Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বছরের শুরুতেই নানামুখী চাপে রাজশাহীর মানুষ

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১১:৩৯ এএম

চাল তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার পর বছরের শুরুতেই এবার এলপিজি ও অটোরিক্সার ভাড়া বাড়তি চাপে ফেলেছে রাজশাহীর মানুষকে। করোনাকালীন অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে এসবের মূল্যবৃদ্ধি মরার উপর খাড়ার ঘায়ের শামিল।

ধানের ভর মওসুমে হঠাৎ চালের বাজার চড়া হওয়া, ভোজ্য তেল বিশেষ করে সোয়াবিন তেলের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়া। শাকস্বব্জির ভর মওসুমে উৎপাদক তার উৎপাদিত পন্যের নায্য দাম না পেলেও ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে বেশী দাম দিয়ে। অন্য বছর গুলোয় শীতের এ সময় চাল থেকে শাকস্ব্িজর দাম কম থাকে। কিন্তু এবারের চিত্র উল্টো। বাজারে বড় আকারের ফুলকপি কুড়ি পচিশ টাকা হলেও উৎপাদক পাচ্ছে চার পাঁচ টাকা। নতুন আলু বাজারে এসেছে। তবে দাম কেজিপ্রতি চল্লিশের নীচে নেই। দাম পাবার আশায় আগাম লাগানো মুড়ি পেয়াজ বাজারে চল্লিশ পঞ্চাশ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও ভারতীয় পেয়াজ আসার পর নেমেছে ত্রিশ পচিশে। আমদানী বাড়লে দাম আরো পড়বে এমন শংকা আবাদকারীদের। তাদের লাভের স্বপ্ন ফিকে হচ্ছে। মুলা এখন মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। দাম না পাওয়া বাগমারা হাটে কৃষক তা ফেলে গেছে। কারন ফিরিয়ে নেবার ভাড়াটাও হবে লোকশান। রাজশাহী অঞ্চল ধান শাকস্বব্জি উৎপাদনে উদ্বৃত্ত হলেও সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় আবাদকারীরা তাদের উৎপাদিত পন্যের নায্য দাম পায়না। লাভের গুড় পিঁপড়েয় খায়। আর কৃষকের ঋনের বোঝা হয় ভারী । উৎপাদকদের কষ্ট লাঘবে প্রনোদনা নামক শব্দটি বেশ প্রচলিত। কিন্তু প্রান্তিক চাষীর কাছে তা অধরা। অবশ্য প্রান্তিক চাষীরা এখন ওসব নিয়ে আর ভাবেনা।

মানুষ যখন চাল তেল জোগাড় করতে হিমসীম খাচ্ছে তখন বছরের শুরুতেই হঠাৎ করে বাড়ানো হলো এলপিজি সিলিন্ডারের দাম। তাও আবার বিশ পঞ্চাশ নয় একেবারে সিলিন্ডার প্রতি এক দেড়শো টাকা। কোন নিয়ন্ত্রন নেই যে যেমন ভাবে পারছে ক্রেতার গলা কাটছে। এমনিতে রাজশাহীতে মাটির নীচে গ্যাস লাইন থাকলেও সবার ভাগ্যে তা জোটেনি। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে হাজার দশেক গ্রাহক সংযোগের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে প্রায় বছর দশক ধরে। বেড়েছে জ্বালানী খড়ির দাম।
গণমাধ্যকারী রেজাউল মহিম তপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বছরের শুরুতেই নববর্ষের উপহার হিসাবে ১ জানুয়ারী হতে বাড়লো নগরীতে চলাচলের অন্যতম বাহন অটোরিক্সার ভাড়া। এর পরদিন ২ জানুয়ারী হতে বাড়লো সিলিন্ডার গ্যাসের দাম। একলাফে দেড় দুশো টাকা মেনে নেয়া যায়না। কদিন আগেও এক সিলিন্ডার গ্যাস মিলেছে সাড়ে সাতশো টাকায়। এখন দাম দিতে হচ্ছে সাড়ে নয়শো থেকে এগারোশো। আবার কোম্পানী ভেদে দামের তারতম্য রয়েছে। দাম বৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে বাকবিতন্ডা হচ্ছে। বিক্রেতার কথা কোম্পানী দাম বাড়িয়েছে। আমরা তাই বেশী দামে বিক্রি করছি। কোম্পানী বাড়িয়েছে আর্ন্তজাতিক হাজারে দাম বাড়ার কথা জানিয়ে বেশী দামের কথা বলেছে। গত শনিবার থেকে বেশী দামে গ্যাস বিক্রি হচ্ছে। পাড়া মহল্লায় গড়ে ওঠা সিলিন্ডার বিক্রিকারীরা বলছে হঠাৎ দাম বাড়ায় ক্ষোভের অন্তনেই ক্রেতাদের।
এ অবস্থার মধ্যে বছরের প্রথম দিন থেকে বাড়ানো হয়েছে চলাচলের অন্যতম মাধ্যম অটোরিক্সা ভাড়া। এনিয়ে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা আর অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে। চালক ও যাত্রীদের মধ্যে হাতাহাতি মারামারির ঘটনাও ঘটছে। অটোরিক্সার সামনে নতুন ভাড়ার তালিকা সেঁটে দিয়ে নতুন ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এখানে অটোরিক্সা চলাচলের লাইসেন্স দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। সেই কর্পোরেশনও জানেনা ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টা।

অটোরিক্সা মালিক শ্রমিক সমবায় সমিতির নামে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তারা বলছে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টা আগে স্বারকলিপির মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন, এমপি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ বলছে স্বারকলিপি দেয়া হলেও তাদের ভাড়া বাড়ানোর বিষয় কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি তারা বেশী ভাড়া নিয়ে অটোরিক্সায় তা অবৈধ। অটোচালকরা বলছেন সব কিছুর দাম বেড়েছে আমাদের ভাড়াও বেড়েছে। এতে দোষের কি। সব কিছুর মূল্যবৃদ্ধিতে চিড়ে চ্যাপ্টা নি¤œআয়ের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন সব দোষ যেন আমাদের........।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাপ

২২ অক্টোবর, ২০২২
৫ অক্টোবর, ২০২২
৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ