পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় আড়াই বছর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে এক মার্কিন নাগরিকের লাশ। ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী ওই ব্যক্তির নাম রবার্ট মাইরন বার্কার। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী এই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে জানা গেছে। তবে পাসপোর্টে তিনি ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের একটি ঠিকানা দিয়েছেন। এতো দিন থেকে লাশটি মর্গে পরে থাকলেও এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে তার পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানোর কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়া এ ব্যাপারে পুলিশও কোনো মন্তব্য করছে নারাজ।
জানা যায়, শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ২০১৮ সালের ১৫ মে দক্ষিণখানের কেসি হাসপাতালে ভর্তি হন রবার্ট। ১০ দিন চিকিৎসাধীন থানার পর তিনি মারা যান। সেই সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বিদেশি নাগরিক হওয়ায় তার লাশ এই দেশে সৎকার করা যাচ্ছিল না। এজন্য দূতাবাসের ছাড়পত্র প্রয়োজন, কিন্তু সেটাও পাওয়া যায়নি। তাছাড়া হাসপাতালের বিল দিতে না পারায় লাশ ছাড়িয়ে আনতে ঝামেলা পোহাতে হয় দক্ষিণখান থানা এলাকার বাসিন্দা এবং বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী মাজেদা খাতুনকে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠায়। এছাড়া লাশটি যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে দক্ষিণখান থানায় সাধারণ ডায়রিও করা হয়। এরপর চলে গেছে আড়াই বছর। কিন্তু এখনো ঢামেকের মর্গে পড়ে আছে রবার্টের লাশ।
মাজেদা খাতুন নিজেকে রবার্টের স্ত্রী দাবি করে বলেন, তার স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি তার লাশ যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠাতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে বারবার চেষ্টা করলেও কোন সাড়া পাননি। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা রবার্টের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান তিনি।
ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, লাশটি যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর বিষয়ে থানায় লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। কারণ দূতাবাসে লাশ হস্তান্তর পুলিশের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সহায়তা দেয় বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, পাসপোর্ট অনুযায়ী রবার্টের জন্ম ২৪ জুলাই ১৯৩৯। ধর্ম খ্রিস্টান। পাসপোর্ট নম্বর- ৪৫২০৮৬০৮৮। ঠিকানা ইন্ডিয়ানা, ইউএসএ। ভিসার বিবরণ অনুযায়ী, রবার্ট আনপেইড বা অবনৈতিক র্কমর্কতা।
এদিকে, তার স্ত্রী মাজেদা জানান, তিনি উত্তরা কমিউনিটি হাসপাতালে আয়া পদে চাকরি করতেন। প্রায় ১১ বছর আগে ওই হাসপাতালে রোগী হিসেবে আসনে রবার্ট। তাকে দেখাশোনা করার মতো কেউ না থাকায় আয়া মাজেদা তার সেবা করেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম হয় এবং ববার্টের সঙ্গে ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল খ্রিষ্টান ধর্মমতে রাজধানী বাড্ডার একটি চার্চে গিয়ে বিয়ে হয়।
কাবিননামা অনুযায়ী, মাজেদার বাবার নাম জয়নাল আবেদীন। রবার্টের ঘরে মাজেদার কোনো সন্তান নেই। তবে আগের ঘরে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তারা দক্ষিণখানের ৭৩৯/২ চালাবন (মাটির মসজিদ) এলাকায় অ্যাডভোকেট মুকুল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। রবার্ট কোন সংস্থায় কাজ করতেন জানাতে পারননি মাজেদা।
মাজেদা বলেন, রবার্ট গরিব উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করতেন। আমেরিকা থেকে টাকা আসত। তিনি ওই টাকা গরিব মানুষকে দিতেন। আমাকে হাত খরচের জন্য মাসে দুই তিন হাজার টাকা করে দিতেন।
গতকাল দক্ষিণখান থানার ওসি শিকদার মো. শামীম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ২০১৮ সালে যখন লাশটি উদ্ধার করা হয়, তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। সেই সময় ওই থানার ওসি ছিলেন তপন চন্দ্র সাহা। তিনি বর্তমানে ডিবির রমনা বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন। পরে তপন চন্দ্র সাহার সাথে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে তিনি গণমাধ্যমে বলেছিলেন, রবার্ট মারা যাওয়ার পর আমরা থানায় একটি জিডি করি। সুরতাহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্ত করা হয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় এই দেশে তার লাশ সৎকার করা সম্ভব নয়। তাছাড়া দূতাবাসেরও ছাড়পত্র প্রয়োজন। সেগুলো পাওয়া যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।