নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দারুণ ফিফটিতে দলকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দেন অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা। বোলিংয়ে নিজেদের মেলে ধরলেন সালমা খাতুন ও দিপ্তি শর্মা। সুপারনোভাসকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতের উইমেন টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জের শিরোপা জিতল ট্রেইলবেøজার্স। গতপরশু রাতে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় আসরের ফাইনালে ১৬ রানে জিতেছে ট্রেইলবেøজার্স। ১১৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় আগের দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন সুপারনোভাস থামে ১০২ রানে।
দারুণ বোলিংয়ে দলের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রাখেন সালমা। চার ওভারে ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন বাংলাদেশের এই স্পিনার। প্রথমবার এই টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েই শিরোপার স্বাদ পেলেন তিনি। ইনিংসে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে বল হাতে নিয়ে ত্রয়োদশ ওভারে সালমা দেন ৫ রান। পরের ওভারে ৫ রান দিয়ে ফেরান শশিকলা সিরিবর্ধনেকে। অভিজ্ঞ অফ স্পিনারের তৃতীয় ওভারে আসেনি উইকেট, তবে রান দেন মাত্র ৪।
শেষ দুই ওভারে সুপারনোভাসের যখন দরকার ২৮ রান। হাতে বেশ কিছু বিকল্প ছিল, তবে অধিনায়ক মান্ধানা আস্থা রাখেন সালমার ওপর। দুর্দান্ত অফ স্পিনে ১৯তম ওভারে ৪ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন দুই উইকেট। আউট করেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউর ও পুজা ভাস্ত্রাকারকে। সেই ওভারে আরেকটি উইকেট আসে রানআউটে। ট্রেইলবেøজার্সের জয়ও প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সালমার বোলিংয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা জানান মান্ধানা, ‘সে (সালমা) ছিল দুর্দান্ত। ওইরকম স্পেলই ম্যাচ জেতায়। অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার সে। আমি কেবল তাকে বলেছি, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে এবং সে প্রতিদান দিয়েছে। তার স্পেলগুলো ছিল ম্যাচজয়ী।’
প্রথমবারের মতো খেলতে গিয়েই সালমা পেলেন শিরোপার স্বাদ। তিন দলের এই টুর্নামেন্টে নিজ দলের সব ম্যাচেই খেলেছেন তিনি। প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষের ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বোলিং পেয়ে দুই ওভারে কেবল ৪ রান দিয়ে উইকেটশ‚ন্য ছিলেন, দল পেয়েছিল বড় জয়। পরের ম্যাচে দলের হারে ২৫ রানে নিয়েছিলেন একটি উইকেট। এমন বড় মঞ্চে এমন নৈপুণ্যে দেখানো সালমাও তৃপ্ত দেশের মান রাখতে পেরে। দুবাই থেকে মুঠোফোনে দেশের টি-২০ অধিনায়ক জানান নিজের আত্মতৃপ্তির কথা, ‘বাংলাদেশ থেকে খেলতে এসেছি। দলও চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। এতে আমি খুশি। তবে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো, দেশের সম্মান রাখতে পেরেছি। ভবিষ্যতে আরও ভালো খেলতে পারব ইনশাআল্লাহ।’
করোনার কারণে ভিন্ন পরিস্থিতিতে খেলতে হয়েছে। আরব আমিরাতে গিয়ে থাকতে হয়েছে অচেনা পরিবেশে। তবে দ্রæতই সব মানিয়ে নিতে পেরেছিলেন তিনি, ‘প্রথমবার আইপিএল খেলার অভিজ্ঞা এক ভিন্নরকম, তবে তা চমৎকার। আগে কারো সঙ্গে তেমন সখ্যতা ছিল না। মাত্র দুই-এক দিনের মধ্যেই সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হয়ে যায়। সবাই আমাকে বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে বেশ সম্মান দিয়েছে।’
টুর্নামেন্টে ভেলোসিটির হয়ে খেলেছেন বাংলাদেশের আরেক ক্রিকেটার জাহানারা আলম। এই পেসার প্রথম ম্যাচে ২ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে রেখেছিলেন অবদান। দ্বিতীয় ম্যাচে দল হারে বড় ব্যবধানে, জাহানারা পাননি বোলিং। একই দলের হয়ে গত আসরেও খেলেছিলেন তিনি, ফাইনালে করেছিলেন দারুণ বোলিং। করোনার স্থবিরতায় মাঝে সাত মাস ঘরবন্দি ছিলেন। আইপিএল খেলার আগে ফ্লাড লাইটের আলোয় পর্যাপ্ত অনুশীলনের সুযোগ দেওয়ায় বিসিবিকেও ধন্যবাদ দেন এই ক্রিকেটার। সালমা মনে করেন, তার ও জাহানারার পারফরম্যান্স এই আসরে আগামীতে বাংলাদেশের আরও মেয়েরা ডাক পাবে, ‘উইমেন্স টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জে খেলার মতো বাংলাদেশে আরও অনেক ক্রিকেটার আছেন। যেহেতু দল মাত্র তিনটি। দল বাড়লে আশা করি বাংলাদেশ থেকে আরো দুই-তিনজন খেলোয়াড় ডাক পাবে। এখানে আমার ও জাহানারার খেলাটা দেশে মেয়েদের আরো উজ্জীবিত করবে ভালো ক্রিকেট খেলার।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।