Inqilab Logo

রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুতার অভাবে বন্ধ ৫০ ভাগ দেশীয় তাঁত

বেকার হয়েছে ৬০ লাখ শ্রমিক জাতীয় তাঁতী সমিতির সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতী সমিতি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রেয়াতী শুল্কে অবিলম্বে পলিয়েস্টার সুতা আমদানির পথ খুলে দিয়ে দেশী তাঁত শিল্প রক্ষার উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। সমিতির সভাপতি মো. মনোয়ার হোসেন বলেছেন, আমরা মরে যাচ্ছি। আপনারা আমাদের বাঁচান। আমাদের প্রায় ৫০ ভাগ তাতশিল্প এখন বন্ধ। সেখানে কর্মরত ৬০ লাখ শ্রমিক বেকার। আপনাদের মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন, তাঁতী সমাজের এই বুকফাটা কান্না শুনে অবিলম্বে এর ব্যবস্থাা গ্রহণ করুন।

গতকাল রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশের সমগ্র তাঁতী সমাজের পক্ষ থেকে তিনি এই দাবি জানান। এ সময় আরও উপস্থিাত ছিলেন জাতীয় তাঁতি সমিতির সহসভাপতি মো, শাহজাহান, নির্বাহী সদস্য দেলোয়ার হোসেন, আলী হোসেন, মন্জু রানী প্রামানিক, মো, আইয়ুব আলী প্রমুখ। এ ছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ সিরাজগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল ও নরসিংদী জেলা থেকে তাঁতী সমিতির নেতারা অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় তাঁতী সমিতির সভাপতি মো. মনোয়ার হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, শক্তিশালি একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পলিয়েস্টার সুতা আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় সারা দেশে দেশীয় তাঁতশিল্প ধ্বংসের পথে। বন্ধ হয়ে গেছে ৫০ ভাগ তাঁত। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের এই সিন্ডিকেট কৌশলে সুতা আমদানি বন্ধ করে দিয়ে কৃত্রিম এই সংকট সৃষ্টি করেছে। মাত্র ৭৫ টাকা পাউন্ডের কটন সুতার দাম তিন থেকে চার গুন বাড়িয়ে দিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছে তথাকথিত এই সিন্ডিকেট। ফলে ২৪ লাখ দেশি তাঁতের মধ্যে ১৫ লাখ তাঁতই এখন বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন ৬০ লাখ শ্রমিক। তিনি বলেন, গত দুই বছরে এই খাত থেকে বিটিএমএ’র যোগসাজশে শত শত কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন সিন্ডিকেট সদস্যরা। সারা দেশে এই তাঁত শিল্প বন্ধ হওয়ার পিছনে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের দুর্নীতি, অবহেলা, অনিয়মকে দায়ী করে তিনি বলেন, বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম সাহেবই বিটিএমএ’র সঙ্গে আঁতাত করে তাঁতী সমাজের এই সর্বনাশ করেছেন। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নানা কৌশলে পলিয়েস্টার সুতা আমদানি বন্ধ করে দিয়ে এই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। বোর্ডের অধীনে সরকারি কেনাকাটাসহ এই শিল্প থেকে নানাভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে এই সিন্ডিকেটকে।
জাতীয় তাঁতি সমিতির সভাপতি আরো বলেন, তাঁতীদের ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে আবেদন ফরমে দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক তাঁতী সমিতির সভাপতির সুপারিশের একটি নিয়ম থাকলেও তাঁত বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান তার একক সিদ্ধান্তে সেটি অন্যায়ভাবে উঠিয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, তাঁতিদের কোনো প্রতিনিধিত্ব রাখা না হলেও সুতা আমদানি সংক্রান্ত সুপারিশ কমিটিতে নিয়মবহির্ভ‚তভাবে বিটিএমএ’র সভাপতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অত:পর কমিটির প্রথম বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শুল্কমুক্ত সুবিধায় তাঁতীদের জন্য পলিয়েস্টার সুতা আমদানির লক্ষ্যে জারি করা এসআরও বাতিলের প্রস্তাব করেন এই বিটিএমএ’র চেয়ারম্যান। তার প্রস্তাবেই মূলত: এখনো পর্যন্ত তাঁতীদের রেয়াতী শুল্কে পলিয়েস্টার সুতা আমদানি বন্ধ রেখেছে তাঁত বোর্ড। এছাড়াও তাঁতিদের প্রশিক্ষণসহ নানা কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুতার অভাবে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ