Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মার্জিয়া মৌসুমী তহুরায় ছিন্নভিন্ন ইরান

প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে ‘সি’ গ্রæপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি এশিয়ান ফুটবলের পাওয়ার হাউজ ইরান। ফলে যথারীতি সহজ জয়েই টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করলো লাল-সবুজের মেয়েরা। বলা যায়, আসরে স্বপ্নের সূচনাই পেলো স্বাগতিকরা। গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে ৩-০ গোলে হারান ইরানকে। বিজয়ী দলের হয়ে মার্জিয়া, মৌসুমী ও তহুরা একটি করে গোল করেন। এই জয় গ্রæপ সেরা হওয়ার লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। এদিকে, নিজেদের প্রথম ম্যাচে বড় জয়ে সূচনা করেছে চাইনিজ তাইপে। সকালে একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে চাইনিজ তাইপে ৭-১ গোলে হারায় কিরগিজস্তানকে। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশের পরবর্তি প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর।
কাল ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলে বাংলাদেশের মেয়েরা। তারা একের পর এক আক্রমণে তছনছ করে দেয় ইরানী রক্ষণদুর্গকে। ভাগ্য সহায় ছিলো না বলেই ম্যাচের প্রথমার্ধে অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করে স্বাগতিকরা। পুরো ম্যাচে অনেকটা অসহায়ই দেখা গেছে ইরানকে। বাংলাদেশের সীমানায় উল্লেখ করার মতো তেমন কোন আক্রমণই করতে পারেনি তারা। দুয়েকটি আক্রমণ করলেও বাংলাদেশের রক্ষণপ্রচীর ভেদ করা সম্ভব হয়নি সম্ভব হয়নি ইরানীদের পক্ষে।
ম্যাচের ৩ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো লাল-সবুজরা। এসময় মাঝমাঠ থেকে দ্রæতগতিতে বল নিয়ে ইরান রক্ষণভাগে ঢুকে পড়েছিলেন স্বাগতিক মিডফিল্ডার মৌসুমি জাহান। বক্সে ঢুকে তিনি শট নেন। কিন্তু তার শট প্রতিপক্ষ রক্ষণ দেয়ালে আছড়ে পড়লে বল পান ফরোয়ার্ড স্বপ্না। আগুয়ান ইরানি গোলরক্ষক মায়েদেহ দাভাজিকে কাটিয়ে নিয়েও স্বপ্না বল মারেন বাইরে। ধারাবাহিক আক্রমণের মুখে ম্যাচের ৭ মিনিটে আরো একটি গোলের সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। এসময় চাপ অব্যাহত রেখে বক্সের কানায় একটি ফ্রি-কিক আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা। ফ্রি-কিক নেন মিডফিল্ডার মারিয়া। তার শটের বল ইরান ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে ফেরত আসলে ফিরতি বলে ডান পায়ের শট নেন আরেক মিডফিল্ডার মার্জিয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের। মার্জিয়ার শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময় ইরান চাপের মুখে থাকলেও পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করে বার কয়েক ঢুঁ মারে বাংলাদেশের রক্ষণদুর্গে। কিন্তু স্বাগতিক ডিফেন্ডাররা ছিলেন সজাগ। তারা দৃঢ়তার সঙ্গেই ফিরিয়ে দেন বল। গোলশূন্য অবস্থায় ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হলেও বিরতির পর যেন আরো দুর্বার হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণে যায় তারা। যার ফলে ম্যাচের ৪৭ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ পায় কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনের দল। এসময় সানজিদা আক্তারের কর্নার ক্লিয়ার হওয়ার পর বক্সের মাঝে বল পেয়ে মারিয়া মান্ডা ডানপায়ে প্রচÐ জোরে শট নেন। তার শট দুর্দান্ত সেভ করেন ইরানি গোলরক্ষক মায়েদেহ। নিশ্চিত গোল বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। অবশেষে কাক্সিক্ষত গোলের দেখা মিলে। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে সানজিদা খাতুনের করা কর্নার ক্লিয়ার করে ইরানী রক্ষণভাগ। বল চলে যায় প্রায় মাঝমাঠে। সেখান থেকে বল আবারও ইরানি রক্ষণভাগে এসে পড়লে তাতে ভলি শট নেন মারিয়া মান্ডা। মায়েদেহ বল ফেরালেও রিবাউন্ডে প্লেসিং শটে গোল করেন স্বাগতিক মিডফিল্ডার মার্জিয়া (১-০)। উল্লাসে ফেটে পড়ে বাংলাদেশ শিবির। এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালায় লাল-সবুজরা। সাফল্য আসে তিন মিনিটের মধ্যেই। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পায় বাংলাদেশ। এসময় স্বপ্নার করা ক্রস বক্সের ডানপ্রান্তে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কোনাকুনি দৌড়ে এগিয়ে আসা মৌসুমির সামনে বল ফেলেন সানজিদা। ভুল করেননি মৌসুমী। সানজিদার কাছ থেকে বল পেয়ে মাপা প্লেসিং শটে গোল করে ব্যবধান বাড়ান তিনি (২-০)। দুই গোলে এগিয়ে গিয়ে যেন আরো বেশী অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। আক্রমণের ধারা অব্যাহত রাখে তারা। যার ফলে ম্যাচের ৮৬ মিনিটে তৃতীয় গোল আদায় করে নেয় অধিনায়ক কৃষ্ণা রানীর দল। মণিকা চাকমার ক্রসে ছোট বক্স থেকে দর্শনীয় হেডে গোল করে দলকে আনন্দে ভাসান তহুরা (৩-০)। ম্যাচের বাকি সময় আর কোন গোল না হওয়ায় সহজ জয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টায় নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সিঙ্গাপুরের মোকাবেলা করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্জিয়া মৌসুমী তহুরায় ছিন্নভিন্ন ইরান
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ