পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হালের আলোচিত ‘গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ৮ বছর ধামাচাপা দিয়ে রাখে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি র্যাব অন্য মামলায় গ্রেফতারের পর দুদক তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন অনুমোদন করে। শিঘ্রই এটি চার্জশিট আকারে দাখিল করা হবে বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্র জানায়, অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার কমিশন তদন্ত প্রতিবেদনটির অনুমোদন দেয়। চার্জশিটে গোন্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৩৩৫ টাকার অবৈধ সম্পাদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ তথ্য জানান, কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব ভট্টাচার্য। ২০১২ সালের ১৩ মার্চ এ মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলাটির তদন্ত সম্পন্ন করতে কমিশনের ৮ বছর সময় লাগায়। অদৃশ্য কারণে মামলার তদন্ত ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয় বলে দুদকের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রটি জানায়,গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের পর থেকে তার অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদের পৃথক একটি অনুসন্ধান শুরু হয়। ওই অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে মনির হোসেন ও তার স্ত্রী রওশন আক্তারের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এই অনুসন্ধানেও গোল্ডেন মনিরের নামে-বেনামে বিপুল অবৈধ সম্পদের সন্ধান মেলে।
অনুমোদিত তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে জানা গেছে, এই প্রতিবেদনে গোল্ডেন মনির ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা বৈধ করতে বিভিন্ন ব্যক্তি থেকে দান প্রাপ্ত হয়েছেন মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। যা ভুয়া তথ্য তথ্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া তার আরও ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ লাখ ৩৩৫ টাকার সম্পদ মিলেছে- সেটির স্পষ্ট কোনো উৎস নেই। সম্পদ বিবরণী দাখিল করলেও তিনি কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেন নি।
২০১২ সালের ১৩ মার্চ রাজধানীর রমনা থাকায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে এ মামলা করে দুদক। এর আগে ২০০৯ সালে তার সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়। এ নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে গোল্ডেন মনির তার সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। ওই হিসাব বিবরণীর ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামরা হয়। মামলার তদন্তকালে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে কয়েটি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেন সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধান কর্মকর্তা। ওই চিঠির ভিত্তিতে তদন্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মনির। এতে কিছুদিন তদন্তটি স্থগিত থাকে। স্থগিতাদেশ ভ্যাকেট (রহিত) হওয়ার পর মামলাটি রহস্যজনক কারণে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় দীর্ঘদিন পড়ে থাকে। সম্প্রতি গোল্ডেন মনিরকে গ্রেফতার এবং তার অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে সক্রিয় হয়ে ওঠে দুদক। উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসেন মৃধা মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। কমিশন সেটি অনুমোদন করেন।
এদিকে পুনরায় অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত ২৬ নভেম্বর গোল্ডেন মনির ও তার স্ত্রী রওশন আক্তারের সম্পদের হিসাব চেয়ে আরেকটি নোটিশ পাঠায় দুদক। সংস্থার পরিচালক আকতার হোসেন আজাদের স্বাক্ষরে পাঠানো নোটিশে তাদের ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়। গত ২০ নভেম্বর রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় মনিরের ৬ তলা বাড়িতে র্যাব-অভিযান চালায়। এতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে মনিরের বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি নয় লাখ টাকা, চার লিটার মদ, আট কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে মনিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
গোল্ডেন মনির ফের ৯ দিনের রিমান্ডে
রাজধানীর বাড্ডা থানায় করা পৃথক তিন মামলায় গাড়ি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের আবারও ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ দিন রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পাঁচ, অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের পৃথক দুই মামলায় তাকে ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মঈনুল ইসলাম অস্ত্র মামলায় ৩ ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে বিচারক বলেন দুই মামলার রিমান্ড একসঙ্গে কার্যকর হবে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ মাদক মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ২২ নভেম্বর মনিরকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের পৃথক তিন মামলায় তাকে সাতদিন করে ২১ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিক অস্ত্র মামলায় ৭ ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তবে বিচারক বলেন, দুই মামলার রিমান্ড একসঙ্গে কার্যকর হবে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান মাদক মামলায় চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মেরুল বাড্ডায় মনিরের ছয়তলা বাড়িতে গত ২০ নভেম্বর রাতে অভিযান চালায় র্যাব। অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে এই অভিযান চালানোর পর মনিরকে গ্রেফতার করা হয় বলে র্যাব সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়।
গ্রেফতারের পর তার হেফাজত থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, কয়েক রাউন্ড গুলি, বিদেশি মদ এবং প্রায় ১০টি দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ করে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯ লাখ টাকা। এছাড়া তার বাসা থেকে ৮ কেজি স্বর্ণ ও নগদ এক কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ২২ নভেম্বর র্যাব বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।