নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : গত সপ্তাহের ঘটনা। ট্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের লড়াই তখনও জমেনি। এক কিংবদন্তি উসাইন বোল্ট তখনও নামেননি নিজের দ্যুতি দেখাতে। ঠিক তখনই দূরপাল্লার দৌড়ে এক ঘটনা ঘটিয়ে এই ইভেন্টে শ্রেষ্ঠত্বের ঝাÐা গাড়েন মোমামেদ ফারাহ। ১০ হাজার মিটারে নিজের টানা দ্বিতীয় স্বর্ণ পদকের জন্য নামলেন ট্র্যাকে। দৌড়ালেনও ঠিকঠাকমতো। কিন্তু দৌড়ের একপর্যায়ে ট্র্যাকে এমনভাবে পড়ে গেলেন! অন্য কেউ হলে হয়তো সেখানেই দৌড় শেষ। কিন্তু ফারাহ পড়ে গেলেন, উঠে দাঁড়ালেন এবং ১০ হাজার মিটার দৌড়ের স্বর্ণ পদকটি জিতলেন। গ্রেটরা বুঝি এমনই হয়।
৪ বছর আগের লন্ডন অলিম্পিক থেকে এই ইভেন্টে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে পা রেখেছিলেন ব্রাজিলের রিওতে। তখনই জানান দিয়েছিলেন, কিংবদন্তি হতেই এসেছেন। সেই স্বপ্ন পূরণে বাকি ছিলো কেবল একটি সোনালী আভায় মোড়ানো পদক গলায় ঝোলানো। গতকাল সেটিও করে ফেললেন গ্রেট ব্রিটেনের এই দৌড়বিদ। নিজেকে কিংবদন্তির পর্যায়ে আগেই নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে ৫ হাজার মিটার দৌড়ের সোনালী পদকটাও নিজের করে নিয়ে কিংবদন্তি হওয়ার সব বন্দোবস্ত পাকা করে ফেললেন। পরপর দুবার, ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকের পর এবারের রিও অলিম্পিকেও ১০ হাজারের পর ৫ হাজার মিটারের শ্রেষ্ঠত্ব নিজের করে নিয়ে ডাবল জয়ের ‘ডাবল’ কীর্তি গড়লেন তিনি।
১৯৭৬ সালের মন্ট্রিল অলিম্পিকে এমন কীর্তি শেষবারের মতো করেছিলেন ফিনল্যান্ডের ল্যাসে ভিরেন। অলিম্পিকের দূরপাল্লার দুই ইভেন্ট ১০ ও ৫ হাজারে স্বর্ণ জিতেছিলেন পরপর দুবার (১৯৭২ মিউনিখ ও ১৯৭৬ মন্ট্রিল)। ৪০ বছর পর এমন কীর্তির পুনরাবৃত্তি করলেন সোমালিয়ায় জন্ম নেওয়া ৩৩ বছর বয়সী ফারাহ। চলে গেলেন অলিম্পিকের সর্বকালের সেরারের দলে। শেষ ল্যাপের লড়াইয়ে কেউই ফারাহর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেননি। ফারাহ সময় নেন ১৩ মিনিট ৩.৩০ সেকেন্ড। ০.৬০ সেকেন্ড বেশি নিয়ে রুপা জিতেছেন কেনিয়ায় জন্ম নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পল কিপকেমই চেলিমো। ইথিওপিয়ার হাগোস গেবরিওয়েত ব্রোঞ্জ জিতেছেন।
এই দুই ইভেন্টে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও এর আগে ডাবল জিতেছিলেন ফারাহ। এবারের রিও অলিম্পিকে ফারাহ যেন নতুন করে প্রমাণ করলেন সহ্যক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়া এই দূরপাল্লার দৌড়ে তিনি সর্বকালেরই সেরা। এমন প্রাপ্তির দিনে ঘুরে ফিরেই এসেছে ১০ হাজার মিটারে ট্র্যাকে পড়ে গিয়ে আবারও উঠে সেরা হওয়ার প্রসঙ্গটি। জানালেন এটা কেবল সম্ভব হয়েছে নিজের প্রচÐ ইচ্ছাশক্তির বলেই। দারুণ এই কীর্তির পর উচ্ছ¡সিত ফারাহ বলেছেন, ইচ্ছাশক্তি থাকলে জয় করা যায় যেকোনো স্বপ্নকেই, ‘আবারও এমন সাফল্য দুর্দান্ত ব্যাপার। ১০ কিলোমিটার জেতার পর আমার পা কিছুটা দুর্বল ছিল, আমি জানি না কিভাবে সামলে উঠলাম। আমার মধ্যে এটা করে দেখানোর প্রতিজ্ঞাটা ছিল। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটাই অবিশ্বাস্য লাগছে। প্রথম দিকে কেবল একটা-দুটো পদকই জিততে চেয়েছিলাম। সে হিসেবে অনেকটা পথই চলে এসেছি। যদি প্রবল ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে স্বপ্নটা কেউ দেখতে জানে, একই সঙ্গে স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যায়, তাহলে যেকোনো স্বপ্ন যেকেউই হাত দিয়ে ছুঁতে পারবে। এখন আমি কেবল আমার সন্তানদের দেখতে চাই। এই পদক তাদের গলায় ঝোলাতে চাই।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।