তন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা আক্তার তানিয়া ইনকিলাবকে জানান, গত সপ্তাহে দুইটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। খবর পেলেই আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফেনী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ