যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি আরও মারাত্মক হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে মৃত্যুর সংখ্যার ক্ষেত্রে বিশাল অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে দেশটিতে এবং ভ্যাকসিনগুলো এখনও কাজ করবে বলে আশা করছেন তিনি। দেশটির গণিতবিদরা এই ভাইরাসটির নতুন বা পুরাতন সংস্করণে সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যুহারের তুলনা করে এমন তথ্য পেয়েছেন। করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রামক রূপটি ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য জুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। বিবিসির স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিষয়ক প্রতিবেদক জেমস গালাঘর প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনটি অনুবাদ করে ইনকিলাব পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছেন মোহাম্মদ আবদুল অদুদ।-বিবিসি
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ডাউনিং স্ট্রিটে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে বলেছেন, করোনার নতুন রূপটি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি, এখন লন্ডন এবং দেশটির দক্ষিণ পূর্বে প্রথম চিহ্নিত হওয়ার স্থানে ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে এবং এতে মৃত্যুর উচ্চতর মাত্রা যুক্ত হতে পারে। তিনি বলেন, "এটি মূলতনতুন রূপটির প্রভাব যার অর্থ এনএইচএস এত তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে।" জনস্বাস্থ্য ইংল্যান্ড, ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন এবং ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটর প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান নতুন এই রূপটি কতটা মারাত্মক তা মূল্যায়ন করার চেষ্টা করে চলেছে। তাদের প্রমাণগুলো নতুন শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস হুমকি বিষয়ক পরামর্শদাতা গোষ্ঠীর বিজ্ঞানীরা পর্যোলোচনা করছেন। দলটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে "বাস্তববাদী সম্ভাবনা" ছিল যে ভাইরাসটি আরও মারাত্মক হয়ে উঠেছে, তবে এটি এখনও নিশ্চিত নয়।
এদিকে সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স এ পর্যন্ত তথ্যটিকে "এখনও শক্তিশালী না" হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছিলেন, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, এই মৃত্যুর সংখ্যার আশেপাশে অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে এবং এ সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট নিশ্চয়তা পাওয়ার জন্য আমাদের আরও কাজ করা দরকার, তবে স্পষ্টতই এটি উদ্বেগজনক বিষয় যে এটির মৃত্যুর হার এবং সংক্রমণযোগ্যতা বৃদ্ধিও রয়েছে। প্যাট্রিক ভ্যালেন্স বলেন, এমন প্রমাণ রয়েছে যে নতুন আক্রান্তদের ঝুঁকি বাড়ছে। আগের তুলনায় নতুন রূপটি ৩০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এতে প্রায় ৩০% বেশি মারাত্মক হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, পুরানো সংক্রমণের সাথে ৬০ বছর বয়সের ১০০০ জনের মধ্যে যেখানে ১০ জনের মৃত্যু হতো সেখানে নতুন ভেরিয়েন্টের সাথে সম্পৃক্তদের মৃত্যু ১৩ তে পৌঁছেছে। কোভিডের পজেটিভ পরীক্ষা করা প্রত্যেকের দিকে তাকালে এই পার্থক্যটি পাওয়া যায়। তবে কেবলমাত্র হাসপাতালের ডেটা বিশ্লেষণ করেই মৃত্যুর হার হ্রাসবৃদ্ধি হবে না। ভাল চিকিৎসার জন্য করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে যত্ন আরও উন্নত হয়েছে।