পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শার বেকার যুবক ইকবাল হাসান তুতুলের সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। ঘরের সদর দরজা দিয়ে সচ্ছলতা প্রবেশ করে এবং জানালা দিয়ে অভাব নামক শব্দটি চলে যায়। আর তিনি এমন একটি চমক দেখিয়েছেন বাণিজ্যিকভাবে ছাগল পালন করে। দেশে ছাগলের গোশতের দাম সন্তোষজনক এবং লাভও বেশি। অন্য পথে না হেঁটে তিনি ছাগলের খামার গড়ে সফলতা পেয়েছেন।
বেকার জীবন নিয়ে তুতুল হতাশ হয়ে পড়েন। কোনো কাজ নেই। জীবনের চাকা ঘুরবে কি করে? এসব ভাবনা থেকেই একদিন শখের বসে ছাগল পালন শুরু করেন। শখের ছাগল পালন করে তিনি এখন একজন সফল খামারি।
২০১২ সালের শুরুর দিকের কথা। চারটি ছাগল পালন শুরু করেন। আট বছর পর তার খামারে ছাগলের সংখ্যা ৩০০ ঘর অতিক্রম করেছে। এসব ছাগলের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। খামারে তিনি দেশি ছাগলের পাশাপাশি বিদেশি প্রজাতির ছাগলও পালন করেন। এক সময়কার বেকার তুতুলের সফলতা দেখে শার্শা উপজেলা ছাড়িয়ে আশেপাশের অনেকেই এখন ছাগলের খামার করতে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ায় তুতুল তার বসতবাড়ির পাশেই গড়ে তুলেছেন ছাগলের এই খামার। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় শখের ছাগল পালন এখন তার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১২ সালে শখ করে ২০ হাজার টাকায় চারটি ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করেন। এক বছর পর ছাগল চারটি ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করেন। লাভ হওয়ায় তিনি ছাগলের খামার করার সিদ্ধান্ত নেন।
শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে দেশি বøাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগল কিনে ম্যাচিং পদ্ধতিতে খামার গড়ে তোলেন। এখানে এখন চার প্রজাতির ৩০০ বেশি ছাগল রয়েছে। তুতুল বলেন, তিনি ও তার স্ত্রী লিপি মিলে ছাগলগুলোর পরিচর্যা করেন। খামারে ছাগলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পরিচর্যার জন্য তিনজন কর্মী রেখেছেন। এছাড়া বাড়ির পাশের পতিত জায়গায় হাইড্রোপনিক উৎকৃষ্টমানের ঘাস আবাদ করেছেন। এই ঘাস দিয়েই ছাগলের খাবারের বেশিরভাগ চাহিদা পূরণ হয়।
মাটি ছাড়া শুধুমাত্র পানি ব্যবহার করে যে ঘাস চাষ করা হয় তাকে হাইড্রোপনিক ঘাস বলে। দুধ ও গোশত উৎপাদন করতে হলে গরু-ছাগলের জন্য প্রচুর পরিমাণে কাঁচা ঘাসের প্রয়োজন। অনেক খামারির ঘাস চাষের জমি নেই। আবার খামারিদের কেউ কেউ আবাদি জমিতে ঘাস চাষ করতে চান না। কিন্তু গরু-ছাগলের জন্য খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয় কাঁচা ঘাস। হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে ঘাস চাষ করতে জমির প্রয়োজন হয় না। তাই ইচ্ছা করলেই সব খামারি খুব সহজেই এই পদ্ধতিতে ঘাস চাষ করে গরু-ছাগলকে খাওয়াতে পারেন।
তুতুলের স্ত্রী লিপি খাতুন বলেন, ছাগল বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়। প্রতিবার প্রজননে একাধিক বাচ্চা হয়। রোগ-বালাইও কম হয়। বছরে একবার টিকা দিলেই আর কোনো ওষুধ লাগে না। তাই অল্প খরচে বেশি আয় করা সম্ভব। স্ত্রীর কথার রেশ টেনে তুতুল বলেন, একটি বিদেশি গাভীর জন্য প্রতিদিন ৩০০ টাকার খাবার লাগে। অথচ ৩০০ টাকায় প্রতিদিন ২০টি ছাগলকে খাওয়ানো যায়। ছাগলকে খাওয়ানো হয় গম, ভুট্টা, ছোলা বুটের গুড়ো, সয়াবিন ও ঘাস।
শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার ইনকিলাবকে বলেন, আমরা নিয়মিত তাদের ওই ছাগলের খামার পরিদর্শনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। এখন অনেকেই ছাগলের খামার গড়ে তুলতে পরামর্শের জন্য আমাদের কাছে আসছেন।
তিনি আরো বলেন, উপজেলায় এক হাজার ৮৩০টি ছাগলের খামার হয়েছে। এসব খামারে এক লাখ ১০ হাজার ছাগল রয়েছে। ছাগল পালন করে মোটামুটিভাবে সফল হয়েছেন তুতুল দম্পতি। ছাগল পালনে পুষ্টি ও গোশতের চাহিদাও মিটছে। বেকারত্ব কমাতেও সহায়তা করছে এই উদ্যোগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।