পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শীতের শুরুতেই ধুলায় ধূসর রাজধানী। রাজপথ থেকে অলিগলি সর্বত্রই উড়ছে ধুলা। এতে রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ চরমে। বাড়ছে ভোগান্তি। ধুলায় দূষিত হচ্ছে ঢাকার বাতাস। বায়ুদূষণের জন্য রাজধানী ঢাকা এখন বিশ্বের মধ্যে আলোচিত শহর। প্রায়ই বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে ঢাকার নাম উঠে আসছে। রাজধানীর বায়ুদূষণের জন্য অন্যতম কারণ হচ্ছে ধুলিদূষণ। ধুলিদূষণের জন্য ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডা, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগব্যাধি। করোনা মহামারির মধ্যে ধুলাদূষণ মরার উপর খাড়ার ঘা। শুষ্ক মৌসুমে ধুলা প্রকোপ অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় পরিবেশ দ‚ষণের মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা কেটে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটি, ওয়াসার পানি সরবরাহ লাইন নির্মাণ, ড্রেনেজ নির্মাণসহ চলছে নানাবিধ উন্নয়নম‚লক কাজ। ফলে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে রাজধানীর সর্বত্রই এখন ধুলায় ধূসর।
বছরব্যাপী উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়িতে শীত কিংবা বর্ষা সব ঋতুতেই ঢাকাবাসী পড়েন চরম দুর্ভোগে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বছরব্যাপী রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যখন-তখন রাস্তা কেটে পরিবেশ দ‚ষণ করে যাচ্ছেন। এতে বায়ুদ‚ষণের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। শুধু ধুলাবালি নয়, বর্জ্য, প্লাস্টিক পোড়ানোর কারণেও বায়ুদ‚ষণ বাড়ছে। একদিকে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, অন্যদিকে করোনা মহামারির মধ্যে শিশু থেকে বয়স্করা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর এক্ষেত্রে কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই। বায়ুদূষণ রোধে উচ্চ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। যে সব রাস্তায় উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে সে সব স্থানে সংশ্লিষ্টদের পানি ছিটানোর নির্দেশনা থাকলেও তা সঠিকভাবে করা হচ্ছে না।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে প্রতিদিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ১০টি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৮টি গাড়িতে করে পানি ছিটানোর কাজ করে। যা বৃহত্তম নগরীর তুলনায় খুবই নগণ্য। এ ছাড়া যেসব সড়কে পানি ছিটানো হয়, সেসব স্থানেও ধুলার পরিমাণ কমছে না। পানি ছিটানোর ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই তা শুকিয়ে যাচ্ছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ধানমন্ডি, উত্তরা, বাড্ডা, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এসব স্থানে মানুষের চলাচল, বাসাবাড়ির আবর্জনাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের কারণে ধুলা-বালির সৃষ্টি হচ্ছে। যা মারাত্মক রূপ নিচ্ছে। মোহাম্মদপুর-বসিলা রোডের ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, ধুলার কারণে ক্রেতারা দোকানে আসতে চান না। সড়ক দিয়ে নিয়মিত গাড়ি চলাচল করছে। তবে গাড়ি ঠিকমতো দেখা যায় না। এতে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তার ধুলায় দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ বার করে দোকান মুছতে হয়। শফিক নামের একজন পথচারী জানান, গত কয়েক বছর ধরে মোহাম্মদপুর ধুলার এলাকায় পরিণত হয়েছে। বাসস্ট্যান্ড কিংবা বেড়িবাঁধ এলাকা সবখানেই ধুলা। এতে পথচারীসহ স্থানীয়দের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছেন। ধুলা-বালির কারণে এখানকার মানুষে মধ্যে শ্বাসকষ্টও দেখা দিয়েছে। মাটি, বালু, ইট, সুরকি সড়কের পাশে রাখা হচ্ছে। এগুলোর ধুলা বাতাসে মিশে জনজীবন বিপর্যস্ত করছে। একই চিত্র রাজধানীর গাবতলী এলাকায়।
এদিকে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চলছে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ। টঙ্গী থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত বিআরটি’র নির্মাণকাজ চলছে। এতে সড়কে উড়ছে ধুলা। মৌসুমের প্রথম দিক থেকে এখানে ধুলা মারাত্মকভাবে বেড়েছে। ফলে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল করা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ধুলার কারণে বাসের সিটসহ যাত্রীদের পোশাকে আবরণ পড়ে যায়। উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা সোহানুর রহমান বলেন, করোনার কারণে মাস্ক ছাড়া বের হই না। তুবও মাস্কের উপরে ধুলার আস্তরণ পড়ে যায়। এতে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যা হয়।
রাজধানীর প্রায় সব এলাকায়ই চলছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িসহ নানা উন্নয়নম‚লক কাজ। এ কারণে ধুলার মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। সরকার রাজধানীতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। অথচ ধুলাদ‚ষণ প্রতিরোধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এদিকে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের কারণে মিরপুর ১২ থেকে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, প্রেস ক্লাব, পল্টন, মতিঝিল এলাকা এখন ধুলাময়। যানবাহনের চাকার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পানি ছিটানো হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন ট্রাফিক পুলিশ জানায়, রাজধানীর এমন কোনো রাস্তা নেই যেখানে ধুলা উড়ে না। ধুলার মধ্যেই আমাদের ডিউটি করতে হয়। এতে আমাদের প্রায় সময়ই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে হয়। সড়কে আমাদের কাজ। মাঝেমধ্যে ধুলা, বালি-কণা চোখে পড়ে।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক (একিউআই) সূত্রে জানা যায়, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার বাংলাদেশে দূষণের মাত্রা অনেক বেশি। যা গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বায়ুমানের অবনতি হচ্ছে, কোথাও কোথাও তা বিপজ্জনক সীমাও স্পর্শ করছে। গতকাল একিউআইয়ে দেখা যায়, ঢাকা এবং নারায়নগঞ্জ বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে। দূষণের দিক দিয়ে এই দুই শহরের বায়ুমান ২১০। যা খুবই অস্বাস্থ্যকর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।