নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গোটা টুর্নামেন্টে ফিফটি নেই একটিও, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো একজন ব্যাটসম্যানের জন্য বড্ড বিব্রতকর এক পরিসংখ্যান। অবশেষে ফাইনালে হাসল তার ব্যাট। শুরুর বিপর্যয় আর মাঝের মন্থরতা ঠেলে অধিনায়কের দুর্দান্ত ইনিংসেই বোলারদের লড়াই করার পুঁজি দিতে পারল খুলনা।
গতকাল রাতে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে জেমকন খুলনার ২০ ওভারে ৭ উইকেটে তোলে ১৫৫ রান। জবাবে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করেও ৬ উইকেটে ১৫০ রানে থেমে যেতে হয় মোহাম্মদ মিঠুনের চট্টগ্রামকে। ৫ রানের রোমাঞ্চকর জয়ে শিরোপা উল্লাসে মেতে উঠে মাহমুদউল্লাহ-মাশরাফি বিন মুর্তজার খুলনা।
রোমাঞ্চ টিকে ছিল শেষ ওভার পর্যন্ত। প্রথম দুই বলে শহিদুল দেন মাত্র ৩ রান। পরের দুই বলে ফিরিয়ে দেন মোসাদ্দেক ও সৈকতকে। ৪৫ বলে ৫৩ রান করে সৈকত আউট হওয়ার পরই একরকম শেষ হয়ে যায় চট্টগ্রামের নাটকীয় কিছু করার আশা। শেষ বলের ছক্কায় কিছু যায়-আসেনি।
সাকিবহীন খেই হারানো দলটির হয়ে মাহমুদউল্লাহ যখন উইকেটে যান, খুলনার রান তখন সপ্তম ওভারে ৩ উইকেটে ৪৩। সেখান থেকে দলকে টেনে শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ৪৮ বলে ৭০ রান করে। টি-টোয়েন্টিতে তার আগের সর্বোচ্চ ছিল অপরাজিত ৬৪। তার আগ্রাসনেই শেষ ৩ ওভারে ৩৫ রান তোলে খুলনা। চট্টগ্রামের হয়ে নাহিদুল ১৯ ও শরিফুল ৩৩ রানে ননে ২ উইকটে। মুস্তাফিজ ২৪ রানে পান ১ উইকেট। মোসাদ্দেকের শিকারও ১ উইকেট।
লো স্কোরিং ম্যাচ হলেও ফাইনাল হলো ফাইনালের মতোই। আর তাতে বার বার জয়ের খুব কাছে গিয়েও হতাশ হতে হয়েছে তরুণ্য নির্ভর দল চট্টগ্রামকে। টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ডে আট ম্যাচের মধ্যে সাতটিতে জয় পাওয়া দলটির কাছে প্লে-অফ পর্ব যেন হয়ে থাকল রহস্যে ঘেরা। প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচের পর ফাইনালেও খেই হারিয়ে শিরোপাও খোয়াল সেই খুলনার কাছেই।
নিয়মিত পার্ফরমার সৌম্য-লিটনদের ব্যর্থতার দিনে ঠিকই জ্বলে উঠেছিলেন সৈকত আলী। তবে তার লড়াকু অপরাজিত ফিফটিতেও হার এড়াতে পারেনি আসরের সবচেয়ে ধারাবাহিক দলটি, থামে কাটায় কাটায় ১৫০ রানে। শেষ বলটি ছক্কায় উড়ে গেল মাঠের বাইরে। ফিল্ডারদের সেদিকে ভ্রুক্ষেপও নেই। তাদের অপেক্ষা ছিল স্রেফ বলটি হওয়ার। জয় তো নিশ্চিত আগেই! বল যখন উড়ে চলেছে সীমানার দিকে, খুলনার ক্রিকেটাররাও তখন মাঠে ছুটে চলেছেন বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে।
মাহমুদউল্লাহ ছিলেন লং অফে। সেখান থেকে ছুটে গেলেন লাফাতে লাফাতে। একটু পরই তিনি নিজেকে আবিষ্কার করলেন ওপরে। সতীর্থরা বিজয় মিছিল করছেন তাকে কাঁধে তুলে নিয়ে! খুলনার জয়োল্লাসের মধ্যমণি মাহমুদউল্লাহ, ম্যাচের প্রেক্ষাপেট এর চেয়ে আদর্শ ছবি আর হয় না। অধিনায়কের ক্যারিয়ার সেরা অসাধারণ ইনিংসেই তো গড়া দলের জয়ের ভিত।
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের ক্রিকেটাররা তখন মাঠের আলোর ঝলকানি ছেড়ে বেছে নিয়েছেন ড্রেসিং রুমের আড়াল আশ্রয়। টুর্নামেন্ট জুড়ে তাদের ছিল সদর্প পদচারণা, কিন্তু ফাইনালে তাদের সঙ্গী হলো হার। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের চ্যাম্পিয়ন জেমকন খুলনা।
বিপিএলে নেতৃত্ব দিয়ে কখনোই শিরোপার স্বাদ পাননি মাহমুদউল্লাহ। খুলনার ফ্র্যাঞ্চাইজিও জেতেনি কখনও। এটা যদিও বিপিএল নয়, প্রাপ্তিযোগের সুযোগ তবুও ছিল। সামনে থেকেই পারফর্ম করে মাহমুদউল্লাহ নিশ্চিত করলেন নিজের ও দলের অর্জন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জেমকন খুলনা : ২০ ওভারে ১৫৫/৭ (জহুরুল ০,জাকির ২৫, ইমরুল ৮, আরিফুল ২১, মাহমুদউল্লাহ ৭০*, শুভাগত ১৫, শামিম ০, মাশরাফি ৫, শহিদুল ১*; নাহিদুল ২/১৯, শরিফুল ২/৩৩, রাকিবুল ০/১৯, মোসাদ্দেক ১/২০, মুস্তাফিজ ১/২৪, সৌম্য ০/৩৯)।
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম : ওভারে (লিটন ২৩, সৌম্য ১২ , মিঠুন ৭, সৈকত ৫৩, শামসুর ২৩, মোসাদ্দেক ১৯, নাহিদুল ৬, নাদিফ ১; মাশরাফি ০/৪০, শুভাগত ১/৮, আল-আমিন ১/১৯, হাসান ১/৩০, আরিফুল ০/১৮, শহিদুল ২/৩৩)।
ফল : জেমকন খুলনা ৫ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (খুলনা)।
টুর্নামেন্ট সেরা : মুস্তাফিজুর রহমান (চট্টগ্রাম)
সেরা ব্যাটসম্যান : লিটন দাস (চট্টগ্রাম)
সেরা বোলার : মুস্তাফিজুর রহমান (চট্টগ্রাম)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।