Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা মধ্যপ্রদেশে

রামমন্দিরের জন্য চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে উস্কানি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৫ এএম

ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য চাঁদা সংগ্রহকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা মাথাচাড়া দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। ইন্দোর, মান্দসৌর, উজ্জয়িনীসহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মুসলিম সমাজের নেতারা অভিযোগ করছেন, রামমন্দিরের চাঁদা তোলার মিছিল ইচ্ছে করে তাদের মহল্লা দিয়ে নিয়ে গিয়ে সংঘাতের প্ররোচনা দেয়া হচ্ছে এবং মসজিদেও ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধেও এই সব ঘটনায় হিন্দু স¤প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে, তবে পুলিশ কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্যের বিজেপি সরকার তা জোরালোভাবে অস্বীকার করছে। বস্তুত সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত হওয়ার পর গত আগস্টেই সেই মন্দিরের ভ‚মিপ‚জা সম্পন্ন হয়েছে, এখন চলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেই মন্দির নির্মাণের জন্য অর্থসংগ্রহের কাজ। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো বিভিন্ন সংগঠন বাইক মিছিলের আয়োজন করে মন্দিরের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তুলতেও শুরু করেছে। মধ্যপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই সব মিছিল যখন মুসলিম মহল্লা দিয়ে যাচ্ছিল তখন এলাকাবাসী মিছিল লক্ষ্য করে পাথর বা ইট-পাটকেল ছুঁড়েছে বলে হিন্দুত্ববাদীরা অভিযোগ করছেন। মুসলিম সমাজের নেতারা পাল্টা বলছেন, মিছিল থেকেই সহিংসতার প্ররোচনা দেয়া হচ্ছে, এমনকী মসজিদের মাথায় উঠে মিনার ভাঙার চেষ্টা পর্যন্ত হয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর এই ধরনেরই তীব্র সা¤প্রদায়িক সংঘাতের সাক্ষী ছিল ইন্দোরের কাছে চন্দন খেড়ি গ্রাম। ওই গ্রামের সরপঞ্চ বা মোড়ল দিলনওয়াজ প্যাটেল বলছিলেন, ‘রামমন্দিরের নামে চাঁদা তোলার মিছিল বের করে আসলে গোটা রাজ্যেই সা¤প্রদায়িক পরিবেশকে বিষিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। এই সব মিছিলের উদ্দেশ্যই হল মুসলিমদের ভয় দেখানো।’ ‘বিভিন্ন মুসলিম পরিবারের ওপর হামলা হয়েছে, অথচ পুলিশ এই সব ঘটনায় শুধু মুসলিমদেরই আটক করছে - হিন্দুদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না।’ ‘প্রত্যক্ষদর্শীদের তোলা ভিডিওতে পরিষ্কার দেখা গেছে, মসজিদের মাথায় চড়ে মিনার ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে, অথচ তাদের বিরুদ্ধে কিছুই করা হচ্ছে না।’ একই সময়ে অবিকল প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটার অভিযোগ এসেছে মান্দসৌর বা উজ্জয়িনী জেলা থেকেও। মালওয়া অঞ্চলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা সোহন বিশ্বকর্মা অবশ্য দাবি করছেন, মুসলিমরা বাড়ির ছাদে আগে থেকেই পাথর জড়ো করে রেখে তাদের বিভিন্ন মিছিলে হামলা চালিয়েছে, আর সেই আক্রমণ ছিল প‚র্ব-পরিকল্পিত। হিন্দু ও মুসলিম উভয় স¤প্রদায়ের পক্ষ থেকেই পুলিশের কাছে এই সব ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে - এবং জাতীয় টিভি চ্যানেল এনডিটিভি দাবি করেছে, উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে যাদের আটক করা হয়েছে তারা সবাই মুসলিম। ইন্দোর জোনে পুলিশের আইজি যোগেশ দেশমুখ অবশ্য কোনো বিশেষ স¤প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাত দেখানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পুলিশের কাছে ধরনা দিতে আসা মুসলিম নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নিজেদের স¤প্রদায়ের লোকজনকে ও অন্য স¤প্রদায়ে আপনাদের বন্ধুদের কাছে গিয়েও বলুন পুলিশ বিন্দুমাত্র পক্ষপাত দেখাবে না।’ ‘দোষীরা সবাই গ্রেফতার হবে। আমাদের চোখে সবাই সমান এবং এটাও মনে রাখতে হবে স¤প্রীতি বজায় রাখার দায়িত্বও সব ধর্মের লোকেদের, সব নাগরিকের।’ কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং, দলের এমএলএ আরিফ মাসুদরা অবশ্য অভিযোগ করছেন, বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের উসকানিম‚লক বক্তব্যেই পরিস্থিতি আরো বিষিয়ে উঠছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান যদিও আশ্বাস দিয়েছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে - ‘তারা যে-ই হোক না কেন’! তবে রামমন্দিরের জন্য চাঁদা সংগ্রহে যে কোনো বাধা দেয়া হবে না, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ক্যাবিনেট মন্ত্রী বিশ্বাস সারং। বিবিসি।

 



 

Show all comments
  • তুষার ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৩০ এএম says : 0
    এই হলো তাদের ধর্ম নিরপেক্ষতার নমুনা!
    Total Reply(0) Reply
  • সাদ্দাম ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৩১ এএম says : 0
    সাম্প্রদায়িকতার কারণে ভারত দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • আজিজ ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৩১ এএম says : 0
    চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়া দরকার
    Total Reply(0) Reply
  • বাবুল ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৩২ এএম says : 0
    মুসলমানদের জন্য ভারত হলো জেলখানা
    Total Reply(0) Reply
  • সোয়েব+আহমেদ ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:০৯ এএম says : 0
    ভারত হচ্ছে উগ্রবাদের আতুরঘর।
    Total Reply(0) Reply
  • মুক্তিকামী জনতা ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:১২ এএম says : 0
    ভারতের মুসলিমরা আজ ভালো নেই, এসব উগ্রবাদিদের তাণ্ডবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আযোধ্যা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ