মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ভোট গ্রহণের পর্যায়টি গত মাসেই শেষ হয়েছে। কিন্তু গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সেই ভোটের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত জয়-পরাজয়ের আনুষ্ঠানিকতার এখনো অনেক বাকি। সোমবার এ আনুষ্ঠানিকতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি সম্পন্ন হবে। এদিন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বিজয়ী ইলেকটোরাল ভোটারদের স্লেটগুলো এক সঙ্গে বসে তাদের ভোট দেবে। আর এই ভোটের মধ্য দিয়েই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আগামী মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কে চ‚ড়ান্ত বিজয় পাচ্ছে, তা নিশ্চিত হবে।
সাধারণত মোট ভোটের হিসাবের মধ্য দিয়েই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন, সে বিষয়ে এক রকম নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যায়। কিন্তু এবার মোট ভোটের গণনার পর বিজয়ীর নাম জানা গেলেও তা নিয়ে কম নাটক হয়নি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছেন। শুধু তাই নয়, কোনো প্রমাণ হাজির করতে না পারলেও এ নিয়ে একের পর এক মামলা করেছেন তিনি। সর্বশেষ মার্কিন সুপ্রিম কোর্টকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আহবান জানিয়েছেন। জো বাইডেনের বিজয় নিশ্চিত হলেও নির্বাচনের এক মাস পরও ট্রাম্প পরাজয় স্বীকার করেননি। এমনকি ইলেকটোরাল কলেজের সভা পিছিয়ে দেওয়ার আহবানও জানিয়েছেন তিনি।
এ অবস্থায় সোমবার ৫০ অঙ্গরাজ্য ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার ইলেকটররা সভায় বসছেন ভোট দিতে। বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে আজ তাঁদের ভোটে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট ও কমলা হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হচ্ছেন।
সিএনএন জানায়, দিনটির দিকে তাকিয়ে ভোটের ফল বদলে দেওয়ার নানা চেষ্টা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেসব অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, সেসব অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকানদের প্রতি তিনি আহবান জানিয়েছেন, তারা যেন নির্বাচিত ইলেকটোরাল কলেজের সেøটটি বদলে দেন। কিন্তু এই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আজকের ভোটে জো বাইডেন নিশ্চিতভাবেই প্রেসিডেন্সির জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেকটোরাল ভোটের চেয়ে বেশি ভোট পাবেন।
বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ইলেকটরদের ব্যালট পরে পাঠানো হবে ওয়াশিংটন ডিসিতে, যা আগামী ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসে গণনা করা হবে। এই পর্যায়েও ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠরা আরেকবার ভোটের ফল বদলের চেষ্টা করতে পারেন। তবে অন্যগুলোর মতোই এই চেষ্টাও ব্যর্থ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু তারপরও পরাজয় মানতে নারাজ ট্রাম্প। ফক্স নিউজকে গত শনিবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘খেলা শেষ হয়নি। আমরা এগিয়ে যাব।’ এখানেই থামেননি তিনি, রোববার তিনি সুপ্রিম কোর্টকেও এক হাত নিয়েছেন টুইটে। টেক্সাসের করা মামলা খারিজ করে দেওয়ায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের ওপর ভীষণক্ষুব্ধ।
সে যাই হোক, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এসব তৎপরতার কারণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেমে থাকবে না। আজ ইলেকটরদের ভোট দেওয়ার পর নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনে বক্তব্য রাখার কথা। বিদায়ী প্রেসিডেন্টের তরফ থেকে নানা অপপ্রচার সত্তে¡ও বাইডেন এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আবারও ঐক্যের ডাক দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও এর মধ্য দিয়েই নাটকের শেষ হবে না বলে মনে হচ্ছে। কারণ, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠরা নিজেদের অবস্থান থেকে নড়বেন না বলে ঠিক করেছেন। এরই মধ্যে কয়েকজন রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছেন, আজ সোমবার ইলেকটোরাল কলেজের সভার পরই যেন তিনি পরাজয় স্বীকার করে বিবৃতি না দেন। তারা আগামী ৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সাংবিধানিক আনুষ্ঠানিকতাকে কাজে লাগাতে চাইছেন। ওই দিন প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্যরা এই বিষয় ও বহুল উচ্চারিত ভোট জালিয়াতির দাবিটি নিয়ে বিতর্ক করতে চান। শেষ চেষ্টা হিসেবে তারা ইলেকটোরাল কলেজের ভোট বাতিল করার একটি চেষ্টা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে প্রতিনিধি পরিষদ বা সিনেটের একজন সদস্যও যদি লিখিত আপত্তি জানান, তবে তা পৃথকভাবে আইনসভার দুই কক্ষেই আলোচনার জন্য উঠবে। তবে এমন কোনো পদক্ষেপ শেষ পর্যন্ত রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা নেবেন কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়। সূত্র : সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।