Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা

স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বাড়ছে ঝুঁকি

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

শীতকে সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা দেশের বিভিন্ন এলাকার পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। তবে, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে উদাসীনতা পরিস্থিতিকে আবার ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে বলে শঙ্কিত চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগণ। পটুয়াখালী জেলায় ৮ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত সরকারি হিসেবেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৬৫০ জনের মতো। মারা গেছেন প্রায় ৪০ জন। যার মধ্যে কলাপাড়াতেই অন্তত ১০ জনের মৃত্যু ঘটেছে করোনা সংক্রমণে। আর পটুয়াখালীর যে কয়টি উপজেলা করোনা সংক্রমণে ঝুঁকিপূর্ণ, তারমধ্যে কলাপাড়া অন্যতম। আর এ উপজেলাতেই দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালীতেই। এরপর থেকে লকডাউনে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রে ও পর্যটকদের আগমনসহ সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এখানে পর্যটন কেন্দ্রীক বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত প্রায় দু’হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েন। টানা ৪ মাসের মাথায় গত মধ্য আগষ্টে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের জন্য কুয়াকাটার দ্বার অবারিত হলে ধীরে ধীরে পর্যটন কেন্দ্রটি আবারো মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রাণ ফিরে পায় পর্যটন কেন্দ্রটির দুই শতাধিক হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউজসহ পুরো এলাকার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোও। এখানে আবাসন খাতের ওপর নির্ভরশীল প্রায় দু’হাজার মানুষর জীবন জীবিকায়ও কিছুটা স্বাচ্ছন্দ আসে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বানিজ্যিক কার্যক্রমও গতি পেয়েছে।

সাগর সৈকতে পর্যটকদের মোটরবাইক আর ঘোড়ায় চড়িয়েও শতাধিক মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভরশীল। সৈকতে ছাতা, চেয়ার ও বেঞ্চ দিয়েও আরো বেশ কিছু পরিবারের ভরন পোষণ হচ্ছে। এমনকি পর্যটকদের গ্রæপ ছবি তুলেও জীবিকা নির্বাহ করছে অনেক যুবক। ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবেও কাজ করছেন অনেকে। করোনার প্রথম ঢেউ-এর সময় কুয়াকাটার পর্যটন নির্ভর জীবিকায় চরম বিপর্যয় নেমে আসে। পরিস্থিতি কিছুটা উত্তরণ ঘটলেও কিছুদিন ধরে আগত পর্যটকসহ স্থানীয়রা যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে অবাধে চলাফেরা করছেন, তা নিয়ে শঙ্কিত স্বাস্থ্যবিভাগও। বিষয়টি নিয়ে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন-এর সাথে টেলিফোনে আলাপ করা হলে তিনি জানান, আমরা সব সময়ই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরাসহ মাস্ক পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করলেও তা অনেকেই মানতে চাচ্ছেন না। এমনকি জেলা প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে তৎপর রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, কুয়াকাটা বাজারসহ সাগর সৈকতে মাইকিং করছে প্রশাসন। ট্যুরিস্ট পুলিশও বিষয়টি নিয়ে তৎপর রয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন।

কুয়াকাটা পর্যটন মোটেল-এর ব্যবস্থাপক জানান, করোনা সঙ্কট শুরুর পরে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছিল তা কিছুটা কাটতে শুরুর করলেও অনেকেই স্বাস্থ্য বিধি মানতে চান না। তবে পর্যটন করপোরেশনের কোনো স্থাপনায় মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ট্যুরিস্ট পুলিশের কুয়াকাটা জোনের এএসপি সোহরাব হোসাইন জানান, আমরা প্রতিনিয়ত পর্যটকদের সতর্ক করছি। মাইকিং ছাড়াও পর্যটকদের কাছে গিয়ে মাস্ক পড়া ও সামাজিক দূরত্ব বজার রাখারও অনুরোধ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে এরপরেও ‘দূর দুরান্ত থেকে সাগর পাড়ে ভ্রমণে এসে এত নিয়ম শৃঙ্খলা মানতে ভাল লাগছে না’ বলে মন্তব্য করেন অনেক পর্যটক। যা শুধু তাদের জীবনকেই নয়, পুরো এলাকাবাসীরও স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় কয়েকজন চিকিৎসকও।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুয়াকাটা

১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ