Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ম্যারাডোনার যত প্রেম

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

বার্সেলোনা, নাপোলি আর আর্জেন্টিনার জার্সিতে বল পায়ে জাদুতে কোটি কোটি ভক্তকে মুগ্ধ করেছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। অগণিত ভক্তের মনে জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী এই কিংবদন্তি। ফুটবল জীবনের মতো ব্যক্তিজীবনেও বারবার ম্যারাডোনায় আলোচনায় ছিলেন প্রেমের কারণে। একবার তো গ্রেফতারও হয়েছেন। সেই ‘সোনালী বালকের’ জন্মসহ প্রেমগাঁথা তুলে ধরা হলো ভক্তদের জন্য।

ম্যারাডোনার পারিবারিক জীবন
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আইরোসের একটা জীর্ণ শহরে এক ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম হয় ম্যারাডোনার। তার বাবা ডন ডিয়েগো কারখানায় কাজ করতেন। মজার বিষয় হলো, আর্জেন্টিনা যুব দলে তার বড় ছেলে ম্যারাডোনাকে পাঠাতে চাননি ডন ডিয়েগো। কারণ তিনি মনে করতেন, এই খেলায় তেমন অর্থ নেই।
ম্যারাডোনার জীবনে সবচেয়ে প্রভাব রেখেছেন তার মা ডোনা টোটা। তিনি গৃহিনী ছিলেন। ২০১১ সালে যখন তার মা মারা যান, তখন আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমজুড়ে এই খবরই শিরোনাম হয়ে ছিল। ম্যারাডোনার আত্মজীবনীতে তার মায়ের ব্যাপারে লিখেন, তিনি খাবার খেতেন না। অসুস্থ থাকার ভান করতেন, যাতে ৮ সন্তানকে খাওয়াতে পারেন।
ম্যারাডোনার ভাইয়েরা যখন ফুটবলার
এই কিংবদন্তির দুই ভাই পেশাদার ফুটবল খেলেছেন। যদিও বড় ভাইয়ের মানের বিচারে কাছাকাছিও ছিলেন না তারা। তাদের একজন রাউল। যিনি লালো নামে পরিচিত। তিনি বোকা জুনিয়র্স ও স্প্যানিশ ক্লাব গ্রানাডার হয়ে খেলেছেন। ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রে খেলে কাটিয়েছেন।
নাম্বার টেনের বিয়ে ও প্রেম অধ্যায়
বিয়ে ও তার পর নানা সময় প্রেমে জড়িয়েছেন ম্যারাডোনা। বয়স যখন মাত্র ১৯ বছর, তখনই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি। তার জীবনে বিয়ে বলতে এই একটাই। ১৯৮৪ সালে আংটি বদল করে পাঁচ বছর পর বিবাহজীবনে আবদ্ধ হন ম্যারাডোনা। বিয়ে করেন দুই বছরের ছোট ক্লদিয়া ভিজাফানিয়েকে।
এই পরিবারে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। দালমা নেরেয়া ও হিয়ানিয়া দিনোরাহ। তার কনিষ্ঠ মেয়ে হিয়ানিয়ার সঙ্গে আরেক আর্জেন্টাইন ফুটবলার সার্জিও আগুয়েরোর বিয়ে হয়।
প্রায় ২৫ বছর সংসারের উত্থান-পতন শেষে ২০০৪ সালে বিচ্ছেদ হয় ম্যারাডোনা ও ক্লদিয়ার। অস্থিরতার এই তিন দশকে ম্যারাডোনার জীবনে অন্য নারীর আগমনের গুজব রটে।
বিচ্ছেদের পরও তাদের দুজনকে একসঙ্গে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে তারা আবারও প্রকাশ্যে আসেন। এর থেকেও বড় শিরোনাম হন ২০১৮ সালে। ম্যারাডোনা তার সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে অর্থ চুরির অভিযোগ আনেন।
যত প্রেম
১৯৮৬ সালে ম্যারাডোনার সঙ্গে ইতালিয়ান মডেল ক্রিস্টিয়ানা সিনাগ্রা সম্পর্কে জড়ান। সে সময় সিনাগ্রার এক সন্তান হয়। কিন্তু তখন সন্তানকে স্বীকৃতি দেননি ম্যারাডোনা। পরে ২০১৬ সালে ম্যারাডোনা তাকে সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদের পর ২০০৬ সালে আরেকটি সম্পর্কে জড়ান ম্যারাডোনা। ভেরোনিকা ওজেদার সঙ্গে যখন প্রেমে জড়িয়েছেন, তারপরই ২০১০ বিশ্বকাপে মেসিদের কোচ ছিলেন ম্যারাডোনা।
২০১৩ সালে তাদের পুত্র সন্তান ডিয়েগো ফার্নান্দো ম্যারাডোনার জন্ম হয়। এই সম্পর্কেও টানাপোড়েন শুরু হয় ২০১৮ সালের দিকে। পরে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে ওজেদা ও জুনিয়র ম্যারাডোনাকে নিয়ে মেক্সিকোতে বসবাস করছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। তখন তিনি মেক্সিকোর ক্লাব ডোরাডোস ডে সিনালোয়াকে কোচিং করাচ্ছিলেন। এর পরপরই রোচিও ওলিভা নামে বয়সে ৩০ বছরের ছোট আরেক নারীর সঙ্গে তিনি আরেকটি সম্পর্কে জড়ান। এই সম্পর্ক নিয়ে ওলিভা বলেন, ‘ম্যারাডোনা আমাকে কিছু ফুল পাঠায় এবং আমি অবাক হয়ে যাই; যখন তিনি আসলেন আমি তার প্রেমে পড়ে যাই।’
২০১২ সালে প্রথম দেখা হয়েছিল দুজনের। সাবেক ফুটবলার বলে অলিভার সঙ্গে ম্যারোডোনার জমেছিলও ভালো। বান্ধবীকে বুয়েনেস এইরেসের বেলা ভিস্তায় একটি বাড়িও কিনে দিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু অলিভা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শুধু ছয় বছরের সম্পর্কেই দাঁড়ি টানেননি, ম্যারাডোনাকে বের করে দিয়েছিলেন তার কিনে দেয়া বাড়ি থেকেও। সঙ্গে একটি মামলাও করেছিলেন তার বিরুদ্ধে। সেই মামলায় মেক্সিকোতে গ্রেফতার করা হয় ম্যারাডোনাকে। পরে অবশ্য গ্রেফতার দেখিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় তাকে। বলা হয়, শুনানির দিন আদালতে উপস্থিত থাকতে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ম্যারাডোনার-যত-প্রেম

২৭ নভেম্বর, ২০২০
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ