পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন (কাউন্সিল) আজ রোববার। হেফাজতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রামের আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় সকাল ১০টায় শুরু হবে এই কাউন্সিল। দিনব্যাপী এই সম্মেলন ও কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে আসা পাঁচ শতাধিক প্রতিনিধি হেফাজতের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। কে হচ্ছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রহ.) উত্তরসূরি তা নিয়ে সর্বমহলে ব্যাপক কৌতুহল দেখা দিয়েছে। অরাজনৈতিক এই ইসলামি সংগঠনের মহাসচিব কে হচ্ছেন তা নিয়েও দেশ-বিদেশে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। সম্মেলনে সারা দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিদের মতামতের ভিত্তিতে ১৫১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানা গেছে।
প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর প্রথম সম্মেলন এবং কাউন্সিলকে ঘিরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। হেফাজতে ইসলামের নেতারা বলছেন, জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনকে সর্বাত্মক সফল করতে সব প্রস্তুতি শেষ করে আনা হয়েছে। সম্মেলনে যোগ দিতে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিনিধিরা চট্টগ্রাম আসতে শুরু করেছেন।
এদিকে বর্তমান কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহীসহ কয়েকজন নেতা সম্মেলনের দাওয়াত পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। তারা দাবি করেন অনেকে এই সম্মেলনের কথা জানেন না। বিতর্কিতদের নিয়ে কমিটি করতেই এই সম্মেলন। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারেরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আল্লামা শফীর ভাগ্নে পরিচয়দানকারী মোহাম্মদ মঈনদ্দীন। তিনি আজকের সম্মেলন বন্ধ করারও দাবি জানান। সম্মেলনের বিরুদ্ধে কয়েকদিন ধরে কতিপয় নেতা নানা ধরনের বক্তব্য দিয়ে প্রচারপত্রও বিলি করছেন।
তবে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সম্মেলন বন্ধের চক্রান্ত সফল হতে দেওয়া হবে না। সারা দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিরা সম্মেলন সফল করতে বদ্ধপরিকর। সকল নিয়ম মেনেই সম্মেলন হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বিগত ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি হেফাজতে ইসলামের যাত্রা শুরু হয়। দেশে নাস্তিক মুরতাদ ও ইসলাম অবমানকারীদের বিরুদ্ধে ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলন করে দেশব্যাপী ব্যাপক পরিচিতি পায় এই সংগঠনটি। শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে ঢাকামুখী লংমার্চ শেষে শাপলা চত্বরের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ দেশব্যাপী অভূতপূর্ব গণজাগরণের সূচনা হয়। এরপর শাপলা ট্র্যাজেডি হিসাবে পরিচিত হেফাজতের সমাবেশে নজিরবিহীন দমন-পীড়ন এবং দেশব্যাপী হেফাজতের নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধরপাড়কে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে যায় হেফাজত। তবে কওমি মাদরাসা সনদের স্বীকৃতিসহ কয়েকটি কারণে সরকারের সাথে হেফাজতের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপরও দীর্ঘদিন রাজপথে নেই হেফাজত। সর্বশেষ ফ্রান্সে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের প্রতিবাদে মাত্র কয়েক দিনের নোটিশে রাজধানীতে ফরাসি দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচিতে মানুষের ঢল নামার ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম ফের আলোচনায় আসে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ইন্তেকাল করেন। পরদিন তার নামাজে জানাযায় লাখো মানুষের ঢল নামে। তার ইন্তেকালের পর থেকে আমিরের পদ খালি রয়েছে। আজকের সম্মেলনে নতুন আমির নির্বাচন করে হেফাজতের নতুন পথচলা শুরু হবে বলে জানান নেতারা।
সকাল ১০টায় হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষা ভবনে সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলন ও কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করবেন হেফাজতের নায়েবে আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। হেফাজতের নেতা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, মহাসচিব শায়খুল হাদিস হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী সম্মেলন আহ্বান করেছেন।
এতে যোগ দিতে সারাদেশ থেকে প্রায় ৫০০ কেন্দ্রীয় শীর্ষ মুরুব্বি, প্রতিনিধি ও অতিথি অংশ নেবেন। শুধুমাত্র দাওয়াতি মেহমান অর্থাৎ কাউন্সিলর ছাড়া অন্য কারো সম্মেলনে প্রবেশ করার কোন সুযোগ থাকবে না। আজ বিকেলে সম্মেলনের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
কাউন্সিলরাই নির্ধারণ করবেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন। সম্মেলনে আমির, মহাসচিবসহ ১৫১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হবে। জানা গেছে আমির হিসাবে আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও শাইখুল হাদিস আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী এবং মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমীর নাম আলোচনায় আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।