পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সুপারিশে ট্রেনে কনটেইনার পরিবহন ভাড়া কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের অনুমোদনের পর তা পাঠানো হবে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে ভারত থেকে দুই রুটে পণ্য আমদানির জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। এর একটি হলো দর্শনা-গেদে রুট, অন্যটি বেনাপোল- পেট্রাপোল রুট। এর মধ্যে গত ২৪ জুলাই বেনাপোল রুটে ৫০ কনটেইনার পণ্য আমদানি করা হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন আমদানিকারকের এসব কনটেইনারে ৬৪০ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে আসে। এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে চলাচলকারী প্রথম কার্গো ট্রেন। যদিও এর আগে করোনা মহামারির মধ্যে প্রথম পার্সেল ট্রেনে এসেছিল ৩৮৪ টন শুকনো মরিচ। এছাড়া অন্যান্য ট্রেনে পেঁয়াজসহ খাদ্যসামগ্রী আসছে সাধারণ মালবাহী ট্রেনে।
সূত্র জানায়, ভারত থেকে পণ্যবাহী ওয়াগান আসলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পণ্যবাহী কনটেইনারপ্রতি ভাড়া পেতো ৬ হাজার ৪৪০ টাকা। আর খালি কনটেইনার ফিরে যাওয়ার সময় রেল কর্তৃপক্ষ পায় কনটেইনারপ্রতি ৪ হাজার ৫৭৫ টাকা। বাংলাদেশ রেলওয়ের করা নতুন প্রস্তাবে এ ভাড়া প্রায় অর্ধেকে নামানো হয়েছে। নতুন প্রস্তাবে বেনাপোল পর্যন্ত পণ্যবাহী কনটেইনারপ্রতি ভাড়া ধরা হয়েছে তিন হাজার ৩৬৫ টাকা ও খালি কনটেইনারের এক হাজার ৬৮৫ টাকা। এতে করে কনটেইনার পরিবহনে রেলওয়ের আয় অনেকটাই কমে যাবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কনটেইনার ট্রেন চলাচলের জন্য দর্শনা বর্ডার ও বেনাপোল ইন্টারচেঞ্জ হতে ঢাকা আইসিডি এবং বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনের জন্য কনটেইনার ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। কনটেইনারবাহী ভারতীয় একটি ফ্ল্যাট ওয়াগন বাংলাদেশে অবস্থানকালে প্রতিটি ওয়াগন ৮৩০ টাকা হারে প্রতিদিন ওয়াগন হায়ার চার্জ বাংলাদেশ রেলওয়েকে ভারতীয় রেলওয়েকে পরিশোধ করতে হবে। আন্তঃদেশীয় কনটেইনার এক্সপ্রেসের বাংলাদেশে গড় অবস্থানকাল সাত দিন ধরে হায়ার চার্জসহ দূরত্বে আনুপাতিকহারে প্রতি ইউনিট কনটেইনারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এতে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রেলযোগে পরিবাহিতব্য কনটেইনারের ভাড়ার ক্ষেত্রে হলেজ (মালবহন) চার্জ বেশি ধার্য করা হয়েছে। তাই কনটেইনার করপোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড হলেজ চার্জ কমানোর জন্য অনুরোধ করে। এছাড়া ব্যবসায়ীরা হলেজ চার্জ কমানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। পাশাপাশি কনটেইনার পরিবাহিতব্য ওয়াগনের হায়ার চার্জ বাদ দেয়ার জন্য এর আগে কনটেইনার করপোরেশন অব বাংলাদেশ লিমিটেডের কনটেইনার করপোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে হলেজ চার্জ কমিয়ে কনটেইনার ভাড়া নির্ধারণ করা হলে ওয়াগন হায়ার চার্জ পরিত্যাগের বিষয়ে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে মর্মে উল্লেখ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ রেলওয়ে ইউনিটপ্রতি কনটেইনার ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করেছে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, দর্শনা-গেদে রুটে কনটেইনারবাহী ট্রেনে দর্শনা পর্যন্ত প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারের (২০ টন পণ্য) ভাড়া হবে তিন হাজার ৩৬৫ টাকা, ৩০ টন পণ্যে হবে ৪ হাজার ২১০ টাকা আর খালি কনটেইনার ভাড়া এক হাজার ৬৮৫ টাকা। তবে কনটেইনার ট্রেন ঈশ্বরদী পর্যন্ত গেলে প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারের (২০ টন পণ্য) ভাড়া হবে ৮ হাজার ৬১৫ টাকা, ৩০ টন পণ্যে হবে ১০ হাজার ৭৭০ টাকা আর খালি কনটেইনার ভাড়া চার হাজার ৩১০ টাকা।
একইভাবে কনটেইনার ট্রেন যশোর পর্যন্ত গেলে প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারের (২০ টন পণ্য) ভাড়া হবে ৫ হাজার ২৫০ টাকা, ৩০ টন পণ্যে হবে ৬ হাজার ৫৬৫ টাকা আর খালি কনটেইনার ভাড়া দুই হাজার ৬২৫ টাকা। আর কনটেইনার ট্রেন খুলনা পর্যন্ত গেলে প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারের (২০ টন পণ্য) ভাড়া হবে ৯ হাজার ১৫ টাকা, ৩০ টন পণ্যে হবে ১১ হাজার ২৭৫ টাকা আর খালি কনটেইনার ভাড়া ৪ হাজার ৫১০ টাকা। এছাড়া দর্শনা রুটের কনটেইনার ট্রেন আরও চার স্টেশনে (দাশুড়িয়া, মুলাডুলি, নোয়াপাড়া ও সিঙ্গিয়া) যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এগুলোর ক্ষেত্রে ভাড়ার হারও ভিন্ন ভিন্ন হবে।
এদিকে বেনাপোল-পেট্রোপোল রুটে কনটেইনারবাহী ট্রেনে বেনাপোল/যশোর পর্যন্ত প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারের (২০ টন পণ্য) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার ৩৬৫ টাকা, ৩০ টন পণ্যে হবে চার হাজার ২১০ টাকা আর খালি কনটেইনার ভাড়া এক হাজার ৬৮৫ টাকা। তবে কনটেইনার ট্রেন ঈশ্বরদী পর্যন্ত গেলে প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারের (২০ টন পণ্য) ভাড়া হবে ১৫ হাজার ৩৪০ টাকা, ৩০ টন পণ্যে হবে ১৯ হাজার ১৮৫ টাকা আর খালি কনটেইনার ভাড়া সাত হাজার ৬৭০ টাকা।
একইভাবে বেনাপোল-পেট্রোপোল রুটের কনটেইনার ট্রেন খুলনা পর্যন্ত গেলে প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারের (২০ টন পণ্য) ভাড়া হবে ৬ হাজার ৫৫০ টাকা, ৩০ টন পণ্যে হবে ৮ হাজার ১৬৫ টাকা আর খালি কনটেইনার ভাড়া ৩ হাজার ২৭৫ টাকা। আর কনটেইনার ট্রেন ঢাকা আইসিডি পর্যন্ত গেলে প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারের (২০ টন পণ্য) ভাড়া হবে ২৭ হাজার ৯৫৫ টাকা, ৩০ টন পণ্যে হবে ৩৬ হাজার ৬৭০ টাকা আর খালি কনটেইনার ভাড়া ১৩ হাজার ৯৮০ টাকা। এছাড়া বেনাপোল রুটের কনটেইনার ট্রেন আরও সাতটি স্টেশনে (দাশুড়িয়া, মুলাডুলি, নোয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম, সিরাজগঞ্জ বাজার ও উল্লাপাড়া) যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এগুলোর ক্ষেত্রে ভাড়ার হারও ভিন্ন ভিন্ন হবে।
উল্লেখ্য, ভারত থেকে বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে আমদানির পরিমাণ প্রায় ৬ বিলিয়ন (৬০০ কোটি) ডলার। তবে এ বাণিজ্যের পুরোটাই সড়কপথ নির্ভর। মাঝেমধ্যে ট্রেনে পণ্য আমদানি হলেও তার পরিমাণ খুবই কম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।