পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাজিমাত করেছে সিলেট হেফাজত। হেফাজত পুনর্গঠনের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক এ বিক্ষোভ সমাবেশে অনুষ্টিত হয় সিলেটে। গত শনিবারের এ সমাবেশ নিয়ে কৌত‚হল ছিল সর্বস্তরে। শেষ পর্যন্ত সমাবেশ সফল করেছে অনেকটা নির্বিঘ্নে, সুচারুভাবে। সমাবেশে উপস্থিতি ছিল আশানুরূপ। প্রতিক‚ল পরিবেশে এ সমাবেশের সফলতায় তেজিভাব দেখিয়েছে হেফাজতের নেতাকর্মীরা। যদিও সমাবেশে নির্ধারিত স্থান নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। কিন্তু তবুও স্থানীয় নেতাকর্মীদের দৃড়তায় নেই জটিলতা নিরসন করে রেজিস্টারী মাঠে সমাবেশ করতে সমর্থ হয় তারা।
এর মধ্যে অনিয়মের অভিযোগে গত শনিবারের সমাবেশ থেকে একদিন আগে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন নব-নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সিলেট জেলা হেফাজতের সভাপতি- দরগাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী। গত শুক্রবার সন্ধায় এক ভিডিও বার্তায় অনিয়মের অভিযোগ এনে সিলেট হেফাজতের সমাবেশ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। বিষয়টি হেফাজত নেতাকর্মীদের বিব্রত করলেও পিছু হটেনি তারা। বিপুল সংখ্যক মাদরাসা শিক্ষক ও ছাত্রদের সমাগম ছিল ঈর্ষনীয়। তবে এ সমাবেশ আরো বৃহৎ ও জনবহুল হতে পারতো, পরিবেশ পরিস্থিতি অনুক‚ল থাকলে। তারপরও আফসোস নেই, স্থানীয় হেফাজত নেতাকর্মীদের মধ্যে।
তারা মনে করছেন, বিক্ষোভ সমাবেশটির সফলতা ইতিবাচক। দীর্ঘদিন পর ফ্রান্স ইস্যুতে এ সমাবেশ ঝিমিয়ে থাকা হেফাজত শক্তিতে করেছে গতিশীল, সেই সাথে পুর্নজাগরণ। এছাড়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নবনির্বাচিত আমীর আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীর বক্তব্য ছিল দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। মেধাভিত্তিক বক্তব্য আপ্লুত করেছে নেতাকর্মীদের। সমীহ বেড়েছে তার উপর। বক্তব্যের আগাগোড়া ছিল গোছালো, বাস্তবিক, বর্তমান-ভবিষ্যত আলোকে। হেফাজত আমীর উড়িয়ে দিয়েছেন, দেশের কোন রাজনীতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে হেফাজত ইসলামের কোন সম্পৃক্ততা নেই। পরিষ্কার করে বলেছেন, হেফাজতের একটি এজেন্ডা কেবল নবী মুহাম্মদ (সা.) আদর্শ বাস্তবায়ন।
তিনি আরো বলেছেন, নাস্তিক মুরতাদ সরকারের ঘাড়ে বসে আছে, তারাই সব সমস্যা। এর বাইরের আওয়ামী লীগ বা বিএনপি নিয়ে হেফাজতের কোন সমস্যা নেই, সকলে ভাই-ভাই। হেফাজতের বর্তমান আমির নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা মনে করছে, হেফাজতের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের ব্যাপারে এ আমির মানাসই। শারিরীক সুস্থতা, দ্বীনি জ্ঞান গরিমাসহ ত্যাগের অনুকরণীয় নজির রয়েছে তার মধ্যে। নেতাকর্মীদের ভাষা তিনি বুঝেন, সেইভাবে পথ দেখিয়ে নিবেন তিনি। হেফাজত নেতৃত্ব এক সন্দেহযুক্ত জগদ্ধলপাথর থেকে বেরিয়ে এসেছে। বিষয়টিতে আপামর ধর্মপ্রাণ মানুষের নিকট ছিল চাপা ভ‚মিকম্পের অশনি সংকেতের ন্যায়। কিন্ত অবস্থা থেকে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে সংগঠনটি। এটাই তাদের এক বড় অর্জন মনে করছেন নেতাকর্মীরা। সিলেট সমাবেশে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতিতে লক্ষণীয় হয়েছে।
সমাবেশে স্থানীয় হেফাজতের মহানগরী শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহ মমশাদ আহমদ বলেন, আগামীতে আমরা আমিরে হেফাজত চাই না, আমরা চাই আমিরুল মুমিনিন। তিনি আরো বলেন, হেফাজত সরকারের কথায় চলে না, হেফাজত চলে আল্লাহর ইশারায়। গত শনিবার সিলেট রেজিস্টারি মাঠে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সিলেট শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে এ বক্তব্য দেন তিনি। এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা তো সে জাতি, যারা স্বাধীনতার জন্য এক সাগর রক্ত ঢেলে দিয়েছিলাম। এবার প্রয়োজনে আমার নবীর ইজ্জত রক্ষার জন্য ১০০ সাগর রক্ত দিতে রাজি আছি ইনশাআল্লাহ। হেফাজতের আবার পুনর্জাগরণ হয়েছে উল্লেখ করে এ বক্তা বলেন, হেফাজতের পুনর্জাগরণের পর এবার সিলেট থেকে আবারও সে আন্দোলন শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, বাংলার ভ‚মিতে কোন নাস্তিক মুরতাদকে বরদাশত করা হবে না। বাংলার ভ‚মিতে কোন ভাস্কর্য নির্মাণ করতে দেয়া হবে না। কাদিয়নীদের অবশ্যই অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। প্রশাসনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, পরিশেষে প্রশাসনকে একটি কথাই বলবো। আজকে সিলেট কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আপনারা পারমিশন দেননি। তাই আমরা রেজিস্টার মাঠে করছি। আগামী দিনে হেফাজত কোন পারমিশন নিয়ে প্রোগ্রাম করবে না। আমরাতো তারা, যাদের রক্তে মুজাহিদে মিল্লাত প্রিন্সিপাল হাবিবুর রহমান এর রক্ত বহমান। যে প্রিন্সিপাল বলেছিলেন, গান-বাজনার অনুমতি তুমি সচিবালয় থেকে নিয়ে এসেছো, আর গান-বাজনা বন্ধের নির্দেশ আসমান থেকে এনেছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।