Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রয়োজন গ্রহণযোগ্য গবেষণা

তরুণদের কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্তকরণ ও জেন্ডার সমতা, ওয়েবিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করা আর জেন্ডার সমতা আনতে গ্রহণযোগ্য পরিসংখ্যান ও গবেষণা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে জনকল্যাণে ব্যয় বাড়াতে আগ্রহী সরকার।

করোনার কারণে তৈরি হওয়া অসমতার কথা জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বিভিন্ন সংস্থাকে সরকারের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরার আহবান জানান। গত শনিবার সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও অ্যাকশন এইড আয়োজিত মহামারির প্রেক্ষাপটে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তরুণ ও জেন্ডার সমতা শীর্ষক ওয়েবিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ওয়েবিনারে বক্তব্য রাখেন একশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা, ব্র্যাকের পরিচালক নবনিতা চৌধুরীসহ আরও অনেকে।

দেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এমন সময়ে প্রণয়ন হতে যাচ্ছে, যখন করোনাভাইরাসের কারণে তৈরি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হচ্ছে। করোনার কারণে তরুণ জনগোষ্ঠীর বেকারত্ব হার বেড়েছে, শিক্ষার ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে ডিজিটাল ও জেন্ডার ডিভাইড। নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে, কমেছে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ। সব প্রতিবন্ধকতাকে সামনে রেখে আসছে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে সরকারকে দৃষ্টি দেয়ার আহবান জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা সানেম। সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এবার মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

প্রফেসর ড. বিদিশা হক বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ তরুণ এবং নারী জনগোষ্ঠী কীভাবে মোকাবিলা করবে তা সঠিকভাবে জাতীয়ভাবে পরিকল্পনায় সন্নিবেশ হওয়া দরকার, একই সঙ্গে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা কীভাবে আরও কার্যকরী ভ‚মিকা পালন করতে পারেন, সে বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন।
ফারাহ কবির বলেন, আসন্ন অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় তরুণ জনগোষ্ঠীর, বিশেষ করে প্রান্তিক তরুণ জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কি নীতি প্রণয়ণ করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষার ক্ষেত্রে দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা করোনার কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোভিডের কারণে ‘লকডাউন জেনারেশন’ এর ক্ষেত্রে ‘ইন্টারজেনারেশনাল লার্নিং গ্যাপ’ সৃষ্টির আশঙ্কা আছে। সানেমের গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের মাত্র ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ বাড়িতে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ সুবিধা আছে, শহরাঞ্চলে এ হার ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং গ্রামে ২ দশমিক ৮২ শতাংশ।

কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্বের হার ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, যা বিশ্বব্যাংকের গবেষণা অনুযায়ী, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ২৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রায় ৩০ শতাংশ তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে যারা শিক্ষা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণ কোনোটিতেই নেই। এক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনায় তরুণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদান, শ্রম বাজারে নারীদের অংশগ্রহণের জন্য সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

করোনা সংকটে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে নারী ও তরুণদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নবনীতা চৌধুরী বলেন, পরিসংখ্যানে নারীর উপস্থিতি আলাদাবে থাকতে হবে। নারীর অবস্থা সবসময়ই পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে। এক জরিপে দেখা যায়, ৪০ শতাংশ নারী শিক্ষা গ্রহণ করতে সক্ষম হলেও স্বাধীন চলাফেরা করতে না পারার কারণে চাকরিক্ষেত্রে অবদান রাখতে সক্ষম নয়।
ফারাহ কবির বলেন, আগামী দিনে যে কোনও পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্টি হওয়া চালেঞ্জগুলো বিশেষভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। তিনি তরুণদের জন্য সফট স্কিল বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করেন। একই সঙ্গে নারী তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার ওপর তিনি জোর দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তরুণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ