নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন বিসিবি একাডেমি মাঠে তামিম ইকবাল-মাহমুদউল্লাহর কাছে যখন তার প্রত্যাবর্তন নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে, বেশ কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সাকিব আল হাসান। মাহমুদউল্লাহ-তামিমের কথায় নয়, তিনি তখন মনোযোগী অনুশীলন নিয়ে। তবে এক বছর পর খেলায় ফেরার উপলক্ষটাতে জাতীয় দল সতীর্থরা যেভাবে তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছেন, বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে তাতে অনুপ্রাণিত হয়েই কিনা অগ্রজের ফেরা রাঙালেন শহিদুল ইসলাম ও আরিফুল হক।
শেষ ওভারের আগে খেলার ফল অনেকটা যেন নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। ৬ বলে দরকার ২২ রান, হাতে ৬ উইকেট। ধুঁকতে থাকা আরিফুলের কাছে এতটা আশা করেনি বোধহয় দলও। মেহেদী হাসান মিরাজের ঝুলিয়ে দেওয়া বলগুলোর ফায়দা তিনি তুললেন শতভাগ। চার ছক্কায় দলকে এনে দিলেন অবিশ্বাস্য এক জয়।
গতকাল বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে রান প্রসবা উইকেটেও কেবল ১৫২ রান করেছিল বরিশাল। ওই রান তাড়ায় শেষ ওভারে আরিফুল ঝলকের আগে কখনই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল না খুলনার। তাসকিন আহমেদ, সুমন খানদের পেসে কাবু হয়ে হারের পথেই ছিল তারা। সেই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জেমকন খুলনা জিতে গিল ৪ উইকেটে।
জোরের উপর করা মিরাজের প্রথম বলে লং অফের উপর দিয়ে উড়ান আরিফুল। পরের বলেই একই ফল। এবার বল যায় লং অনের উপর দিয়ে। মাঝের বল ডট দিয়ে পরের দুই বল মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে দেন ডানহাতি আরিফুল। ওই ৪ ছক্কা মারার আগে ২৯ বলে করেছিলেন ২৪ রান। ম্যাচ শেষে তার নামের পাশে এখন ৩৪ বলে ৪৮। ৪ ছক্কা বাদ দিলে আর কেবল ২ চার মেরেছিলেন তিনি। যারমধ্যে একটা আবার ব্যাটের কানায় লেগে।
শট খেলার জন্য আদর্শ উইকেটে লক্ষ্যটা ছিল বেশ নাগালের মাঝেই। শিশিরের মাঝে রান তাড়া ছিল আরও সহজ। বরং শক্তি ব্যাটিং লাইনআপের বিরুদ্ধে এই পূঁজি নিয়ে অনেকটা ব্যাকফুটে ছিল বরিশাল। এমন ম্যাচ জিততে হলে শুরুতেই দরকার উইকেট। তাসকিন আহমেদ মেটালেন সেই দাবি। একদম প্রথম ওভারেই তুলে নেন এনামুল হক বিজয় আর ইমরুল কায়েসকে। বিজয় উড়াতে গিয়ে ধরা পড়েন মিডঅনে। ইমরুল গতিতে কাবু হয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
মাহমুদউল্লাহ নেমে পালটা আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন। বেশি দ‚র যেতে পারেননি। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ১৬ বলে ১৭ রান করে বিদায় তার।
লম্বা সময় পর ক্রিকেটে ফেরা সাকিব আল হাসান বল হাতে ছিলেন বেশ ভালো। কিন্তু ব্যাটিংয়ে তাকে দেখা গেল ঠিকই জড়োসড়ো। থিতু হতে সময় নিচ্ছিলেন। কিন্তু ফল এলো না। সুমন খানের বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। ১৩ বলে ২ চারে ১৫ রান করেন সাকিব। ৩৬ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে খুলনা। আরিফুল হককে নিয়ে জহুরুল ইসলাম অমি বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টায় ছিলেন। প্রাথমিক পরিস্থিতি সামালও দেন তারা। কিন্তু রানরেটের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাড়ে বিপদও। জহুরুল সেই চাপ মেটাতে গিয়ে ৩১ রান করে দেন ইস্তফা।
খুলনার আশা তখন প্রায় নিভু নিভু। সাতে নেমে তখনই আশার জোগান দেন তরুণ শামীম পাটোয়ারি। চার-ছয়ে তুলেন ঝড়। কিন্তু আরেক প্রান্তে আরিফুল মেটাতে পারছিলেন না সে দাবি। বরং ডট বলে তিনি বাড়িয়েছেন চাপ। সুমন খানের শেষ স্পেলে শামীম আউট হন ২৬ রান করে। অথচ খলনায়কের মঞ্চ থেকে আচমকা নায়ক বনে যাবেন আরিফুলই।
এর আগে বরিশালের ইনিংসের একমাত্র হাইলাইট বলা যায় পারভেজ হোসেন ইমনের ব্যাটিং। বাকিদের ব্যর্থতার মাঝে উজ্জ্বল ছিল তার ব্যাট। ৪২ বলে তার ৫১ রানে ভর করেই দেড়শো ছাড়িয়ে যাওয়ার ভিত পায় বরিশাল। এই রান নিয়ে জেতার পথে থাকা দল হারে মিরাজের শেষ ওভারের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফরচুন বরিশাল : ২০ ওভারে ১৫২/৯ (তামিম ১৫, পারভেজ ৫১, হৃদয় ২৭, ইরফান ১১, মাহিদুল ২১, তাসকিন ১২*; শফিউল ২/২৭, হাসান ২/৪৫, শহিদুল ৪/১৭, সাকিব ১/১৮, মাহমুদউল্লাহ ০/৮)। জেমকন খুলনা : ১৯.৫ ওভারে ১৫৫/৬ (সাকিব ১৫, মাহমুদউল্লাহ ১৭, জহুরুল ৩১, আরিফুল ৪৮*, শামীম ২৬, শহীদুল ৮*; তাসকিন ২/৩৩, সুমন ২/২২, মিরাজ ১/৩৬, কামরুল ১/৩২)। ফল : জেমকন খুলনা ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : আরিফুল হক (খুলনা)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।