পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশেবরেণ্য আলেমে দ্বীন, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (৭৬) ফুসফুসে রোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল রোববার দুপুর একটার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানসহ বহু আত্মীয় স্বজন,ভক্ত ও ছাত্র রেখে গেছেন। ১৯৪৫ সালের ১০ জানুয়ারী রোজ শুক্রবার বাদ জুমা কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানার চড্ডা নামক গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাওলানা আবদুল ওয়াদূদ। আজ সোমবার সকাল নয় টায় রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী গত ১ ডিসেম্বর ঠান্ডাজণিত কারণে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েলে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের আইসিইউতে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। কর্মজীবনে তিনি ফরিদাবাদ মাদরাসা ও মালিবাগ মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ১৯৮৮ সালে রাজধানীর অন্যতম জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৯৮ সালে তুরাগ থানায় জামিয়া সুবহানিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত তিনি এই দুই প্রতিষ্ঠানে প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদীসের দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
এছাড়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও আল হাইআতুল উলিয়ার কো-চেয়ারম্যান এবং বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন তিনি করেন। দীর্ঘ শিক্ষকতার জীবনে তার অসংখ্য ছাত্র-শিষ্য সারাবিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। যারা ইসলামের খেদমতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন। দেশ জাতি ইসলাম ও মানবতার জন্য এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আলেম একজন খানাকার পীর, শিক্ষাঙ্গনের ওস্তাদ, সংগ্রামী সাধক ও ময়দানে বীরের ভূমিকা রেখে গিয়েছেন। তিনি প্রতিটি আন্দোলনে আপোষহীনতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। বাতিল যখনি মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে, তিনি তখন গর্জে উঠেছেন। অতীত যুগের আলেমদের মতো বহুমাত্রিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে ইসলামী অঙ্গনে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর ইন্তেকালে বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ, তার রূহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন কররেছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী ছিলেন মাঠে ময়দানে ইসলামের পক্ষে অকুতোভয় আপোষহীন লড়াকু সৈনিক ও দ্বীনি অঙ্গনের বিশ্বস্ত অভিভাবক। দেশের অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোতে ঢাকার রাজপথে তার নেতৃত্ব আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস ছিল। আল্লাহ তাকে জান্নাতের উচু মাকাম দান করুন।
আমাদের হাটহাজারী সংবাদদাতা জানান, আমিরে হেফাজত, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.) দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও শীর্ষ একজন প্রবীণ আলেমেদ্বীন ছিলেন। ইসলামি আন্দোলনের ময়দানে তিনি ছিলেন একজন বীর সিপাহসালার। তার ইন্তেকালে দেশবাসী হারিয়েছে একজন নিবেদিতপ্রাণ মুখলিছ আলেমে দ্বীনকে। আল্লাহ তাআলা যেন তাঁর সকল দ্বীনি খেদমতকে কবুল করেন।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর ইন্তেকালে যেসব নেতৃবৃন্দ গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন তারা হচ্ছেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই, দলের নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী,মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ও মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী ও সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মো. ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সভাপতি সাবেক মন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস নির্বাহী সভাপতি মাওলানা মনসরুল হাসান রায়পুরী,মহাসচিব মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির শায়খুল হাদীস আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম ও খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশ এর আমির আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর আল্লামা সারওয়ার কামাল আজিজি ও মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার এবং ঢাকা মহানগর আমীর প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা আবু তাহের খান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাওলানা ফরহাদ আলম, ইসলামী ঐক্যজোটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী ও মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ সভাপতি আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী ও সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম ও সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সভাপতি মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ও সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম, জাতীয় তাফসীর পরিষদ চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান,
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মুফতি মুজিবুর রহমান, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একে এম আশরাফুল হক, সহসভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান রাজাপুরী, মহাসচিব এইচ এম হারিসুল হক, অর্থসচিব মাওলানা মুমিনুল ইসলাম ও প্রচার সচিব মাওলানা ফারুক আহমাদ, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম ও প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ আহসান হাবীব, বাংলাদেশ ইমাম মুসলিম ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাওলানা মোরশেদুল আলম সেক্রেটারি মাওলানা হারুনুর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মোহাম্মাদ রুহুল আমিন, খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের জয়েন্ট সেক্রেটারী ও পিরোজপুর উলামা পরিষদের সেক্রেটারী জেনারেল মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী, বিশ্ব মুসলিম পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আশরাফুল হক ও মহাসচিব মাওলানা মুমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম ও খিদমাহ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুফতি ইমরানুল বারী।
এদিকে আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমীর মৃত্যুতে হাটহাজারী মাদরাসার সকল শিক্ষক শিক্ষার্থী, মেখল হামিউছুন্না মাদরাসাসহ রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা শোক প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।