Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কৃষক-শ্রমিক ধর্মঘটে উত্তাল ভারত ধস্তাধস্তি-বিক্ষোভ, সড়কে আগুন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৪ এএম

ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম ও কৃষি আইনসহ বিভিন্ন নীতির প্রতিবাদে এবং করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষকে আর্থিক সহযোগিতা, রেশন দেওয়াসহ ৭ দফা দাবিতে দেশজুড়ে ধর্মঘট করছে কংগ্রেস, বামফ্রন্ট ও শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন। কৃষকদের সংগঠনগুলো এ ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বন্ধ, অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে। ‘দিল্লি চলো’ ডাকে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষক দিল্লি রওনা হয়েছেন। তবে ধর্মঘট ঠেকাতে মরিয়া কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সাথে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সংঘর্ষ, ধস্তাধস্তি হয় এবং সড়কে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। দিল্লির দিকে এগোতেই কৃষকদের লক্ষ্য করে পানিকামান ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়া হয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ধর্মঘটের সমর্থনে পশ্চিমবঙ্গে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাম ও কংগ্রেস সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন দেখা গেলেও মেট্রো চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বেশিরভাগ কলকারখানা বন্ধ রয়েছে; যেগুলো খোলা রয়েছে সেখানেও শ্রমিক উপস্থিতি অন্যদিনের তুলনায় কম। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেবল কলকাতাতেই পুলিশের ৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অন্যান্য রাজ্যে ধর্মঘটের কারণে যানবাহন চলাচল সামান্য বিঘ্নিত হয়েছে। এরই মধ্যে হাজার হাজার কৃষক পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থান থেকে দিল্লির পথে রওনা হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হরিয়ানায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পাঞ্জাবের সঙ্গে তাদের সীমান্ত সিল করে দিয়েছে। দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ রাজ্যে বৃহস্পতিবার পুলিশ কৃষকদের উপর কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার পাশাপাশি পানিকামানও ব্যবহার করেছে। আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, হিসারে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। বিভিন্ন এলাকায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। গুরগাঁওয়ে কৃষক নেতাদের সঙ্গে স্বরাজ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট যোগেন্দ্র যাদবকেও আটক করেছে পুলিশ। পাঞ্জাব থেকে দিল্লি অভিমুখে রওনা দেওয়া লাখো কৃষকদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তাদেরকে যেখানে আটকানো হবে সেখানেই বসে পড়বেন তারা। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখন্ড, রাজস্থান, কেরালা এবং পাঞ্জাব থেকে কৃষকরা এই সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। এদিকে, কৃষকদের বাধা দিতে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাত্তারের নির্দেশে ওই রাজ্যের সঙ্গে পাঞ্জাবের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করতে আগে থেকেই জল কামান, দাঙ্গা গাড়ি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরি করে রাখা হয়েছিল। হরিয়ানায় বড় ধরনের সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। এমনকি হরিয়ানা থেকে পাঞ্জাবগামী সব ধরনের বাস সেবা দু’দিনের জন্য বাতিল করা হয়েছে। বুধবার রাতে হরিয়ানা পুলিশ কমপক্ষে দু’বার বিক্ষোভকারীদের ওপর জল কামান নিক্ষেপ করেছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর ঠান্ডা পানি নিক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু কোন কিছুতেই বিক্ষোভকারীদের দমানো যায়নি। ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন দাবি করেছে, তাদের এই সমাবেশে দুই লাখের বেশি কৃষক অংশ নেবে। দু’দিনের সমাবেশে অংশ নিতে খাবার, সবজি, কাঠ এবং কম্বল নিয়েই রওনা দিয়েছেন কৃষকরা। এদিকে ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম এবং কৃষি আইনসহ নানান নীতির প্রতিবাদে এবং ৭ দফা দাবিতে দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাস্তায় নামে বাম এবং কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। পথ অবরোধ-মিছিল করে ধর্মঘটের সমর্থন জানান তারা। বিক্ষোভকারীদের দাবিদাওয়াগুলো সমর্থন করলেও তার পথে নামবেন না বলে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি’র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধর্মঘটের সর্বাত্মক বিরোধিতা করবেন তারা। এবিপি, এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক-শ্রমিক-ধর্মঘট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ