পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারাদেশে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। হাড় কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সারাদিন সূর্যের দেখা মিলছে না। গত দু’দিন যাবৎ রাজধানী ঢাকায়ও সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তা কুয়াশার জন্য নয়। ধুলায় ধূসর রাজধানীর আকাশ। রাজধানীর বাতাসে ধুলাদূষণ এতটাই যে তা কুয়াশার মতো সূর্যকে ঢেকে দিচ্ছে।
এয়ার ভিজ্যুয়াল-এর বায়ুমান সূচক (একিউআই) অনুযায়ী গতকাল ঢাকা আবারো বিশ্বের মধ্যে বায়ু দূষণের শহর হিসাবে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। বায়ুমান ৪১৯ পিপিএম নিয়ে গতকাল ঢাকার বাতাস ছিল দুর্যোগপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে ঢাকা এখন ‘জরুরি অবস্থা’ জারি করার মতো অবস্থা। কয়েক দিন আগের বৃষ্টিতে বায়ুদূষণ কিছুটা কমলে গতকাল আবার আগের অবস্থানে এসেছে। গত ১৯ থেকে ২২ জানুয়ারি এ চারদিন ঢাকা বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে ছিল। এছাড়া পুরো জানুয়ারিতে ঢাকাবাসী এক সপ্তাহও বিশুদ্ধ বাতাস পায়নি।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় মাটি থেকে দুই হাজার টন ধুলাবালি আকাশে উড়ছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। ঢাকার বাতাসে ধুলোবালি এবং শিল্পকারখানার ধোঁয়া বেড়ে যাওয়ায় বাতাসের মান দিনদিন খারাপ হচ্ছে। বর্তমানে দূষণের যে মাত্রা তাতে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা।
ঢাকার বায়ুদূষণ প্রসঙ্গে ক্যাপসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, নগর পরিকল্পনায় ঘাটতি, আইনের দুর্বলতা, আইন প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা ঢাকার বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ। ২০২২ সালের জানুয়ারির ২৫ দিনের গড় বায়ুমান সূচক ২১৯.৫২-তে দাঁড়িয়েছে, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। গত ছয় বছরের মধ্যে ঢাকার মানুষ মাত্র দুই ভাগ (৩৮ দিন) সময় ভালো বাতাস পায়। ঢাকার দূষণের মান সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে থাকে রাতে। এতে রাজধানীবাসীর স্বাস্থ্যজনিত সমস্যাও বেড়ে যাচ্ছে। বেড়েছে ইনহেলারের ব্যবহারও।
এই মুহূর্তে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়ক, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের মতো বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে। সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি নানা ভবন নির্মাণ তো আছেই। স্বাভাবিকভাবেই তাই বাতাসে ভাসছে বালি আর মাটির কণা। এদিকে শীতে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় ধূলিকণা বাতাসেই থেকে যাচ্ছে। ঢুকে পড়ছে ঘরে, এমনকি মানুষের ফুসফুসেও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বক্ষব্যাধির বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়ুদূষণ। দূষণ রোধে তাই সব পক্ষকে দ্রুত চিন্তা-ভাবনার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশন চাইলে ঢাকার বায়ুদূষণ ২৫-৩০ ভাগ রাতারাতি কমিয়ে আনা সম্ভব। এজন্য শেষ রাতের দিকে বৃষ্টির মতো পানি দিতে হবে। এজন্য সিটি করপোরেশনের গাড়ির সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশের জলকামানও ব্যবহার করা যেতে পারে। গাছের পাতাগুলো ধুয়ে দিতে হবে। যেসব এলাকায় নির্মাণকাজ চলছে সেখানে বেশি বেশি পানি ছিটালে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক শরিফ জামিল বলেন, রাজধানীর বায়ুদূষণ রোধে উচ্চ আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছে তা মানা হচ্ছে না। যে সমস্ত মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে সেসব এলাকা ঢেকে কাজ করার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এ ছাড়া ধুলা নিয়ন্ত্রণে পানি ছিটানোর নির্দেশনাও যথাযথ ভাবে হচ্ছে না। বর্তমানে ঢাকার বাতাস যে পরিমাণ দূষিত তাতে আমরা কিভাবে বেঁচে আছি সেটাই বিস্ময়ের বিষয়।
বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর কিছু এলাকায় দুই সিটি করপোরেশন পানি ছিটালেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। যেসব গাড়ি দিয়ে পানি ছিটানো হয় সেগুলো প্রধান সড়কের বাইরে অলিগলিতে যেতে পারে না। অন্যদিকে, ঝাড়ু দিয়েও খুব একটা লাভ হয় না। এতে ধুলা বাতাসেই থেকে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।