Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কতটা ভয়ংকর নতুন ধরনের করোনাভাইরাস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:০০ পিএম

নতুন ধরণের করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আর এক বিশ্বের বিভিন্ন ফ্লাইটসহ সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। অনেক দেশ ইতোমধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

যুক্তরাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস। এ কারণে দেশটিতে শুরু হয়েছে লকডাউন। যোগাযোগ বন্ধ করেছে বেশ কয়েকটি দেশ, একই প্রক্রিয়ায় আছে অনেকে।

যখন করোনার প্রতিষেধক দেওয়া পুরোদমে চলছে, তখনই লন্ডন-সহ দক্ষিণ ইংল্যান্ডে অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে নতুন ধরনের এ ভাইরাস।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, নতুন ধরনের করোনাভাইরাস আগের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি গতিতে ছড়ায়। তবে এ ভাইরাস আরও মারাত্মক কি-না, তার জন্য আরও প্রবল অসুস্থতা হচ্ছে কি-না, তা এখনো জানা যায়নি।

ধারণা করা হচ্ছে, ভাইরাসের এই স্ট্রেইনটি যুক্তরাজ্যেই কোন একজন রোগীর দেহে আর্বিভূত হয়েছে কিংবা এমন একটি দেশ থেকে এসেছে যেখানে ভাইরাসটিকে পর্যবেক্ষণ করার মতো তেমন কোন ব্যবস্থা নেই।

এটি যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে, শুধু উত্তর আয়ারল্যান্ড ছাড়া। কিন্তু এটি মূলত রাজধানী লন্ডন এবং দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব ইংল্যান্ডেই সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। অন্য এলাকাগুলোতে খুব বেশি পাওয়া যাচ্ছে না।

ভাইরাসটির জেনেটিক কোড নিয়ে কাজ করা নেক্সটস্ট্রেইন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য বলছে, ডেনমার্ক এবং অস্ট্রেলিয়াতে যে ভাইরাসের স্ট্রেইনটি পাওয়া গেছে তা যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে। নেদারল্যান্ডেও নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।

গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)-কে এই ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে যুক্তরাজ্য বলেছিল, তা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। লন্ডনের নতুন যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ৬০ শতাংশই নতুন ভাইরাসের কবলে পড়েছেন। জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, রবিবার এই ভাইরাসে এক হাজার ১০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এমনও বলা হচ্ছে, এই ভাইরাস প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকায় দেখা গিয়েছিল।

এই ভাইরাসকে আটকাতে জনসন ঘোষণা করেছেন, লন্ডন এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত লকডাউন থাকবে। গত শনিবার জনসন বলেছেন, “যত দিন যাচ্ছে, ততই এই ভাইরাস সম্পর্কে আমরা বেশি করে জানছি। ভাইরাস যদি চরিত্র বদল করে আক্রমণ করে, তবে আমাদেরও আত্মরক্ষার চরিত্র বদল করতে হবে।”

মূলত তিনটি কারণে করোনাভাইরাসের নতুন এই ভ্যারিয়ান্টটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। পএটি ভাইরাসের অন্য সংস্করণগুলোকে প্রতিস্থাপিত করছে, বিভাজন বা রূপান্তর ভাইরাসের কিছু অংশে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনে এবং বিভাজনের মধ্যে বেশ কিছু ল্যাবে পরীক্ষার পর দেখা গেছে— এগুলো মানুষের দেহের কোষকে সংক্রমিত করার ভাইরাসের যে সক্ষমতা তা বাড়ায়।

ভাইরাসের চরিত্র বদল করা নতুন নয়। করোনাভাইরাসেরও বিভিন্ন প্রজাতি আছে। তবে এখনো পর্যন্ত সেই প্রজাতিগুলোর মধ্যে আর বেশি ক্ষতিকারক কিছু দেখা যায়নি। কিন্তু নতুন ভাইরাসের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তা আগের তুলনায় অনেক বেশি ছোঁয়াচে এবং ভয়ংকর দ্রুত ছড়াচ্ছে।

গত মাসে লাখ লাখ মিংক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। আবার স্পেনে একটি নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়, যা ইউরোপের নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু দুটি ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ওই ভাইরাস মূল করোনা ভাইরাসের থেকে মারাত্মক নয়। কিন্তু যুক্তরাজ্যে যে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে, তা আগের থেকে অনেক দ্রুত ছড়াচ্ছে। তবে এই ভাইরাসে মানুষের অসুস্থতা আরও জটিল চেহারা নিচ্ছে কি-না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা এমনিতেই মারাত্মক। ফলে করোনা হলে তাতে জীবনের ঝুঁকি থাকে। সে জন্যই দ্রুত করোনা ছড়ালে তা আরও মারাত্মক হয়ে উঠতে বাধ্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ