Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাদনের ফাঁদে কৃষক

শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

পদ্মা নদী দ্বারা শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কাঁচিকাটা ইউনিয়নে ফসলের মাঠে শোভা পাচ্ছে আগাম সবজির সমারোহ। চাষিরা মাঠে মাঠে তাদের আগাম রোপনকৃত ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ক্যাফসিকেমসহ শীম, করলা, বেগুন, কাচামরিচ, মুলা, গাজর ক্ষেতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছে।
জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার মধ্যে এই জনপদে শীতকালিন আগাম সবজি উৎপাদন করে থাকে চাষিরা। উপজেলা ও জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন ও নদী বেষ্টিত হওয়ায় সরকারের অনেক সুযোগ সুবিধা থেকেই তারা বঞ্চিত হয় বলে জানিয়েছে চাষিরা। বিভিন্ন জেলার মহাজনদের দাদনের দায়ে আবদ্ধ এখানকার চাষিরা জানান, ওই সকল মহাজনদের নির্ধারিত দামের বাইরে তারা সবজি বিক্রি ও বাজারজাত করতে পারে না। ফলে ফসলের উচ্চ মূল্য ও সরকারি সুবিধা বঞ্চিত হওয়ার কারণে জনম জনম পরিশ্রম করেও তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন সম্ভব হয় না।
কাঁচিকাটার মান্দারতলী গ্রামের সবজি চাষি বলেন, অনেক আগে থেকেই আমরা এখানে সবজি চাষ করতাছি। শীতকাল ও গরমকালে মিলে সার বছর আমরা সবজি আবাদ করি। আমাদের এখানে নির্ধারিত সময়ের তুলনায় একটু আগেই ফসলের আবাদ হয়ে যায়। তিনি তার নিজের মরিচ ক্ষেত দেখিয়ে বলেন, এখনো সারাদেশের মানুষ জমিতে মরিচবীজ ফেলছে। অথচ আমাদের জমির কাচামরিচ তোলার সময় হয়ে গেছে। আমরা ফসল ফলাইলে কি হইবো মহাজনের থেকে দাদন আনিইয়া চাষাবাদ করার কারণে ভালো লাভ পায়নি। আমরা চাইলেই স্থানীয় বা আমাদের জেলার বাজারে বেশি দাম থাকলেও ফসল বেচতে পারি না। মহাজনের লোকজন ক্ষেতের পাশে এসে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ফসল কাটলে তাদের গাড়িতে ভরে তারা নিয়ে যায়। আমরা সরকারি সহায়তা পাইলে হয়তো মহাজনদের তাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হতো না।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের মুখপাত্র উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মামুনুর রশীদ হাসিব জানান, কাঁচিকাটায় প্রতি বছর অন্তত ২৫ হাজার মেট্রিকটন কাচা মরিচ, ৫০ হাজার মেট্রিকটন গোল আলুু, ১ লাখ মেট্রিকটন করলা, ৩০ হাজার মেট্রিকটন শীম, ২৫ হাজার মেট্রিকটন বেগুন, ১০ হাজার মেট্রিকটন মুলা, ১ হাজার মেট্রিকটন গাজর চাষ হয়েছে। সম্প্রতি চাষ শুরু হওয়া উচ্চ মূল্যের ফসল ব্রকলি, ক্যাপসিকেম বেশ আবাদ হয়। ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফাতেমা ইসলাম বলেন, কাঁচিকাটা একটি বিচ্ছিন্ন জনপদ। আমার উপজেলা সদর থেকে সেখানে যাওয়ার একমাত্র অবলম্বন নদী পথে স্বাভাবিক সময়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে। এ এলাকাকে বলা হয় শরীয়তপুর জেলা মরিচ ও আলুর রাজ্য। এখানকার চাষিরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এক দেড়মাস পূর্বেই চাষাবাদ শুরু করে। আমি নিজে এ এলাকা ঘুরে চাষিদের ফসল দেখে অভির্ভ‚ত হয়েছি। আমরা সব সময় চাষিদের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে থাকি। সরকারি সহায়তা বা প্রণোদনা পেলে গুরুত্বের সাথে এখানকার চাষিদের মাঝে বন্টন করে থাকি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ