Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেতন কাঠামোর ভিত্তিতে দেয়া হবে এইচ১বি ভিসা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

বিদায় নেয়ার কয়েকদির আগে ফের ভিসা সংক্রান্ত নিয়মে বদল আনলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার থেকে আবেদনকারীদের লটারির পরিবর্তে বেতন কাঠামোর নিরিখে এইচ১বি ভিসা দেয়া হবে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করল ট্রাম্প প্রশাসন।

প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের আগেই ভিসা সংক্রান্ত এই প্রস্তাবটি পেশ করে জনমত চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার বেতনের নিরিখে এইচ১বি ভিসা দেয়ার সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত করা দেয়া হল। এ বার থেকে আবেদনকারীদের লটারির মাধ্যমে এইচ-১বি ভিসা দেয়ার পরিবর্তে ‘কর্মদক্ষতা’ এবং ‘বেতনকাঠামো’কে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। রদবদলের চ‚ড়ান্ত নীতি ফেডেরাল রেজিস্টারে প্রকাশিত হবে ৮ জানুয়ারি (বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী শনিবার)। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এইচ১বি ভিসার জন্য আবেদনপত্র পূরণ করা শুরু হবে। নতুন নিয়ম প্রকাশিত হওয়ার পর ৬০ দিন পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে। আমেরিকার কর্মীদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার্থে এই রদবদলের চিন্তাভাবনা বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড স্টেটস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস)। পাশাপাশি, আমেরিকার সংস্থাগুলি যাতে নতুন ভিসা নীতির মাধ্যমে বিদেশের দক্ষ কর্মীদেরই একমাত্র নিয়োগ করতে পারে, সেই উদ্দেশ্যপূরণ করাও এর লক্ষ্য বলে জানিয়েছে ওই ডিপার্টমেন্ট। এছাড়া, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে মার্কিন নাগরিকদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে দাবি ট্রাম্প প্রশাসনের। তবে প্রেসিডেন্ট পদে বসলে এই সিদ্ধান্ত বদল করার ক্ষমতা থাকবে জো বাইডেনের হাতে। নির্বাচনের আগেই তিনি জানিয়েছিলেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিসা নীতি তিনি সমর্থন করেন না।

বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, আদালতে মামলা হলে ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ধোপে টিকবে না। কারণ, এর আগেই আদালত সাফ জানিয়েছে কংগ্রেসের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা খর্ব করতে পারে না প্রশাসন। আর বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে যেকোনও বিভাগেই সংশ্লিষ্ট নিয়ম মেনে প্রবাসী কর্মী নিয়োগের আইন রয়েছে। প্রয়োজনে, কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন ডেকে নতুন নির্দেশ বাতিলও করা যেতে পারে। তাই বিদায়ী প্রশাসনের এইচ১বি ভিসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বলবৎ হলেও তা বদলানো সম্ভব। উল্লেখ্য, নতুন বছরের শুরুতেই ওয়ার্ক এবং ইমিগ্রান্ট ভিসায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৩১ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রতি বছর গড়ে ৮৫ হাজার এইচ১বি ভিসা দেয় আমেরিকা। এর মধ্যে বিদেশি কর্মী ছাড়া আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। ৩ বছর মেয়াদের এই ভিসা পুনর্নবীকরণ করা যায়। তবে ইউএসসিআইএস-এর পর্যবেক্ষণ, আমেরিকার বাণিজ্যিক তথা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি এই ভিসার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগে যথাযথ ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে এবং নিজেদের ব্যবসায়িক লক্ষ্যপূরণে ওই সংস্থাগুলিকে অতি দক্ষ কর্মীদের উঁচু পদে নিয়োগ করতে হবে বলে মনে করেন ইউএসসিআইএস-এর আধিকারিকেরা। ইউএসসিআইএস-এর ডেপুটি ডিরেক্টর অব পলিসি জোসেফ এডলো বলেন, ‘এইচ১বি ভিসার মাধ্যমে নিয়োগের যথোপযুক্ত ফায়দা তুলতে পারেনি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি। ব্যবসার ব্যয়ভার কমাতে সংস্থাগুলি এই ভিসার মাধ্যমে নিচুস্তরের কর্মীদের নিয়োগ করেছে।’ তবে বর্তমান এইচ১বি ভিসা নীতিতে যে ফাঁকফোকর রয়েছে, তা-ও মনে করেন তিনি। জোসেফের মতে, ‘বর্তমানে এইচ১বি ভিসার মাধ্যমে যে প্রক্রিয়ায় কর্মীদের নির্বাচন করা হয়, তাতে এই ভিসার সাহায্য আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে পারেনি সংস্থাগুলি। যার ফলে আমেরিকার কর্মীদের বদলে নীচুস্তরে কম বেতনে বিদেশিদের নিয়োগ করা হয়েছে।’

গোটা ব্যবস্থায় আমেরিকার সংস্থাগুলির মুনাফার পাশাপাশি সে দেশের নাগরিকদের কংর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই আবহে গত বছরের ২ নভেম্বর এইচ-১বি ভিসা নীতির পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে নোটিস দেয় ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। এ নিয়ে আম জনতার মতামতও আহবান করা হয়। তার পর সেই প্রস্তাবিত নিয়মগুলি প্রকাশিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএসসিআইএস। সূত্র : দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এইচ১বি-ভিসা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ