বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন ফাঁসিয়াখালী বনবিটের উচিতারবিল, শীল ডেবা, জোড়া ডেবা ও ডুলাহাজারা বনবিটের মালুমঘাট ও ফুটের ঝিরির সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১৩০২ হেক্টর বনভূমি হচ্ছে বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য। এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বুনো হাতি, বন্য শূকর, বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণির নিরাপদ আবাসস্থল ছিল। কিন্তু গত দশ বছরে এসকল বন্যপ্রাণির এই আবাসস্থল ধ্বংসের অংশ হিসেবে গাছপালা নিধন, পাহাড় সাবাড় এবং সংরক্ষিত বনভ‚মি দখলে নিয়ে সেখানে স্থাপন করা হয়েছে অবৈধ ইটভাটা (উচিতার বিলে), শত শত বাড়িঘর। এতে নিরাপদ আবাসস্থল হারিয়ে অনেকটা পাগলের মতোই হয়ে পড়েছে বন্যপ্রাণি। বিশেষ করে বড় বিপদের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে বন্যহাতি। প্রতিনিয়ত বন্যহাতির দল খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসার মতোও ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দলছুট বন্যহাতির তান্ডবে বসতবাড়ি ও জমির লন্ডভন্ড হওয়া ছাড়াও অসংখ্য মানুষের প্রাণহানিও হয়েছে এই সময়ের মধ্যে।
এখানেই শতবর্ষী মাদার ট্রি (গর্জন), সেগুনসহ হরেক প্রজাতির গাছপালা এবং শতাধিক বিশালায়তনের পাহাড় বেষ্টিত ব্যাপক ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে নিরাপদ আবাসস্থল ছিল বন্যহাতির। বন্যপ্রাণী ও পশু খাদ্যের অন্যতম ভান্ডার ছিল এই উচিতার বিল। কিন্তু প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধি উচিতার বিল মৌজার বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য ধ্বংস করে গড়ে তোলেন অবৈধ ইটভাটা। ভাটাটি তার নিজের এক টুকরো জায়গায় স্থাপন করার পর থেকে একেবারেই ধ্বংস হয়ে যায় আশপাশের পাহাড়-জঙ্গলের পূর্বেকার সেই পরিবেশ। বর্তমানে সেখানে দেখা মিলবে অবৈধ ইটভাটা, শত শত অবৈধ বসতবাড়ি, পাহাড় সাবাড়ের করুণ দৃশ্য। মূলত উচিতার বিলের এই অভয়রাণ্য ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর থেকেই প্রতিনিয়ত খাবারের সন্ধানে বন্যহাতির দল নেমে আসা শুরু করে লোকালয়ে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু বলেন, ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের আলোচিত উচিতার বিল মৌজার বন্যপ্রাণী তথা বন্যহাতির আবাসস্থল আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। যাতে বন্যহাতি নিরাপদে সেখানে বিচরণ করতে পারে। এটি একমাত্র সম্ভব হবে সেখানে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ইটভাটাটি ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের চার এলাকা তথা ফাঁসিয়াখালী বনবিটের শীল ডেবা, জোড়া ডেবা এবং ডুলাহাজারা বনবিটের মালুমঘাট ও ফুটের ঝিরিতে বন্যপ্রাণীর সেই আগের আবাসস্থল ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অভয়ারণ্য এলাকার ৬০ হেক্টর সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এসিস্টেট ন্যাচারাল রিজেনারেশন (এএনআর) বাগান এবং বন্যপ্রাণির আবাসস্থল উন্নয়নে পশুখাদ্য উপযোগী ৪০ হেক্টর বাগান সৃজন করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে আরো ১০০ হেক্টর এলাকায় পশুখাদ্য উপযোগী বাগান সৃজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর ধ্বংস হয়ে যাওয়া বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য আগেকার অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ চলমান রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।