মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আগামী সপ্তাহে লাওসে অনুষ্ঠেয় এশীয় সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন ওবামা
ইনকিলাব ডেস্ক : ৭০ লাখেরও কম জনসংখ্যার একটি দেশ লাওস। দেশটির কমিউনিস্ট সরকার যথানিয়মে গোপনীয়তা রক্ষা করে চলে। খুব একটা কূটনৈতিক তৎপরতায় জড়ায় না। এর কোলাহলবিহীন নীরব রাজধানীটি মুখরিত হয়ে উঠবে আগামী সপ্তাহে। এশীয় সম্মেলন উপলক্ষে বিশ^ নেতৃবৃন্দ জড়ো হবেন এখানে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও থাকবেন তাদের মধ্যে।
ওবামা তার শাসনকালের শেষ একটি প্রচেষ্টা চালাবেন এখানে। তা হচ্ছে, এ অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির সাথে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে কীভাবে ভারসাম্য আনা যায় তার চেষ্টা করা। লাওসে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগকারী দেশ হচ্ছে চীন ও ভিয়েতনাম। ওবামা এ ক্ষেত্রে লাওসের বাণিজ্যিক দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়ার চেষ্টা করবেন। গত এপ্রিলের সরকার পরিবর্তনকেও তিনি স্বাগত জানাবেন।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, লাওসের নতুন নেতৃবৃন্দ এখন বেইজিংয়ের দিক থেকে সরে এসে আরেক প্রতিবেশী ভিয়েতনামের দিকে ঘনিষ্ঠভাবে ঝুঁকে পড়তে প্রস্তুত। দক্ষিণ চীনসাগর নিয়ে চীনের সঙ্গে ভিয়েতনামের বৈরিতা রয়েছে। এর জের ধরেই ভিয়েতনাম মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের ওপর নির্ভলশীল হয়ে পড়েছে, এ বিষয়টিই মাথায় রেখেছেন ওবামা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক পশ্চিমা কূটনীতিক জানান, ভিয়েতনামের নতুন সরকার চীনাদের চেয়ে ভিয়েতনামীদের দ্বারা বেশি প্রভাবিত। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরকে ইতিবাচক হিসেবেই গ্রহণ করবে। ওবামাই হবেন ভূ-বেষ্টিত লাওসে সফরকারী প্রথম ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র এখানে গোপন যুদ্ধ চালিয়েছিল। এই দেশটির ওপর তখন আনুমানিক ২০ লাখ টন বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এগুলোর মধ্যে ৩০ ভাগই বিস্ফোরিত হয়নি, যার কারণে লাওসের জনগণ এখনো এক ভয়াবহ বিপদসঙ্কুল পরিবেশে বাস করছে। ভিয়েতনাম ও চীন, উভয়ের কাছেই লাওসের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। ভিয়েতনামের সঙ্গে লাওসের রয়েছে দীর্ঘ স্থল সীমান্ত, যা থাইল্যান্ড ও অন্যান্য দেশের বাজারে প্রবেশ করতে দেশটিকে সাহায্য করে। এদিকে বাণিজ্যিক কৌশলের অংশ হিসেবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রবেশের জন্য নিউ সিল্ক রোড ব্যবহারে চীনের প্রধান প্রবেশদ্বার হচ্ছে লাওস।
বিশে^র দীর্ঘতম নদীগুলোর একটি মেকংকে ঘিরে লাওস গড়ে তুলছে অনেকগুলো পানিবিদ্যুত কেন্দ্র। তার লক্ষ্য হচ্ছে, প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিদ্যুত বিক্রি করে এশিয়ার জ¦ালানি চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভুত হওয়া।
তবে লাওসের মনে কি আছে, অর্থাৎ তার পরিকল্পনা বোঝা দুষ্কর। কারণ, দেশটির নেতৃবৃন্দ পশ্চিমা কূটনীতিকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষায় তেমন একটা উৎসাহী নন। দেশটির প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী সমসাভল্টলেংসাভাদ চীনের ৭ বিলিয়ন ডলারের একটি রেল প্রকল্পের ব্যাপারে কোনো সাড়া দেননি। প্রকল্পটি এখন স্থগিত অবস্থায় আছে। তিনি সাড়া দেননি কারণ, চুক্তির অনেকগুলো ব্যাপার লাওস মেনে নিতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী থংলুন সিসালিথের নতুন সরকারের অনেক কর্মকর্তাই ভিয়েতনামে পড়াশোনা করেছেন। তারা সরকার গঠনের পর প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে হ্যানয় যান। লাওস সম্পর্কে এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন কৌশলগত দিকগুলো প্রকাশ করবে না। তবে, লাওস ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা রও সার্বভৌমত্ব অব্যাহত রেখে আমরা এ অঞ্চলের এবং এর বাইরের যে কারো সাথে গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী। বেইজিং ২০১৪ ও ২০১৫ সালে লাওসে বার্ষিক এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আসিয়ান ব্যবসায়ী পরিষদের পরিচালক এন্থনি নেলসন বলেছেন, লাওসে যুক্তরাষ্ট্র বড় কোনো বিনিয়োগ গড়ে তুলতে পারেনি। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৭ থেকে ৮টি কোম্পানি আছে। যেখানে ভিয়েতনামের রয়েছে ৩০ থেকে ৪০টি। আর চীন এখানে সম্পূর্ণ ভিস্স একটি বিষয়। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।