পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হেফাজতে ইসলামে ফিরতে চান নতুন কমিটিতে বাদ পড়া প্রতিষ্ঠাতা আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)-এর পুত্র মাওলানা আনাস মাদানির অনুসারীরা। মান-অভিমান ভুলে মূলধারায় ফিরে আসলে তাদের বরণ করতেও কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন নতুন কমিটির নেতারা। সম্মেলনকে ঘিরে কিছু নেতার সাথে তিক্ততা সৃষ্টি হলেও হেফাজতে এখন ঐক্যের সুর শোনা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কতিপয় নেতা হেফাজতে ইসলামের জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন ও কাউন্সিলের বিরোধিতা করেন। নতুন কমিটিতে তাদের রাখা হয়নি। তারা এখন মূলধারায় ফিরতে আগ্রহী। কিছু শর্ত মেনে এবং কমিটিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে তারা ফিরে আসবেন এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। আবার হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বেশ কিছু সংখ্যক পদ এখনও খালি থাকায় তাদের ফিরিয়ে আনার সুযোগ এবং সেইসাথে কমিটির নেতাদের আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অনেকে। গত কয়েকদিনে বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনায় উভয় পক্ষের দূরত্ব কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে।
গত ১৫ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর অরাজনৈতিক এ সংগঠনের প্রথম জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় সম্মেলনে শায়খুল হাদিস আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরীকে আমির এবং আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করে ১৫১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। নবগঠিত ১৫১ সদস্যের মধ্যে ১২০ জনকে পদ দেয়া হয়েছে। বাকি ৩১ জনকে পরে সংযুক্ত করবে নতুন কমিটিতে। জানা গেছে, সম্মেলনের যারা বিরোধিতা করেছিলেন তারা এখন সংগঠনে ফিরতে চান। শূণ্যপদগুলোতে আসতে চান তাদের অনেকে।
তারা কিছু শর্ত দিয়ে হেফাজতে ফিরতে চান। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ঘোষিত কমিটি সংস্কার, প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শফীর নীতি ও আদর্শ মেনে চলা। বর্তমান কমিটির নেতারা বলছেন তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়নি। হলুদ কার্ড প্রদর্শন তথা তাদের কৃতকর্মের জন্য সতর্ক করা হয়েছে মাত্র। আর হেফাজতে ইসলাম আল্লামা শফীর নীতি বা মূল আদর্শ থেকে একচুলও বিচ্যুত হয়নি। তারা আসতে চাইলে তাদের গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী ইনকিলাবকে বলেন, একটি পরিবারের সদস্যের মধ্যেও মতবিরোধ হয়, মান অভিমান হয়। হেফাজতে ইসলাম আমাদের জন্য একটি পরিবারের মতো। আমরাই হেফাজতের প্রতিষ্ঠা করেছি মহান উদ্দেশ্য নিয়ে। বর্তমানে যে কমিটি করা হয়েছে তাতে কতিপয় ব্যক্তিকে পদ দেয়া হয়েছে।
হেফাজতে ইসলাম কোন ব্যক্তি বা দলকেন্দ্রিক সংগঠন নয়, তৌহিদী জনতা, ইসলাম প্রিয় মানুষের প্রাণপ্রিয় সংগঠন এ দেশের কওমি আলেম ও মুসলমানদের একটি ঐক্যবদ্ধ এ সংগঠন। হেফাজতের ভাঙন আমরা চাই না। বর্তমান কমিটির নেতারা যদি আল্লামা শফীর নীতি ও আদর্শে ফিরে আসেন তাহলে একযোগে মিলে মিশে এক হয়ে কাজ করতে আমাদের কোন সমস্যা নেই।
এসব বিষয়ে আজ শনিবার ঢাকায় তাদের অনুসারী আলেম-ওলামা এবং হেফাজত নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে আপাতত হেফাজতের কোন পাল্টা কমিটি করার চিন্তা-ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে শিগগিরই বাকি ৩১ জনকে যুক্ত করে হেফাজতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন এক নেতা। এই ব্যাপারে হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানান, হেফাজতে ইসলাম কারো পকেটের নয়। এটি হলো তৌহিদী জনতার অরাজনৈতিক সংগঠন। আমরা কোন গ্রæপ বুঝিনা। আসুন সবাই এক নীতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা নাসির উদ্দিন মনির বলেন, তারা ফিরে আসতে চাইলে তাদের কিভাবে গ্রহণ করা হবে এ সিদ্ধান্ত হেফাজতের নেতারাই নেবেন।
উল্লেখ্য, নতুন কমিটিতে ঠাঁই হয়নি সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, সাবেক প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানিসহ বেশ কয়েকজন নেতার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।