Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইঁদুর ধরাকেই পেশা হিসাবে বেছে নিচ্ছেন বেকার কম্বোডিয়ানরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ৬:৩৩ পিএম | আপডেট : ৬:৩৫ পিএম, ৪ জানুয়ারি, ২০২১

ইঁদুর ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন দক্ষিণ কম্বোডিয়ার টাকেসো গ্রামের বেকার যুবক পেন কিও। ধানের জমিতে সারাদিন ঘুরে ঘুরে ফাঁদ পাতেন তিনি। পরে ধরা পড়া ইঁদুর সংগ্রহ করে বিক্রি করেন প্রতিবেশী ভিয়েতনামে। ধানের ডাঁটা এবং শিকড় খেয়ে পুষ্ট ইঁদুরগুলো সেখানে একটি সুস্বাদু খাবার হিসাবে গণ্য হয়। এতে শস্যও বাঁচে আবার আয়ও হয়। তবে ইদানিং আরও অনেকেই এই কাজে যুক্ত হয়েছেন। ফলে সেখানকার জমিগুলোতে এত বেশি ফাঁদ পাতা থাকে যে, তার জন্য জায়গা খুঁজে পাওয়া শক্ত।

কম্বোডিয়ানদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য বেকারত্বের সমস্যা প্রকট। অনেকের জন্যই সেখানে ইঁদুর ধরা একটি পুরো সময়ের কাজ। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দেশটির অর্থনীতি আরও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ও বেকারত্বের সমস্যা বেড়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, কম্বোডিয়ায় শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৯০ লাখ। তাদের মধ্যে ২০২০ সালেই প্রায় ৫ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অনেকেই শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে চলে গেছেন, কিন্তু সেখানেও কাজ খুব কমই রয়েছে। অ্যাংগর রিসার্চ অ্যান্ড কনসাল্টিং অ্যান্ড ফিউচার ফোরাম নামের একটি স্থানীয় গবেষণা সংস্থা জানায়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে কৃষকদের মজুরি এক তৃতীয়াংশ কমে গেছে। পেন কিও জানিয়েছে যে, তিনি এখন তার জমির ফসল থেকে যথেষ্ট উপার্জন করতে পারেন না। কারণ চাল খুব সস্তা। অনেক বেকার কম্বোডিয়ানদের মতো, তিনিও লাঙ্গল ছেড়ে ইঁদুরের ফাঁদ পাতা শুরু করেছেন। তবে সেটিও এখন আর আগের মতো লাভজনক নেই।

একদিনে খুব বেশি হলে পেন কিও ১৩০টির মতো ইঁদুর ধরতে পারেন যার ওজন প্রায় ১৫ কেজি। তবে সেগুলো বিক্রি করে আগে যেখানে তিনি কেজি প্রতি প্রায় ১৩০ টাকা পেতেন এখন পান তার দুই-তৃতীয়াংশ। সরবরাহের চেইনে পাশাপাশি দামের হ্রাসও আরও অনুভূত হচ্ছে। একই জেলার আরেক গ্রাম বোরেই চোলসার কৃষক টন এই পেশায় প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার টাকা উপার্জন করেন যা আগের তুলনায় অর্ধেক। তিনি জানান, তার গ্রামের এক তৃতীয়াংশ লোকই এখন ইঁদুর ধরার পেশায় যোগ দিয়েছেন।

এমনকি কম্বোডিয়ান ইঁদুর সরবরাহ বাড়ার সাথে সাথে ভিয়েতনামের চাহিদাও কমে গিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে, মার্চ থেকে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, ইঁদুরগুলো বাজারে বিক্রি করা কঠিন হয়ে যায়। ভিয়েতনামের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে অর্থ প্রদান করে ও কারাভোগের ঝুঁকি নিয়ে দালালরা নদী পার হয়ে ইঁদুর পাচার করা শুরু করে। আবার মহামারীর ভয়েও ভিয়েতনামিরা ইঁদুর খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। তাদের ভয় অযৌক্তিক নয়। দক্ষিণ ভিয়েতনামে কয়েক বছর আগে পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, রেস্তোঁরাগুলোতে পরিবেশন করা ইঁদুরগুলোর মধ্যে ৫ শতাংশই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণ কম্বোডিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ