Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অধিদফতরের অনিয়ম ও দুর্নীতিতে বনভূমি কমছে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

বন উদ্বেগজনকভাবে হ্রাস পাওয়ার পেছনে বনকেন্দ্রিক অনিয়ম ও দুর্নীতির ভূমিকাই প্রধান কারণ। দেশের বন ও জীববৈচিত্র সুরক্ষা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব বন অধিদফতরের ওপর ন্যস্ত। অথচ বনভূমি দখল ও ধ্বংস হলেও তারা নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল প্রকাশিত ‘বন অধিদফতর : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষনাপত্রে এসব কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি। বন অধিদফতরের আইনি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করাই গবেষণার উদ্দেশ্য বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে। এছাড়াও বন অধিদফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকান্ডের অনিয়ম ও দুর্নীতির ধরন, মাত্রা ও কারণ চিহ্নিত করা গবেষণার লক্ষ্য। দুর্নীতি বিরোধী ও সুশাসের জন্য কাজ করে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বন আইনের আম‚ল সংস্কার করে যুগোপযোগী করতে হবে। সেই সাথে বন অধিদফতরও বনকেন্দ্রিক অনিয়ম-দুর্নীতি এবং বিভাগীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রæত শাস্তি প্রদানের নজির স্থাপন করার সুপারিশ করেছে টিআইবি। টিআইবির গবেষণায় বলা হয়, সরকারি বনভ‚মি অবৈধ দখল, সংরক্ষিত বনের পাশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ, বনভ‚মির জমি বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ ও ব্যবহারসহ বনের স্থায়ী ক্ষতিরোধে বন অধিদফতর নিষ্ক্রিয় ভ‚মিকা পালন করছে।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচ এর তথ্য মতে, ২০০১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশে মোট ৪ লাখ ৩২ হাজার ২৫০ একর এলাকার বৃক্ষ আচ্ছাদন হ্রাস পেয়েছে যা মোট বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকার প্রায় ৯ শতাংশ। বনের জমিতে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নম‚লক কাজ বাস্তবায়ন ও স্থাপনা নির্মাণের ফলে বন সংকোচন অব্যাহত রয়েছে। বন উদ্বেগজনকভাবে হ্রাস পাওয়ার পেছনে বনকেন্দ্রিক অনিয়ম ও দুর্নীতির ভ‚মিকাই প্রধান কারণ।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, বন আইনের প্রয়োজনীয় বিধিমালা, সম্পূরক আইন ও কর্মপরিকল্পনার অনুপস্থিতিসহ ৯৩ বছরের পুরনো আইনটি আমূল সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযুগী করার উদ্যোগ অনুপস্থিত। বন নির্ভর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথাগত ভূমি অধিকার হরণ, বন আইন লঙ্ঘন করে ও একতরফাভাবে সংরক্ষিত বন, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যান ঘোষণাসহ জবরদখল উচ্ছেদের নামে অধিদফতরের বৈষম্যমূলকভাবে ক্ষমতা চর্চা। অধিদফতর সনাতন পদ্ধতিতে বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব ও আয়-বর্ধক কর্মকান্ডের সম্প্রসারণসহ সামাজিক বনায়নের আড়ালে ‘আগ্রাসী’ প্রজাতির গাছের বনায়ন দ্বারা প্রাকৃতিক বন উজাড় ত্বরান্বিত হচ্ছে। বন অধিদফতরের কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রাধিকারমূলক বরাদ্দ, অবকাঠামো ও লজিস্টিকসের ঘাটতি, আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারিত না হওয়া এবং এসব ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কার্যকর উদ্যোগের অনুপস্থিতি। অধিদফতরের কর্মকান্ডসহ রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্য অর্জন, বন সংরক্ষণ ও বনায়ন কর্মকান্ডকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির বিস্তার এবং তা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি। এবং সকল স্তরের কর্মকান্ড কার্যকর তদারকি ও পরিবীক্ষণের ঘাটতিসহ পারফরমেন্স অডিট অনুপস্থিত ও দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকরণ ইত্যাদি
এই গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল ও তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে বন অধিদফতরের কার্যক্রমে সুশাসনের চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তরণে টিআইবি ১৫ দফা সুপারিশমালা দিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্নীতি

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ