নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
উদ্বোধনী ম্যাচে ভালো করলেন অনেকেই। তবে শেষে লড়াইটা হয়ে দাঁড়াল মেহেদি হাসান বনাম মুক্তার আলি। ফুরফুরে উইকেটে শেখ মেহেদী হাসান আর নুরুল হাসানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পূঁজি পেয়েছিল মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। তবু লক্ষ্যটা ছিল নাগালেই। রান তাড়ায় শুরুতেই বিপাকে পড়া বেক্সিমকো ঢাকাকে পথে রেখেছিলেন মুশফিকুর রহিম আর আকবর আলি। কিন্তু কাজটা শেষ করতে পারেননি তারা। শেষ দিকে মুক্তার আলি ঝড় তুলে খেলা নিয়ে এসেছিলেন হাতে। কিন্তু পরে তিনিই হয়েছেন খলনায়ক।
শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ৩২ রান। ফরহাদ রেজার ১৯তম ওভারে তিন ছয়ে ২৩ রান তুলে ফেলেন মুক্তার আলি। শেষ ওভারে দরকার কেবল ৯ রান। শেখ মেহেদীর বলে ওই রান নিতে পারেননি মুক্তার। কাজে লাগাতে পারেননি ফ্রী হিটের সুযোগও। গতকাল বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম ম্যাচেই ছড়িয়েছে এমন রোমাঞ্চ। তাতে ২ রানে দলকে জিতিয়ে নায়ক নামেভারে পিছিয়ে থাকা রাজশাহীর শেখ মেহেদী হাসান।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করা রাজশাহী করেছিল ৯ উইকেটে ১৬৯। ৫ উইকেট হারানো ঢাকা থামে ১৬৭ রানে। ৩২ বলে ৫০ করার পর ৪ ওভার বল করে মাত্র ২২ রানে ১ উইকেট নেন মেহেদী। শেষ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়েই দলকে রোমাঞ্চ জয়ের উৎসব এনে দিয়েছেন এই স্পিন অলরাউন্ডার।
১৭০ রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি বেক্সিমকো ঢাকার। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম তার ভঙ্গিমার আগ্রাসী ব্যাট করছিলেন। কিন্তু তার ঝড়ের সম্ভাবনা নিভেছে রান আউটে। আরেক প্রান্তে নামা ইয়াসির আলি নড়বড়ে খেলে ফেরেন এলবিডবিøউ হয়ে। নাঈম শেখ থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। ২ চার ২ ছক্কায় তার ২৬ রানের ইনিংস ফুরোয় আরাফাত সানির বলে। ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারানো দল পথে ফেরে মুশফিকুর রহিম ও আকবর আলির ব্যাটে। পরিস্থিতি সামলে দুজনে খেলা নিয়ে আসেন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের জুটিতে সমীকরণ হয়ে আসছিল সহজ।
তবে ৫৩ বলে তাদের ৭১ রানের জুটি ভেঙ্গে দেন ফরহাদ রেজা। মিড উইকেট দিয়ে উড়াতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন আকবর। দলকে হতাশায় ডুবিয়ে খানিক পর বিদায় মুশফিকেরও। ইবাদত হোসেনের বলে স্কুপ খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে দেন ৪১ রান করা মুশফিক।
ম্যাচে তখন অনেকটা ব্যাকফুটে চলে যায় ঢাকা। তবে সাব্বির রহমানকে এক পাশে রেখে খেলা নিয়ে এসেছিলেন মুক্তার। তবে তার ১৫ বলে ২৭ রানের ইনিংস কেবল আক্ষেপই বাড়িয়েছে দলের। ফরহাদ রেজার এক ওভারে ৩ ছক্কা মারলেও মেহেদীর শেষ ওভারে ৪ টি ডটবল খেলে তিনিই হয়ে যান খলনায়ক।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা রাজশাহী দিয়েছিল বড় রানের আভাস। ওপেনারদের জুতসই শুরুর পর তা এলোমেলো হয়ে যায় মিডল অর্ডারে। পরে শেখ মেহেদী আর নুরুল হাসানের জুটিতে খেলায় ফেরে রাজশাহী। ৬ষ্ঠ উইকেটে ৫১ বলে দুজনের ৮৯ রানের জুটিতে প্রাণ ফেরে ম্যাচে। দল পায় জুতসই প‚ঁজি। আর তাতে ভর করেই জয় দিয়ে আসর শুরু করে শান্তর দল। রাজশাহীর হয়ে মেহেদী-ই সেরা বোলার। ব্যাট হাতেও রান পাওয়ায় এবং ভীষণ চাপের মুহ‚র্তে বল হাতে ম্যাচ বের করায় ম্যাচসেরা কে তা না বললেও চলে!
গত মাসে প্রেসিডেন্ট’স কাপ দিয়ে দেশে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট শুরু হয়েছে বটে। তবে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে আয়োজিত সেই টুর্নামেন্টে প্রতিদ্ব›িদ্বতার মাত্রা খানিকটা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে বলা যায় সত্যিকার অর্থে দেশে ফিরেছে ‘আসল’ ক্রিকেট। কোভিড বিরতির পর দেশের ক্রিকেট কার্যক্রম স্বাভাবিক করে তুলতে ধাপে ধাপে এগিয়ে চলার অংশ হিসেবেই এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে বিসিবি। এখনকার বাস্তবতায় বিপিএল আয়োজন ভীষণ দুরূহ বলেই শুধু দেশের ক্রিকেটারেদের নিয়ে এরকম একটি টুর্নামেন্টের সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী : ২০ ওভারে ১৬৯/৯ (শান্ত ১৭, ইমন ৩৫, রনি ৬, আশরাফুল ৫, নুরুল ৩৯, শেখ মেহেদী ৫০, ফরহাদ ১১*; রুবেল ০/২৯, মেহেদী রানা ১/৩১, নাসুম ১/৪১, মুক্তার ৩/২২, নাঈম ১/৩২)। বেক্সিমকো ঢাকা : ২০ ওভারে ১৬৭/৫ (তানজিদ ১৮, ইয়াসির ৯, নাঈম ২৬, মুশফিক ৪১, আকবর ৩৪, সাব্বির ৫*, মুক্তার ২৭*; শেখ মেহেদী ১/২২, ইবাদত ১/৩৬, আরাফাত ১/৩৮, ফরহাদ ১/৩৩)। ফল : মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : মেহেদী হাসান (রাজশাহী)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।