Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তিন-চতুর্থাংশ জার্মান বোরকা পরার বিপক্ষে

প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর যেমন ইচ্ছা পোশাক পরার অধিকার থাকা উচিত। বোরকা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত সঠিক নয় -মুসলিমদের প্রতিবাদ
ইনকিলাব ডেস্ক : জার্মানির চার ভাগের তিন ভাগ নাগরিকই জনসমক্ষে সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা বোরকা পরিধান করা কাউকে দেখতে চান না। এ বিষয়ে উত্তপ্ত বিতর্কও শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। সাম্প্রতিক এক জনমত জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ইনফ্রাটেস্ট নামের একটি সংস্থার পরিচালিত ওই জরিপে অংশগ্রহণকারী জার্মান নাগরিকদের ৮১ শতাংশই বোরকার বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন। এমন কি অর্ধেকেরও বেশি জার্মান মনে করেন বোরকা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।
চলতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এআরডির সহায়তায় ১ হাজার ৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক জার্মান নাগরিকের ওপর এই জরিপ চালায় ইনফ্রাটেস্ট। জরিপে ৩০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী সরকারি চাকুরে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য বোরকা নিষিদ্ধের পক্ষে মত দেন। বিপরীতে মাত্র ১৫ শতাংশ বোরকা নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন। জার্মানিতে মুসলিম নারীদের সংগঠন জার্মান অ্যালায়েন্স অব মুসলিম উইমেনের গ্যাব্রিয়েল বুস-নিয়াজি এমনটা মনে করেন না। তিনি মনে করেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর যেমন ইচ্ছা পোশাক পরার অধিকার থাকা উচিত। বোরকা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে সঠিক নয় বলে মত প্রকাশ করেছেন তিনি। কিন্তু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ পিটার নওমান মনে করেন না, বোরকা নিষিদ্ধ করা হলে জার্মানিকে নিরাপদ করা সম্ভব হবে। কিংস কলেজ লন্ডনের সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রফেসর ও সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব র‌্যাডিকালাইজেশনের পরিচালক পিটার বলেন, এই ছদ্ম সমাধানে কোনো কাজ হবে বলে আমি মনে করি না। আমি এমন একটি ঘটনাও জানি না যা থেকে মনে হতে পারে বোরকা নিষিদ্ধ করলে জঙ্গি হামলা বন্ধ হতে পারে বা কারো জঙ্গি হয়ে ওঠা বন্ধ হতে পারে। এদিকে, জার্মানির নীতিনির্ধারকরাও বোরকা নিষিদ্ধ করার কথা বিবেচনা করছেন। চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জনসমক্ষ, আদালত কক্ষ ও রাস্তাঘাটে বোরকা ও নেকাবের মতো পোশাক নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। ফ্রান্সে ২০১১ সাল থেকে এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জার্মানির মন্ত্রীদের অনেকে এমনও মনে করছেন, নির্দিষ্ট কোনো স্থানে নয়, বোরকা পুরোপুরিই নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। কিন্তু জার্মানির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থমাস ডি মাইজির এই মতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এদিকে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের আরেক নেতা ক্লিমেনস বিনিংগার বলেছেন, আমার মনে হয় আইন করে জনসমক্ষে পুরো শরীর ঢাকা বোরকা নিষিদ্ধ করা উচিত। এই আইন করলে সমাজের ওপর বেশ বড় রকম প্রভাব পড়বে ও অভিবাসীরা সমাজের মূলস্রোতে সহজে মিশে যেতে পারবেন। জার্মানির ইসলামী ধর্মবেত্তারাও এই মতে সায় দিয়েছেন। তাদের অনেকেই মনে করেন, পুরো শরীর ঢাকা বোরকা ইসলামে বাধ্যতামূলক নয়। তারা এমনও মনে করেন, এই ধরনের বোরকা মুসলিমদের জন্য সমাজে মিশে যাওয়ার পক্ষে অন্তরায়। ডয়েচে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তিন-চতুর্থাংশ জার্মান বোরকা পরার বিপক্ষে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ