মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল জুড়ে গত ৬ জানুয়ারিতে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল, তার সামঞ্জস্য ২০১২ সালের জুলাইয়ে হংকংয়ের লেজিসলেটিভ কাউন্সিল (লেগকো) আক্রমণকারী গণতন্ত্রপন্থীদের সাথে অতি সামান্য। ট্রাম্পপন্থী বিক্ষোভকারীরা একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ফল উল্টে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। আর, যা হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা চাইছিল ঠিক উল্টো অর্থাৎ একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন।
তবে দু’টি বিক্ষোভেই কমপক্ষে একটি সাদৃশ্য ছিল: তারা সংগঠন, প্রচার এবং জনসংযোগের জন্য ডিজিটাল মিডিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করেছিল। ইন্টারনেট এবং বিশেষত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিক্ষোভকারীদের জন্য নতুন রাস্তা খুলে দিয়েছে এবং রাজপথে সক্রিয়তা বৃদ্ধি করেছে। তবে এ প্রযুক্তি নির্ভরতার কারণে তাদের সনাক্ত করাটা কর্তৃপক্ষের জন্য সহজ হয়ে উঠেছে। সরকারগুলোরও একবিংশ শতাব্দীর ডিজিটাল সরঞ্জামগুলো উন্নত হওয়ায় প্রতিবাদকারীদের সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের মোকাবেলা করেছে।
হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা টেলিগ্রামের মতো এনক্রিপ্ট করা অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে দ্রত গতিতে যোগাযোগ করেছিল এবং আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়েছিল। তারা তাদের ‘হঠাৎ জনসমাগম’ কৌশলে কর্তৃপক্ষকে বিস্মিত করে দিয়ে দ্রুত হাজার হাজার লোককে শহরের বিমানবন্দর বন্ধ করতে বা শপিংমলে তাদের প্রতিবাদ সংগীত গাইতে জড়ো করেছিল। ২০২০ সালে বেলারুশের আন্দোলনকর্মীরা অভিনব ডিজিটাল প্রচারণা চালানোর জন্য আরও সৃজনশীল উপায় হিসেবে মাল্টিপ্লেয়ার নিন্টেন্ডো গেমের ‘অ্যানিম্যাল ক্রসিং’ বা উইকিপেডিয়ায় ‘সম্পাদনা যুদ্ধ’ বেছে নেয়।
ডিজিটাল দক্ষতা প্রতিবাদকারীদের এক ধাপ বেশি সুরক্ষা দিয়েছে। এর মাধ্যমে সতর্কতাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে পিন করে হাজার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া যায়। হংকংয়ে এইচকেম্যাপ.লাইভ এর ব্যবহারকারীদের ভিড়ের ওপর নজরদারি করে পুলিশ, যানবাহন এবং টিয়ার-গ্যাসের তাৎক্ষণিক গতিবিধি সম্পর্কে জানাতে পেরেছিল (যদিও, চীন এবং হংকং সরকারের চাপের কারণে অ্যাপল অ্যাপটি সরিয়ে নিয়েছিল)। ইদানিং বেশিরভাগ সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিরোধে আন্দোলন কর্মীরা নিজস্ব ডিজিটাল সরঞ্জাম ব্যবহার করেন এবং সরকারগুলোও ক্রমবর্ধমান পরিশীলতার সাথে একই ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল থাইল্যান্ডের পরিচালক পিয়ানুট কোটসান মন্তব্য করেছেন, ‘উভয় পক্ষই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে। ফেসবুক, সংবাদ সম্মেলন, এমনকি টেলিগ্রামও সরকারের সাথে আপস করতে পারে।’ থাইল্যান্ডের মতো হংকংয়েও বিক্ষোভকারীদের পদক্ষেপ নেয়ার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার আগেই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। আন্দোলনকারীদের সন্ধানের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াও ব্যবহার করা যেতে পারে। বর্তমানে তাইওয়ানের নির্বাসনে থাকা হংকংয়ের সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্টের ওয়াং ইয়িক-মো বলেছেন, অনলাইন মেসেজিং গ্রæপগুলো গুপ্তচরবৃত্তির শিকার হচ্ছে।
কীভাবে একটি ট্রল ফার্ম থেকে কয়েক হাজার ভুয়া অনলাইন ব্যবহারকারী বা ট্রল ভাড়া করে, কীভাবে সেই ট্রলদের ব্যবহার করে নির্দিষ্ট টার্গেটকে অনুসরণ করতে হয়, সেই উদাহরণও এখন মজুদ ডিজিটাল প্লাটফর্মে। অভিযোগ রয়েছে যে, চীন ঠিক এভাবেই হংকংয়ের বিক্ষোভে অহিংস এবং উগ্রপন্থীদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল এবং প্রতিবাদকারীদের দাঙ্গাকারী বা বিদেশী শক্তির ক‚টনীতি হিসাবে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টায় বিপুল পরিমাণ প্রচারণা চালায়।
ইন্টারনেট এবং অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ থাকলেও বিক্ষোভকারীরা ঘুরেফিরে সংযুক্ত থাকার অভিনব উপায়গুলো খুঁজে বের করে নেয়। তারা ব্রিজফাই এবং ফায়ারচ্যাটের মতো অফলাইন বøুটুথ অ্যাপ্লিকেশনগুলি, বা ডেটিং অ্যাপ্লিকেশন টিন্ডার, বা গেম অ্যাপ্লিকেশন ‘পোকেমন গো’ ব্যবহার করে সংগঠিত হয়। একবিংশ শতাব্দীর বিক্ষোভকারীরা প্রযুক্তিগতভাবে পারদর্শী এবং বিশ্বব্যাপী সংযুক্ত থাকতে পারে এবং তাই তাদের দমন করা কঠিন। তবে, সরকারগুলোও ক্রমবর্ধমানভাবে ডিজিটাল শক্তিকে আলিঙ্গন করছে এবং তাদের কাছে পর্যাপ্ত সম্পদ এবং জনশক্তি রয়েছে যা আন্দোলনকারীদের কাছে নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।