Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রায়ে কোরআনের উদ্ধৃতি বিচারকের

কাকরাইলে মা-ছেলে হত্যায় তিনজনের মৃত্যুদন্ড

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

রাজধানীর কাকরাইলে মা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণা করেছেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম। দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-স্বামী আব্দুল করিম, তার তৃতীয় স্ত্রী শারমিন আক্তার মুক্তা ও শ্যালক আল-আমিন ওরফে জনি। গত ১০ জানুয়ারি একই আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এই তারিখ ধার্য করে।

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, মহান আল্লাহ আমাদের যে সকল নিয়ামত দান করেছেন তার মধ্যে সুসন্তান অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। সন্তানের আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল হলো তার পিতা। আর স্ত্রী হলেন সহর্ধমিনী, অর্ধাঙ্গিনী ও সন্তানের জননী। সেকারণে প্রত্যেক স্ত্রী তার স্বামীর কাছে সম্মানের পাত্রী। স্বামীর কাছে স্ত্রীর রয়েছে বহুমাত্রিক অধিকার। স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের সহায়ক ও পরিপূরক। সুরা আল বাকারার একটি আয়াত তুলে ধরে বিচারক বলেন, মহান আল্লাহ পবিত্র আল কোরআন শরিফে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে বলেন, তারা তোমাদের আবরণ এবং তোমরা তাদের আবরণ। ইসলাম ধর্ম শান্তি ও সত্যের ধর্ম। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের সূরা মায়িদাহ’র আয়াত তুলে ধরে বিচারক বলেন, যে কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করে, অন্য কোনো প্রাণের বিনিময় ব্যতীত কিংবা পৃথিবীতে কোনো ফ্যাসাদ সৃষ্টির অপরাধ ছাড়া, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করল।

বিচারক আরও বলেন, এই মামলায় হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বা মাস্টার মাইন্ড হলো আসামি আব্দুল করিম। যিনি মৃত ভিকটিম শামসুন্নাহারের স্বামী ও মৃত ভিকটিম সাজ্জাদুল করিম শাওনের পিতা। অথচ আসামি আব্দুল করিম নিজের অসৎ উদ্দেশ্যে ও হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আসামি শারমিন আক্তার মুক্তা ও আসামি মো. আল আমিন জনির সঙ্গে পূর্ব পরিকল্পনা করে জনিকে দিয়ে নিজ স্ত্রী ও পুত্রকে নৃশংসভাবে হত্যা করিয়েছে।
এদিকে রায় ঘোষণা শেষে মামলার বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। রায় যেন দ্রæত কার্যকর সেই প্রত্যশা ব্যক্ত করেন তারা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর কাকরাইলের পাইওনিয়র গলির ৭৯/১ নম্বর বাসায় আব্দুল করিমের প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার করিম (৪৬) ও তার ছেলে সাজ্জাদুল করিম শাওনকে (১৯) গলাকেটে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় স্বামী আব্দুল করিম, তার তৃতীয় স্ত্রী মুক্তা ও মুক্তার ভাই জনিকে আসামি করে মামলা করেন নিহত শামসুননাহারের ভাই আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপনকালে মামলার তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড দাবি করে। আর রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি মর্মে খালাস চেয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ওই তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আলী হোসেন। গত বছর ৩১ জানুয়ারি তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যুদন্ড

১৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ