Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পোশাক ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে করোনার ধাক্কা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাক ও চামড়া খাতে। গত অর্থবছরের প্রথমার্ধের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে তৈরি পোশাক রফতানি কমেছে দুই দশমিক ৯৯ শতাংশ। আর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি কমেছে ছয় দশমিক ২৪ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মাসিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ১ হাজার ৫৫৪ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দুই দশমিক ৯৯ শতাংশ কম। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চার দশমিক ১২ শতাংশ কম। চলতি বছরের প্রথমার্ধে তৈরি পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৬২১ কোটি ডলার। অর্থবছরের প্রথমার্ধে ওভেন পোশাকের রফতানি ১০ দশমিক ২২ শতাংশ কমলেও নিট পোশাকের রফতানি তিন দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া হোম টেক্সটাইল, বেড কিচেন, টয়লেট লাইনসের পোশাকসহ অন্যান্য পেশাকের রফতানি বেড়েছে।

গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে হোম টেক্সটাইলের রফতানি বেড়েছে ৪৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বেড কিচেন, টয়লেট লাইনসের পোশাকের ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ ও অন্যান্য পোশাকের রফতানি বেড়েছে ১০৮ দশমিক ০৭ শতাংশ।
পোশাকখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের মার্চ থেকেই পোশাক রফতানির ক্রয়াদেশ বা অর্ডার বাতিল হতে থাকে। একই সঙ্গে ক্রয়াদেশ স্থগিতও হতে শুরু করে। গত বছরের ৩ এপ্রিল পর্যন্ত করোনার প্রভাবে পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) তৈরি পোশাক রফতানি থেকে আয় হয় এক হাজার ২৮৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এক দশমিক ৪৮ শতাংশ কম।

চামড়াখাতের অবস্থাও তৈরি পোশাকের মতোই টালমাটাল। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে বিগত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে কমেছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ কম। অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ৪৪ কোটি ৬১ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৫ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের চামড়া, ১১ কোটি ২৭ লাখ ডলারের চামড়াপণ্য ও ২৭ কোটি ডলারের চামড়ার জুতা রফতানি হয়েছে। জুতা রফতানি দুই শতাংশ কমেছে, চামড়া ও চামড়াপণ্য রফতানি কমেছে যথাক্রমে ১৭ ও সাড়ে ১০ শতাংশ।

এদিকে আবর্জনা হিসেবে ফেলে দেয়া চুল খুলেছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। বিদেশের বাজারে চাহিদা বাড়ছে বাংলাদেশি চুলের। ইপিবি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২ কোটি ২৪ লাখ ডলারের চুল ও পরচুলা রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ১ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের চুল ও পরচুলা রফতানি হয়েছিল বিভিন্ন দেশে।

এছাড়া লোকসানের দোহাই দিয়ে পাটকল বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্তের মধ্যেও বিশ্ববাজারে বাড়ছে বাংলাদেশি পাট ও পাট জাত পণ্যের কদর। বেড়েছে দেশীয় ওষুধ রফতানিও। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি বেড়েছে ৩০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ওষুধ রফতানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ১৫ শতাংশ।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৬৬ কোটি ৮১ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি রফতানি আয় বেড়েছে। এর আগে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে ৮৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ, যা ছিল আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ইপিবির পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের কাঁচা পাট, ৪৪ কোটি ৯২ লাখ ডলারের পাটের সুতা, ৯ কোটি ১৮ লাখ ডলারের চট ও বস্তা রফতানি হয়েছে। পাটের সুতা রফতানিতে ৪২ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং চট ও বস্তায় ৫৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে বিগত অর্থবছরের তুলনায় কাঁচা পাটের রফতানি কমেছে ৪ শতাংশ। এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ ৮ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের ওষুধ রফতানি করেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি। এই সময় ওষুধ রফতানি ছিল ৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে। গত ২০১৯-২০২০ বছরের প্রথম ছয় মাসে ৭ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের ওষুধ রফতানি করেছিল বাংলাদেশ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চামড়া

১৩ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ