গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : শনাক্তকরণের সমস্যা, চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকা ও জনসচেতনতার অভাবে দেশে শিশু যক্ষ্মার হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। ২০১৪ সালে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬৮ জনের মধ্যে শিশু যক্ষ্মা রোগী ছিল ৬ হাজার ২৬২ জন, ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ১ জনের মধ্যে ৭ হাজার ৯৮৪ জন। অর্থাৎ এক বছরে রোগী বেড়েছে ১ হাজার ৭ শত ২২ জন। ২০১৪ সালে যেখানে শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের হার ছিল ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, সেখানে ২০১৫ সালে এই শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ শতাংশে। তবে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী ছেলে শিশুর তুলনায় মেয়ে শিশুরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে শতকরা ১০ ভাগই শিশু। আর সে অনুযায়ী দেশে প্রায় ১২ হাজার শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের বাইরে রয়েছে।
গতকাল রাজধানীর গুলশানের স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত যক্ষ্মা বিষয়ক সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে মূল প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সমন্বয়ক ডা. মো. মজিবুর রহমান। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের স্বাস্থ্য বিষয়ক সাংবাদিকসহ সরকারি প্রতিনিধি, ডাক্তার ও যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি), বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক যৌথভাবে এ ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ)-এর সভাপতি তৌফিক মারুফের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের টিবি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম-এর সিনিয়র ম্যানেজার ডা. কাজী আল মামুন সিদ্দিকী। আলোচনায় অংশ নেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর সহযোগী অধ্যাপক (রেস্পিরেটরি মেডিসিন) ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শাকিল আহমেদ, ইউএসএইড-ডিএফআইডি এনজিও হেলথ সার্ভিস ডেলিভারি প্রজেক্টের এইচআইভি ও যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ ডা. মো. লুৎফর রহমান, ব্র্যাকের টিবি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম-এর কর্মসূচি প্রধান ডা. শায়লা ইসলাম। অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম-এর নির্বাহী সদস্য শিশির মোড়ল।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শাকিল আহমেদ জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মোট শনাক্তকৃত যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে সাধারণত ১০ শতাংশ শিশু যক্ষ্মা রোগী হিসেবে ধরা হয়। সে হিসাব ধরে নিলে বাংলাদেশে এখনো ১২ হাজার শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের বাইরে। গ্রামের তুলনায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বেশি শিশু যক্ষ্মা রোগী আছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ডা. শায়লা ইসলাম ডায়রিয়াজনিত ও যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে মৃত্যুর হারের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে যেখানে প্রতি বছর গড়ে ডায়রিয়ায় মারা যায় ২০ জন, সেখানে দেশে গড়ে প্রতিবছর ৭১ হাজার যক্ষ্মা রোগী মারা যান। তাই এখনও আমাদের দেশ যক্ষ্মার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ২ লাখ ৭ হাজার যক্ষ্মা রোগী রয়েছেন। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১৫ সালে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা বা এমডিআর রোগী ছিল ৮৮০ জন।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে যক্ষ্মারোগীর আক্রান্তের হার প্রতি লাখে ৪৫ জন, যা গত বছর ছিল ৫৪ জন। আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সফলতার হার ৯৪ শতাংশ। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে আরো লেখালেখি ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার আহ্বান জানান বক্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।