Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনায় আসছে নতুন আইন

এজেন্সি অনিয়ম করলে নিবন্ধন বাতিল ও আর্থিক জরিমানা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

সুষ্ঠুভাবে হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা করতে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। আইনটি পাস হলে কোনো হজ ও ওমরাহ এজেন্সি অনিয়ম করলে নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি আর্থিক জরিমানার মুখে পড়বে। এজেন্সিগুলো সউদী আরব গিয়ে অপরাধ করলেও বাংলাদেশে সেই অপরাধের বিচার করা হবে।

একই সঙ্গে মোংলা বন্দরের স্থাপনা ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়ার বিধান রেখে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা আইন ২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এতদিন হজ ব্যবস্থাপনা চলত একটা নীতিমালার মাধ্যমে। নীতিমালার মাধ্যমে চলার কারণে অনেক সময় ব্যবস্থা নিতে অসুবিধা হত। ব্যবস্থা নিলে সংশ্লিষ্টরা আবার হাই কোর্টে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসত। ২০১১ সাল থেকে সউদী আরব হজ ব্যবস্থপনাকে পরিবর্তন করে ফেলেছে। পাকিস্তান, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া আইন করে ফেলেছে। হজ ব্যবস্থাপনার সাথে আমাদের ইকুইপ্ট করতে গেলে একটা আইনি কাঠামোর প্রয়োজন। ২০১২ সালে মন্ত্রিসভার নির্দেশনা ছিল নীতিমালার পরিবর্তে আইন করার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন আইনে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়িত্ব সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে। সরকার হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সউদী সরকারের সাথে চুক্তি ও সমঝোতার ভিত্তিতে সে দেশের যে কোনো স্থানে হজ অফিস স্থাপনসহ সার্বিক কার্যক্রম নিতে পারবে। আইনের অধীনে নিবন্ধন ছাড়া কাউকে ওমরা বা হজে কেউ পাঠাতে পারবে না। যদি কেউ এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম করে, তাহলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত তদন্ত ও শুনানির সুযোগ দিয়ে হজ ও ওমরা এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। হজের চুক্তি এখানে হওয়ার পরে কেউ সউদীতে গিয়ে ঠকালে তবে ওই অপরাধ এই দেশে (বাংলাদেশে) হয়েছে বলে গণ্য করে এই আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে। তিনি বলেন, এছাড়া হজ ও ওমরা এজেন্সিগুলো অনিয়ম করলে তাদের নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি জরিমানা করা হবে। নতুন আইনে হজ এজেন্সিগুলো অনিয়ম করলে তাদের নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আর ওমরা এজেন্সি অনিয়ম করলে তারা নিবন্ধন খোয়ানোর সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়বে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অনিয়মের জন্য পর পর দুই বছর ওয়ার্নিং দেওয়া হলে দুই বছরের জন্য লাইসেন্স বাতিল হবে। হজ এজেন্সিগুলো স্বত্ত্ব পরিবর্তন করতে চাইলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। দৈব দুর্বিপাক, মৃত্যু, দুর্ঘটনা, হজযাত্রীদের আকস্মিক প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী সরকার আপদকালীন তহবিল গঠন করবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৮ সালের পার্লামেন্ট হওয়ার আগে পর্যন্ত যে আইনগুলো ছিল সেগুলো বাতিল করার একটা সিদ্ধান্ত ছিল হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে। এ জন্য মোংলা পোর্ট অথরিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬ এর পরিবর্তে এই নতুন আইন নিয়ে আসা হয়েছে। এটা অনেকটা পায়রা বন্দর আইনের মতো। এখানে কতগুলো জিনিস অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেটা হলো প্রয়োজনে দেশের যেকোনো স্থানে কর্তৃপক্ষের কার্যালয় স্থাপনের বিধান রাখা হয়েছে আইনে। কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। বন্দরের বিভিন্ন এলাকা ও স্থানকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা যাবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বন্দরে পণ্যবোঝাই সংরক্ষণ, খালাস ও সরবরাহের জন্য প্রয়োজনে প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে অপারেট নিয়োগের বিধান সংযোজন করা হয়েছে। বন্দরের কোনো স্থাপনা ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিধি দিয়ে নির্ধারিত মেয়াদ, শর্ত ও পদ্ধতিতে অনুমতি দেয়ার বিধান সন্নিবেশ করা হয়েছে। আগের আইনে এটা ছিল না।

তিনি বলেন, টোল, রেট ইত্যাদি ফাঁকির জন্য দন্ড, কোম্পানির অপরাধ সংগঠন, ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ- এগুলো রাখা হয়েছে। এখানে যে অপরাধ হবে সেগুলো ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিচার হবে। মোবাইল কোর্টেরও প্রভিশন রাখা হয়েছে। আগের আইনে কিছু কিছু ধারা ছিল সেগুলো এখন আর প্রযোজ্য নেই, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • ইব্রাহিম ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:০১ এএম says : 0
    কঠোর হলে এই সেক্টরে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে
    Total Reply(0) Reply
  • তুষার ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:০২ এএম says : 0
    দৈব দুর্বিপাক, মৃত্যু, দুর্ঘটনা, হজযাত্রীদের আকস্মিক প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী সরকার আপদকালীন তহবিল গঠন করবে। ---এটা খুবই ভালো উদ্যোগ
    Total Reply(0) Reply
  • পান্নু ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:০২ এএম says : 0
    আইন করলেই হবে না তার বাস্তবায়ন হওয়া লাগবে
    Total Reply(0) Reply
  • আরমান ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:০৪ এএম says : 0
    হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনায় যাতে কোন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফুল ইসলাম ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:০৪ এএম says : 0
    নতুন নয় কঠোর আইন দরকার।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হজ ও ওমরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ