পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। তবে ইদানিং এই প্রবনতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে ট্রেন ভ্রমণ। দেশের প্রায় প্রতিটি রুটে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় দিন-রাত যে কোনো সময়ে ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারা হচ্ছে। দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথর গিয়ে লাগছে যাত্রীর শরীরে। রক্তাক্ত হচ্ছেন যাত্রী। চলন্ত ট্রেন থেকে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত বা আটক করাও কঠিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এজন্য জনসচেতনতা সৃষ্টি জরুরী। এর আগে ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারার প্রবনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রেলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। যে সব স্থানে পাথর ছোড়ার প্রবনতা বেশি যে সব স্থানে মাইকিং করা, লিফলেট বিতরণ করাসহ স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত করায় এ অপরাধ অনেকটাই কমতে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন সচেতনতা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আবার বেড়েছে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা।
ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগেও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে ঢাকামুখি বলাকা এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথর এসে লাগে এক যাত্রীর মাথায়। তাতে মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। বলাকা ট্রেনটিতে ছিলেন আরিফুল ইসলাম নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, আমরা কথা বলছিলাম হঠাৎ করেই সামনের বসে থাকা লোকটা উফ বলে মাথায় হাত দিয়ে নুয়ে পড়ল। আর দেখলাম ওনার মাথায় লেগে জালনায় বাড়ি খেয়ে একটা পাথর পড়ে গেল। পাথরের তুলনায় আহত কম হয়েছে। আমার সাথে স্যাভলন পানি ছিল, দিয়ে দিলাম। সাথে একজন হেক্সিসল দিয়ে দেয়ার পর রক্ত বন্ধ হয়। অবস্থা ভয়াবহ হতে পারতো। লাক ভালো যে বড় কোনো ক্ষতি হয় নাই।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এর আগে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথরের আঘাতে খুলনায় রেলের একজন কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। ছুড়ে মারা পাথরের আঘাতে নারী ও শিশু আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে প্রায়ই ভ্রমণ করেন এমন একজন যাত্রী জানান, কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখি সুবর্ণ এক্সপ্রেসে পাথর ছুড়ে মারলে ট্রেনের একজন যাত্রী মারাত্মক জখম হয়। সহযাত্রীরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে তার রক্তপাত বন্ধ করে। উক্ত যাত্রী বেশ আহত হলেও সৌভাগ্যের বিষয় হলো, মারাত্মক কিছু ঘটেনি। এদিকে, গত কয়েকদিন ধরেই ঢিলে মারাত্মকভাবে আহত হওয়া ব্যক্তিদের বীভৎস সব ছবি আসছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তারপরেও কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই।
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর চাকরির লিখিত পরীক্ষা দিয়ে ব্রহ্মপুত্র ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার লিংকন সরকার (২৮)। রাতে টঙ্গীর বউবাজারে চলন্ত ট্রেনে দুর্বৃত্তের ছোড়া পাথরের আঘাতে আহত হন তিনি। গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন তিনি।
গত সপ্তাহে রাতে লাকসাম রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার বিরতিহীন ‘সোনার বাংলা’ এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়া হয়। কেউ আহত না হলেও স্নিগ্ধা ‘জ’ বগির মাঝামাঝি একটি জানালার কাচ ভেঙে যায়। ভুক্তভোগিরা জানান, বর্তমান সরকার রেল আধুনিকীকরণের জন্য নানারকম উদ্যোগ নিয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে ব্র্যান্ড নিউ সব কোচ। কিন্তু যাত্রীদের সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। বহুদিন ধরেই যাত্রীরা দাবি করে আসছে, ট্রেনের জানালাগুলোয় নেট লাগানোর। যাতে পাথর ভেতরে আসতে না পারে।
এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সেকশনগুলোতে পুলিশের টহল বাড়ানোর দাবি উঠেছে। ঢাকা-জয়দেবপুর সেকশনের ক্যান্টনমেন্ট থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। টঙ্গীতে প্রায় প্রতিটি ট্রেনে প্রতিনিয়ত পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটছে। এছাড়া নরসিংদী, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব, ময়মনসিংহ-জামালপুর সেকশন, তেজগাঁও, পূবাইল, লাকসাম, ঈশ্বরদী ইত্যাদি স্থানগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে রেলওয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।